Death

Death by Electrocution: তিনটি মৃত্যুতে কি বদলাবে আবাসনের বঞ্চনার ভাগ্য

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ২৩ সেপ্টেম্বর ২০২১ ০৬:১১
Share:

বেহাল: নদীর চেহারা নিয়েছে রাস্তা। বুধবার, পাতুলিয়ার সরকারি আবাসন চত্বরে। নিজস্ব চিত্র।

ঘরের ভিতর জমা জলের মধ্যেই উপুড় হয়ে পড়েছিলেন পৌলমী দাস। পাশেই চিৎ অবস্থায় বড় ছেলে শুভ, তার থেকে সামান্য দূরে দরজার কাছে দেওয়ালে হেলান দিয়ে গৃহকর্তা রাজা দাস। মঙ্গলবার বিকেলে পাতুলিয়া সরকারি আবাসনের ঘরে তিন জনকে এ ভাবেই দেখেছিলেন প্রতিবেশীরা।

Advertisement

বুধবার দুপুরে আবাসনের ডি ব্লকের দ্বিতীয় গলির দিকে তাকিয়ে বার বার সেই কথা জানাচ্ছিলেন দীনেশ পাণ্ডে, রামবাবু যাদবেরা। তাঁদের কথায়, “ভারী বৃষ্টি হলেই জলবন্দি হই। একটা পরিবার শেষ হয়ে গেল। হয়তো এ বার কিছু হবে।” ব্যারাকপুর, টিটাগড় ও খড়দহ রেল স্টেশন থেকে ১০-২০ মিনিটের দূরত্বে রয়েছে একতলা কোয়ার্টার্স ঘেরা এই আবাসন। বড় রাস্তা, গলি থেকে প্রতিটি ঘর এখন জলের নীচে। অধিকাংশ বাসিন্দাই স্থানীয় শ্রমিক কল্যাণ সমিতি-সহ অন্যান্য ত্রাণ শিবিরে চলে গিয়েছেন। আমপানের সময়েও প্রায় এক মাস জলবন্দি থাকতে হয়েছিল তাঁদের।

এ দিন জমা জল পাম্প করে পাতুলিয়া বাজারের বড় নিকাশি নালায় ফেলছিল দমকল বাহিনী। বাসিন্দারা জানাচ্ছেন, স্বাধীনতার এত বছর পরেও এই আবাসন খড়দহ পুরসভা, না কি পাতুলিয়া পঞ্চায়েত কার আওতায়— সেটাই স্থির হয়নি। তাই পুরসভা বা পঞ্চায়েতে ভোট দেওয়ারও অধিকার নেই বাসিন্দাদের। তবে খড়দহ বিধানসভা এবং দমদম লোকসভার অধীনে রয়েছে ওই এলাকা। সাংসদ সৌগত রায় বলেন, “পুরসভা বা পঞ্চায়েতের বিষয়ে বহু বার জেলা প্রশাসনকে চিঠি লিখলেও কিছু হয়নি। ওটা আবাসন দফতরের অধীন। তবে উন্নয়ন বা নাগরিক পরিষেবায় কোনও খামতি রাখা হয় না।”

Advertisement

১৯৬০ সালে বিশ্ব ব্যাঙ্কের আর্থিক সহযোগিতায় ওই আবাসন তৈরি হয়। সেখানে চটকল ও অন্যান্য কারখানার শ্রমিকেরা থাকতেন। পরে একটা অংশে পুলিশকর্মীদের থাকতে দেওয়া হয়। সেই সময়ে আবাসনের চার পাশে ছিল ধানজমি। পরে সেখানে বসতি গড়ে ওঠায় আবাসনের জমি নিচু হয়ে যায়। এ, বি, সি, ডি, এইচ ব্লকের ৩৩৫টি ঘর রয়েছে পুলিশের জন্য। তার মধ্যে দু’টি অফিস থাকলেও, তা ব্যবহৃত হয় না। ই, এফ, জি, আই ব্লকের ৪০০টি ঘর সাধারণের জন্য। তার একটি আবাসন দফতরের অফিস। জানা যাচ্ছে, কয়েকটিতে পুলিশ পরিবার থাকলেও বাকি সব দখল হয়ে রয়েছে। সাধারণের ক্ষেত্রেও তেমনই। স্থানীয়েরা জানাচ্ছেন, আবাসনের জল বেরোনোর জন্য থাকা বড় ঝিলটি সংস্কারের অভাবে মজে গিয়েছে। সেখান দিয়েই এলাকার জমা জল খড়দহ খালে গিয়ে পড়ত। কিন্তু ২০০৭ সালের পর থেকে সেই ব্যবস্থা ক্রমশ ভেঙে পড়েছে।

উত্তর ২৪ পরগনার জেলাশাসক সুমিত গুপ্ত বলছেন, “সেচ দফতরকে মাস্টার প্ল্যান তৈরি করতে বলা হয়েছে। ঝিলের বিষয়টিও দেখা হচ্ছে। পাশাপাশি পুরসভা এবং পঞ্চায়েতের বিষয়টি দেখছি।” সেই সঙ্গে তিনি জানান, মৃতদের পরিবারকে সরকারি নিয়ম অনুযায়ী ক্ষতিপূরণ দেওয়া হবে।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement