পঞ্চায়েত ভোট নিয়ে আলোচনায় তরুণীরা। নিজস্ব চিত্র
তানিয়া পরভিন: এ বছর আমি প্রথম ভোট দেব। বেশ উত্তেজিত লাগছে। আমাদের নির্বাচিত জনপ্রতিনিধিরা গ্রামের উন্নয়নের জন্য ভাল কাজ করবেন, সেই আশা করছি।
শবনম সুলতানা: প্রথম ভোট বলে কথা, উৎসাহ তো থাকবেই। আমি গত বিধানসভায় ভোট দিয়েছি। পঞ্চায়েত ভোট এই প্রথম বার দেব।
মিনা খাতুন: ভোট এলে আমি একটা বিষয় নিয়েই আশঙ্কায় থাকি। আমাদের এলাকায় কোনও সমস্যা সৃষ্টি না হলেও ভোটকে কেন্দ্র করে অনেক জায়গায় অনেক প্রান্তিক শ্রেণির মানুষের মৃত্যু হয়। এ বছর এ রকম কিছু না হোক, সেটাই চাইব।
আমিনা খাতুন: নেতারা ভোটের আগে নানা রকম প্রতিশ্রুতি দিলেও পরিবেশ নিয়ে কেউই খুব একটা কথা বলেন না। আমাদের এই গ্রামেও গাছপালা অনেক কমে গিয়েছে।রোদে রাস্তা দিয়ে হাঁটতে খুব কষ্ট হয়। দাদুর কাছে শুনেছি, মরিচার রাস্তার দু’ধার আগে গাছপালায় ভরপুর ছিল। এখন তা অনেকাংশে নির্মূল হয়ে গিয়েছে।
আনিসা পরভিন: ঠিক বলেছো। পঞ্চায়েত চাইলে রাস্তার ধারে গাছের সংখ্যা বৃদ্ধি করতে পারত। প্রায়ই রাস্তার ধারে সরকারি প্রকল্পে চারাগাছ লাগানো হয়। কিন্তু গাছগুলি বড় হওয়ার আগেই নষ্ট হয়ে যায়। রক্ষণাবেক্ষণ না থাকায় ছাগল-গরু খেয়ে নিচ্ছে বা অন্য কোনও কারণে নষ্ট হয়ে যাচ্ছে।
নাফিসা খাতুন: গাছের বিষয়ে পঞ্চায়েত আরও যত্নবান হলে ভাল হত। পরিবেশের জন্যে ভাল, আবার পথচলতি মানুষও স্বস্তি পেতেন।
মিনা: আমাদের এখানে খালপাড়ে অনেক অব্যবহৃত জায়গা পড়ে আছে। ভাঙড় বিজয়গঞ্জ বাজার থেকে নতুন ব্রিজ পর্যন্ত খালপাড়ের জায়গাটি প্রশাসন যদি একটু গাছপালা লাগিয়ে কয়েকটি বসার জায়গা করে দেয়, তা হলে ভাল হয়। এলাকার পরিবেশটা সুন্দর হয়।
ইউমুনা বিলকিস: তোমরা দেখেছো নিশ্চয়ই, ভাঙড়ের ঘটকপুকুর সেতুটি বহু দিন ধরে সারাই হচ্ছে। ফলে সেতুর দুই মুখে দু’টি হাইট ব্যারিয়ার লাগানো আছে। তাই ভাঙড় বাজারের পণ্যবাহী গাড়িগুলি নলমুড়ি হয়ে গ্রামের রাস্তা ধরে ভাঙড়ে আসছে। এতে রাস্তার ক্ষতি তো হচ্ছেই, আশপাশের বাড়িগুলিতেও বিভিন্ন সমস্যা তৈরি হচ্ছে। প্রশাসনের উচিত দ্রুত সেতুর কাজ শেষ করা।
শবনম: আমার একটা বিষয় নিয়ে আক্ষেপ আছে। ভাঙড় বাজার কলকাতার এত কাছে হওয়া সত্ত্বেও উপযুক্ত পরিবহণ ব্যবস্থা নেই। যদি এখান থেকে কলকাতা, হাওড়ায় বাসে যাওয়া যেত, তা হলে অনেকের সুবিধা হত। এলাকারও উন্নতি হত।
তানিয়া: আর একটি বিষয় আমার নজরে এসেছে, ভাঙড় বাজারের আবর্জনা কাঠের ও বাঁশের সেতুর মুখে খালের মধ্যে ফেলে দেওয়া হয়। তাই সেতু দিয়ে যাওয়ার সময়ে দুর্গন্ধ আসে। ব্যবসায়ী সমিতির উচিত সঠিক ভাবে বর্জ্য ব্যবস্থাপনা করা।
মিনা: সাধারণ মানুষের এই ধরনের দাবিদাওয়াগুলি পূরণ করলেই এলাকার উন্নতি হবে। বহু মানুষ উপকৃত হবেন। ভোটে জিতে যে দলই আসুক, আশা করব এই বিষয়গুলি গুরুত্ব দিয়ে দেখবে।