এফবি শিবানী ট্রলারের মালিক সূর্য দাস জানিয়েছেন, কাকদ্বীপের স্থানীয় ১৭ জন মৎস্যজীবী ট্রলার নিয়ে গভীর সমুদ্রে মাছ ধরছিলেন। নিজস্ব চিত্র
গভীর সমুদ্রে মাছ ধরত গিয়ে বাংলাদেশ সীমান্তরক্ষী বাহিনীর হাতে আটক হল ভারতীয় মৎস্যজীবীদের ট্রলার। জানা গিয়েছে ট্রলারটির নাম 'এফবি শিবানী'। গত ২৯ নভেম্বর ১৭ জন মৎসজীবীকে নিয়ে কাকদ্বীপ থেকে রওনা দেয় ট্রলারটি। কিন্তু ঠিক পরের দিনই ট্রলারটিকে আটক করা হয় বলে খবর। ট্রলারটি আন্তর্জাতিক জলভাগের সীমান্ত পার করে বাংলাদেশে ঢুকে পড়েছিল কিনা তা এখনও স্পষ্ট নয়। আটক ট্রলারের ১৭ জন ভারতীয় মৎস্যজীবীকে মঙলাপট থানার পুলিশের হাতে তুলে দেয় বাংলাদেশ সীমান্তরক্ষী বাহিনী। প্রত্যেক মৎস্যজীবীকেই স্থানীয় আদালতে পেশ করা হবে বলে জানা গিয়েছে।
এফবি শিবানী ট্রলারের মালিক সূর্য দাস জানিয়েছেন, কাকদ্বীপের স্থানীয় ১৭ জন মৎস্যজীবী ট্রলার নিয়ে গভীর সমুদ্রে মাছ ধরছিলেন। কিন্তু মঙ্গলবার আচমকা ইঞ্জিন বিকল হয়ে পড়ায় ভারতীয় জলসীমানার মধ্যেই ট্রলারটি ভাসতে থাকে। সেই সময় পূর্ব দিকে স্রোত থাকায় ট্রলারটি বাংলাদেশের দিকে ভেসে যায়। ক্রমশ বাংলাদেশের জল সীমানার দিকে এগোতে থাকলেই ট্রলারটিকে আটক করে বাংলাদেশ বর্ডার গার্ড। বুধবার সমুদ্র থেকে ভারতীয় মৎস্যজীবীদের বাংলাদেশ উপকূলে নামানো হলে ট্রলার মালিককে ফোন করে ঘটনার কথা খুলে বলেন মৎসজীবীরা। ইতিমধ্যেই মৎস্যজীবী সংগঠনগুলোর পক্ষ থেকে বাংলাদেশের বেশ কয়েকটি সংগঠনের সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়েছে। ভারতীয় মৎস্যজীবীদের দেশে ফেরাতে স্থানীয় প্রশাসনকেও দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়ার অনুরোধ জানানো হয়েছে। এ বিষয়ে সুন্দরবন ফিশারম্যান অ্যাসোসিয়েশন মালিক সংগঠনের সম্পাদক বিজন মাইতি বলেন, ‘‘বাংলাদেশে আটক হওয়া ট্রলারের মাঝির মাধ্যমে আমরা খবর পেয়েছি। দ্রুত মৎস্যজীবীদের দেশে ফেরানোর আবেদন জানানো হয়েছে সরকারের কাছে। বাংলাদেশের কয়েকটি মৎস্যজীবী সংগঠনের সঙ্গেও আমরা যোগাযোগ করছি।’’
আরও পড়ুন: হলদিয়ায় একমঞ্চে কুণাল-লক্ষ্মণ, নয়া রাজনৈতিক সমীকরণ নিয়ে জল্পনা
এই ট্রলারেই মাছ ধরতে গিয়েছিলেন কাকদ্বীপের মাইতিরচকের বাসিন্দা তরুণ মৎস্যজীবী সুরজিৎ দাস (১৮)। এই ট্রলারে গত যাত্রায় মাছ ধরতে গিয়েছিলেন সুরজিতে বাবা। তাঁর হাতে চোট লাগায় এবারের তিনি যেতে পারেননি। কিন্তু ট্রলার মালিকের কাছ থেকে গোটা মরসুমে মাছ ধরার আগে দাদন (অগ্রীম পারিশ্রমিক) নেন মৎস্যজীবীরা। তাই ছেলে ছেলে সুরজিৎকে এবারের পাঠিয়েছিলেন। কিন্তু এই ট্রিপে অন্যান্য মৎস্যজীবীদের সঙ্গে সুরজিৎও বাংলাদেশে আটক হওয়ায় গোটা পরিবারই কান্নায় ভেঙে পড়েছে। কবে তাঁদের ছেলে ঘরে ফিরবে সেই চিন্তাতে নাওয়া-খাওয়া ভুলেছেন সুরজিতের মা।
আরও পড়ুন: মিলনমেলা হল সেতু, খুলে দিতেই মাঝেরহাট ব্রিজে নামল মানুষের ঢল