KMC Poll Result 2021

KMC Poll Result 2021: পুর-রাজনীতিতে নজির গড়লেন তিন ‘ম’

লম্বা সময় ব্যাট হাতে ক্রিজ়ে ।একজন তৃণমূল, একজন বিজেপি, অন্য জন সিপিআইয়ের।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ২২ ডিসেম্বর ২০২১ ০৬:৩২
Share:

মীনাদেবী পুরোহিত, মধুছন্দা দেব, মালা রায় নিজস্ব চিত্র

লম্বা সময় ব্যাট হাতে ক্রিজ়ে টিকে থাকার রেকর্ড করলেন তিন মহিলা। একজন তৃণমূল, একজন বিজেপি, অন্য জন সিপিআইয়ের।

Advertisement

মালা রায় ১৯৯৫ সালে প্রথম যখন কাউন্সিলর হন, তখন তাঁর ছেলের বয়স ছিল আট মাস। মঙ্গলবার যখন তিনি ষষ্ঠ বার কাউন্সিলর নির্বাচিত হলেন, তখন তাঁর ছেলে পড়াশোনা শেষ করে ব্যাঙ্কে চাকরি করছেন। কলকাতা পুরভোটে ৭৩৫৭ ভোটে, অর্থাৎ, গত বারের তুলনায় প্রায় দ্বিগুণ ব্যবধানে জিতে তৃণমূল সাংসদ মালা বলেন, “৮৮ নম্বর ওয়ার্ড এবং তার বাসিন্দাদের আমি নিজের পরিবারের মতোই দেখি। তাই জয়ের ব্যাপারে নিশ্চিত ছিলাম। ব্যবধান কতটা বাড়ে, সেটাই দেখার ছিল।”

মালা এ দিন প্রতাপাদিত্য রোডে তাঁর কার্যালয়ে বসেছিলেন। সামনে তখন সবুজ আবির মাখা উচ্ছ্বসিত তৃণমূল সমর্থকদের ভিড়। তার মধ্যেই মালাকে ফোনে বলতে শোনা গেল, “এখনই একটা শববাহী গাড়ি পাঠাতে হবে। পাড়ার এক জন মারা গিয়েছেন। শ্মশানের কাজও যেন দ্রুত হয়, সেটাও দেখতে হবে।” ফোন রেখে তিনি বললেন, “এই ধরনের কাজ নিরন্তর করে যাই বলেই মানুষের ভোটে জিতে বার বার ফিরে আসি। কাজের সময় কোনও দল দেখি না।” আগামী দিনে নিজের ওয়ার্ডের স্বাস্থ্যকেন্দ্রকে আরও বড় এবং উন্নত করতে চান মালা।

Advertisement

টানা ছ’বার কলকাতা পুরভোটে জিতে কাউন্সিলর হওয়ার কৃতিত্ব এ দিন আরও এক জন মহিলা অর্জন করেছেন। তিনি বিজেপির মীনাদেবী পুরোহিত। কলকাতার ২২ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর এ দিন ফের জিতে বলেন, “আমার জয় আসলে সন্ত্রাসের মুখের উপর মানুষের জবাব।” রবিবার কলকাতা পুরসভার ভোটের দিন ২২ নম্বর ওয়ার্ডে বিস্তর গোলমাল হয়। মীনাদেবীর পোশাক ছিঁড়ে দেওয়া, তাঁর জামাইয়ের চোখে আঘাত করা এবং এক বিজেপি কর্মীর মুখ ফাটিয়ে দেওয়ার অভিযোগ ওঠে তৃণমূলের বিরুদ্ধে। তার পরেও ষষ্ঠ বার কাউন্সিলর হতে পেরেছেন মীনাদেবী। কী ভাবে এটা সম্ভব হল? মীনাদেবীর জবাব, “সারা বছর মানুষের পাশে থাকি। তাঁদের সেবা করি। তাঁরা ডাকলেই আমাকে পান। তাই সন্ত্রাস করেও আমাকে হারানো যায়নি।” এ বার জিতে এলাকায় আরও উন্নয়ন করতে চান মীনাদেবী।

বিজেপি নেতৃত্বের ব্যাখ্যা, মীনাদেবীর জয় থেকে স্পষ্ট— মাটির কাছাকাছি থেকে কাজ করলে তবেই জেতা যায়। মীনাদেবীর আগে ২২ নম্বর ওয়ার্ডে জিততেন বিজেপির শান্তিলাল জৈন। তিনি দু’বার কাউন্সিলর হয়েছিলেন। ৯২ সালে স্বামীর মৃত্যুর পরে রাজনীতিতে আসেন মীনাদেবী। তার পর থেকে নিজের ওয়ার্ডই তাঁর ধ্যান-জ্ঞান। তার বাইরে দলের রাজ্য দফতরেও বিশেষ সময় কাটাতে দেখা যায় না তাঁকে। এ ছাড়া, কলকাতার ২৩ নম্বর ওয়ার্ডে সাড়ে ২৬ বছর কাউন্সিলর থাকার পর মঙ্গলবার পুরভোটের ফলে হেরে গিয়েছেন বিজেপির সুনীতা ঝাওয়ার।

কলকাতা পুরসভার আর এক মহিলা কাউন্সিলর সিপিআইয়ের মধুছন্দা দেব এ দিন চতুর্থ বার জিতেছেন। তিনি বলেন, “ভোটটা অবাধ হলে বামপন্থীরা কলকাতায় আরও অনেক এগিয়ে যেত। সেটা হতে দেওয়া হল না।” তাঁর নিজের ৯২ নম্বর ওয়ার্ডে ভোটের দিনের অভিজ্ঞতা কেমন? মধুছন্দা বলেন, “আমার ওয়ার্ডেও বাইক বাহিনী এসেছিল। তাড়া খেয়ে পালিয়েছে।” এ বার জেতার পর মধুছন্দা প্রথমেই বাবুবাগানের বুস্টার পাম্পিং স্টেশনের কাজ শেষ করাতে চান। ঢাকুরিয়া থেকে অন্যত্র সরে যাওয়া পোস্ট অফিস ফেরত আনা, পালবাজারের ঝিল সংস্কার, অন্য একটি জলাশয় ভরাট বন্ধ করা— এ সবও রয়েছে মধুছন্দার প্রাথমিক কর্তব্যের তালিকায়। তাঁর কথায়, “পোস্ট অফিসটা এই অঞ্চল থেকে সরে যাওয়ায় এলাকার অবসরপ্রাপ্ত মানুষদের খুব অসুবিধা হচ্ছে। তাঁরা ওখানে পেনশন তুলতে যেতেন।”

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement