অটোস্ট্যান্ডের কাছে ক্যম্প করে অবৈধ অটো চিহ্নিতকরণের কাজ চলছে। ছবি: সামসুল হুদা।
অবৈধ অটো চলাচল রুখতে পথে নামল প্রশাসন।
গত কয়েক দিন ধরেই ক্যানিং-১ ব্লক প্রশাসনের পক্ষ থেকে বিভিন্ন অটো স্ট্যান্ডে ক্যাম্প করে হানা দিয়ে রুট-পারমিট বিহীন অটো বাতিল শুরু হয়েছে। প্রশাসনের দাবি, বদলে পরিবেশ সহায়ক, গ্যাস চালিত গ্রিন অটো রাস্তায় নামানো হবে। ক্যানিংয়ের মহকুমাশাসক প্রদীপ আচার্য বলেন, “বাসন্তীতে কিছু গ্যাসচালিত গ্রিন অটো বছর দু’য়েক আগে চালু করা গেলেও সব ব্লকে তা করা যায়নি। প্রশাসনের সর্বস্তরে আলোচনা করেই এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। আপাতত ক্যানিং ১ ব্লকে এই পরিকল্পনা চালু হলেও পর্যায়ক্রমে অন্য ব্লকেও তা শুরু হবে।”
প্রশাসন সূত্রে খবর, ক্যানিং থেকে বারুইপুর, কোচিয়ামারা, মধুখালি রুটে প্রায় সাড়ে চারশো অবৈধ অটো চলাচল করে। ওই সব অটোতে দুর্ঘটনা ঘটলে কোনও আর্থিক ক্ষতিপূরণের ব্যবস্থা নেই। তিন দিনের কর্মসূচিতে তাই বিভিন্ন কোম্পানির প্রতিনিধিদের উপস্থিতিতে বেআইনি অটোগুলিতে খোদাই করে চিহ্নিত করা হয়। কর্তৃপক্ষের তরফে বলা হয়েছে, ৬ হাজার টাকার বিনিময়ে ওই অটোগুলি তুলে নেওয়া হবে। নতুন গ্রিন অটো দেওয়ার জন্য পুরনো অটোগুলির রেজিস্ট্রেশন করিয়ে মালিকদের নাম নথিভুক্ত করা হবে। জেলা পরিবহণ দফতরের পক্ষ থেকেই রুট পারমিট-সহ ‘অফার লেটার’ দেওয়া হবে। অটো মালিকেরা ব্যাঙ্ক থেকে ঋণ নিয়ে অথবা নগদে আগামী ৩ মাসের মধ্যে ওই সংস্থার কাছ থেকে গ্যাস চালিত গ্রিন অটো পাবে। কিন্তু বিষয়টি নিয়ে অটো মালিকদের একাংশের মধ্যে ক্ষোভ তৈরি হয়েছে। তাঁদের অভিযোগ, প্রশাসন চাপ দিয়ে পুরনো অটো বাতিল করছে। অতি সামান্য টাকায় অটোগুলি তুলে নেওয়া হচ্ছে। মালিকদের অনেকেরই নতুন গ্যাস চালিত অটো কেনার সামর্থ্য নেই। ব্যাঙ্ক ঋণ পাওয়ার ক্ষেত্রেও নানা সমস্যা রয়েছে। তা ছাড়াও তাঁরা দাবি করেন, গ্যাস চালিত অটোর সিলিন্ডার রিফিলিং করার কোনও ব্যবস্থা ক্যানিংয়ে নেই। সে ক্ষেত্রে তাঁরা কী করবেন? ক্যানিং-১ বিডিও বুদ্ধদেব দাস বলেন, “অটো কোম্পানিগুলিই ব্যাঙ্ক ঋণের ব্যবস্থা করবে। যাঁদের কর্ম বিনিয়োগ কেন্দ্রে নাম নথিভুক্ত আছে, তাঁরা ঋণের ক্ষেত্রে ‘গতিধারা’ বা ‘যুবশ্রী’ প্রকল্পে ৩০ হাজার টাকা ছাড় পাবেন।” তা ছাড়া, সিলিন্ডার রিফিলিংয়ের জন্য হেলিকপ্টার মোড়ের একটি পেট্রল পাম্পের সঙ্গে কথা বলা হচ্ছে বলেও জানান তিনি।
মহকুমাশাসক দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, ক্যানিং-১, ২, বাসন্তী এবং গোসাবা ব্লক এলাকায় হাজার খানেকের বেশি অটো চলাচল করে। এদের অধিকাংশেরই রুট পারমিট নেই। পরিবহণ দফতরকে ট্যাক্স এবং রেজিস্ট্রেশন-ফি বাবদ কোনও টাকাই এরা দেয় না। এই বেআইনি কারবার ঠেকাতে গত ২৮ সেপ্টেম্বর মহকুমাশাসকের দফতরে বিডিও, জেলা আরটিও, পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি, প্রশাসনের আধিকারিক ও বিভিন্ন কোম্পানির প্রতিনিধিদের নিয়ে একটি বৈঠক হয়। বৈঠকেই অবৈধ অটো বাতিল করে বৈধ অটো চালু করার ব্যাপারে পরিকল্পনা করার সিদ্ধান্ত হয়।