সন্দেশখালির মসজিদ বাড়ির রিং বাঁধ পরিদর্শন করে ফিরছেন সেচমন্ত্রী রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়। শনিবার নির্মল বসুর তোলা ছবি।
সপ্তাহখানেক আগে বেতনী নদীর বাঁধ ভেঙে প্লাবিত হয় সন্দেশখালির কালীনগরের অন্তত দশটি গ্রাম। নষ্ট হয় ধান চাষ। ভেসে যায় বেশ কিছু পুকুরের মাছ। ঘর ভেঙে যাওয়ায় গ্রামবাসীদের অনেককে আশ্রয় নিতে হয় ত্রাণ শিবিরে। পরিস্থিতি সরেজমিনে খতিয়ে দেখতে শনিবার ওই এলাকায় গিয়ে বাঁধ ভাঙার জন্য কর্তব্যে উদাসীনতার অভিযোগ তুলে দফতরেরই এক কর্তাকে ধমক দিলেন সেচমন্ত্রী রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়। দ্রুত ওই এলাকায় কংক্রিটের নদীবাঁধ তৈরিরও নির্দেশ দেন তিনি।
বেতনী নদীর বাঁধ ভেঙেছে প্রায় ৩০০ ফুট। ওই বাঁধ দেখভালের দায়িত্বে রয়েছেন সেচ দফতরের কালীনগরের এসডিও বিশ্বনাথ দাস। এ দিন পরিস্থিতি খতিয়ে দেখার পরে বিশ্বাথবাবুকে সেচমন্ত্রীর ধমক, “আমি শুনেছি, আপনি দায়িত্বে থাকলেও বাঁধের বিষয়ে বিশেষ গুরুত্ব দেন না। সময়মতো গুরুত্ব দিলে হয়তো বাঁধ ভেঙে এত মানুষকে ভুগতে হত না।” বিশ্বনাথবাবু অবশ্য মন্ত্রীর সামনে দাবি করেন, “আমি এখানে নজরদারি চালাই। আচমকা জলের চাপে বাঁধের নীচের দিকের মাটি ধুয়ে যেতেই বাঁধ ভেঙে পড়ে।”
এ দিন ন্যাজাট থেকে লঞ্চে দফতরের ইঞ্জিনিয়ার এবং আধিকারিকদের নিয়ে কালীনগরে আসেন সেচমন্ত্রী। বাঁধ পরিদর্শনের সময়ে কাদায় আটকেও পড়েন। গত ১২ অগস্ট বাঁধ ভাঙার পরে যে ভাবে প্রায় ছ’শো মিটার রিং বাঁধ তৈরি হয়েছে, তাতে সন্তোষ প্রকাশ করে সেচমন্ত্রী প্রয়োজনে আরও ৫০০ মিটার রিং বাঁধ তৈরির নির্দেশও দেন। তবে, তিনি জোর দিয়েছেন কংক্রিটের বাঁধ তৈরির উপরেই। তিনি জানিয়েছেন, প্রয়োজনীয় জমি মিলেছে। কালীনগরে প্রায় ১০ কোটি টাকায় এক কিলোমিটার কংক্রিটের নদীবাঁধের কাজ শুরু হবে নভেম্বরের প্রথম সপ্তাহে।
মন্ত্রী বলেন, “সুন্দরবন এলাকায় ৪০ কিলোমিটার কংক্রিটের নদীবাঁধের কাজ শুরুর পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। টেন্ডার দেওয়ার কাজও শুরু হয়েছে।” দুর্গতেরা মন্ত্রীর কাছে পর্যাপ্ত ত্রাণ না মেলার অভিযোগ তোলেন। কেউ কেউ ক্ষতিপূরণের দাবি জানান। সব শুনে মন্ত্রী দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ দেন মহকুমা প্রশাসনের কর্তাদের।