আর্থিক দুর্নীতির অভিযোগ তুলে ক্যানিংয়ের মাতলা সাব-রেজিষ্ট্রি অফিসের আধিকারিককে অপসারণের দাবিতে আন্দোলনে নেমেছেন সেখানকার দলিল-লেখক, মুহুরি এবং স্ট্যাম্প বিক্রেতারা। তাঁদের আন্দোলনের জেরে অচলাবস্থা তৈরি হয়েছে ওই অফিসে। গত শুক্রবার থেকে অনির্দিষ্টকালের জন্য কর্মবিরতির ডাক দিয়েছে ওই অফিসের সমস্ত কর্মী সংগঠন। ফলে, সমস্যায় পড়েছেন জমি কেনাবেচা সংক্রান্ত কাজে আসা বহু মানুষ। রাজ্য সরকারের প্রচুর টাকা রাজস্ব ক্ষতিও হচ্ছে। ওই সাব-রেজিস্ট্রার অবশ্য অভিযোগ মানেননি।
মহকুমাশাসক (ক্যানিং) প্রদীপ আচার্য অবশ্য বলেন, “ওই রেজিস্ট্রারের বিরুদ্ধে বেশ কিছু অভিযোগ পেয়েছি। সংশ্লিষ্ট দফতরের সঙ্গে আলোচনা করে কী ভাবে সমস্যার সমাধান করা যায়, তা দেখা হচ্ছে।” সাব-রেজিস্ট্রার গৌতম রায়চৌধুরীর দাবি, “সরকারি নির্দেশ মেনেই জমির মূল্য নির্ধারণ করা হয়। দু-একটি দলিলে অনিচ্ছাকৃত ভাবে ভুল তারিখ বসে গিয়েছিল। যা সংশোধন করে দেওয়া যায়। ওই কর্মীরা সেই সুযোগ না দিয়ে কাউকে কিছু না জানিয়ে আন্দোলন করছেন। পুরো বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছি। কোনও দুর্নীতিতে আমি যুক্ত নই।”
ক্যানিং-১ ও ২ ব্লক-সহ সুন্দরবনের প্রত্যন্ত এলাকার মানুষ জমি কেনাবেচার জন্য ওই দফতরে যান। আন্দোলনকারীদের অভিযোগ, গৌতমবাবু জমির দলিলে ভুল তারিখ বসিয়ে সই করছেন। ফলে, বহু দলিল জাল প্রমাণিত হচ্ছে বা বাতিল হয়ে যাচ্ছে। শালি জমিকে ডাঙা বা বাস্তুজমি করে দেওয়া হচ্ছে। একই জমি বিভিন্ন সময়ে সরকার নির্ধারিত মূল্যের বাইরে গিয়ে অনেক বেশি দাম ধার্য করা হচ্ছে। দালালদের মাধ্যমে সরকারি কাগজপত্র কারচুপি করে জমির দাম কমিয়ে বা বাড়িয়ে লক্ষ লক্ষ টাকা ওই আধিকারিক আত্মসাত করছেন। অথচ, একই জমি আলিপুর থেকে রেজিস্ট্রি করালে অনেক কম খরচে হয়ে যাচ্ছে। ফলে, অনেকই জমি কেনাবেচার ব্যাপারে আলিপুরে চলে যাচ্ছেন। তাতে ক্যানিংয়ের দলিল লেখক মার খাচ্ছেন। দলিল-লেখক ফারুক শেখ বলেন, “সাব রেজিস্ট্রার নিয়ম বহির্ভূত ভাবে শালি জমিকে ডাঙা বা বাস্তু জমি করে দিচ্ছেন। জমির দাম লক্ষ লক্ষ টাকা বাড়িয়ে রেজিস্ট্রি করছেন। ফলে, সাধারণ মানুষ ঠকছেন।” আন্দোলনকারীদের অভিযোগ, ওই আধিকারিক বেলা ১২টার পরে অফিসে ঢোকেন। ঘণ্টা দু’য়েকের বেশি কাজ করেন না। দুপুর ২টার পর রেজিস্ট্রি করাতে হলে ৫ থেকে ১০ হাজার টাকা বেশি দাবি করা হয়। স্ট্যাম্প ভেন্ডার গৌরীশঙ্কর বিশ্বাস বলেন, “ওই অফিসারের দুর্নীতির প্রমাণ দিয়ে তাঁর বদলি চেয়ে প্রশাসনের কাছে অভিযোগ জানানো হয়েছে। যতক্ষণ না তাঁকে সরানো হচ্ছে, আন্দোলন চলবে।” জেলা রেজিস্ট্রার শিবনাথ রায়ের সঙ্গে যোগাযোগ করা যায়নি। তিনি ফোন ধরেননি। এসএমএসেরও জবাব দেননি।
বধূর মৃত্যু
অস্বাভাবিক মৃত্যু হল কাউন্সিলরের স্ত্রী। শান্তিপুরের ২২ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর তৃণমূলের তারক সাহার স্ত্রী পিংকি সাহা দাসের দেহ মঙ্গলবার বাড়িতে গলায় ফাঁস লাগানো অবস্থায় দেখতে পাওয়া যায়।