সোচ্চার: হাবড়ায় মিছিল বামেদের। মঙ্গলবার ছবিটি তুলেছেন সুজিত দুয়ারি
এ বার উত্তর ২৪ পরগনায় ২৫টি পুরসভার ৬২৯টি ওয়ার্ডে ভোট হয়েছে। মোট ভোটার ছিল ৩৩,৭২,৩১১ জন। ভোট দিয়েছেন ২৬,১০,৩৮৮ জন। শতাংশের হিসেবে ৭৭.৪১ শতাংশ। তবে ৮টি পুরসভায় ৮০ শতাংশের বেশি ভোট পড়েছে।
প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, জেলায় সব থেকে বেশি ভোট পড়েছে বাদুড়িয়ায়। ৮৬.৫১ শতাংশ ভোটার ভোট দিয়েছেন এখানে। বনগাঁ পুরসভায় ৮২.৬৭ শতাংশ, হাবড়া পুরসভায় ৮২.৬৮ শতাংশ, গোবরডাঙা পুরসভায় ৮৩.৭২ শতাংশ, অশোকনগর-কল্যাণগড় পুরসভায় ৮০.২৪ শতাংশ, টাকি পুরসভায় ৮৩.০১ শতাংশ, বসিরহাট পুরসভায় ৮৩.৫৬ শতাংশ এবং বারাসত পুরসভায় ভোট পড়েছে ৭৮.৬৬ শতাংশ।
শতাংশের হিসেবে সব থেকে কম ভোট পড়েছে দমদম পুরসভায়। এখানে ৭১.১৩ শতাংশ মানুষ ভোট দিয়েছেন।
এই পরিসংখ্যান নিয়ে শাসক-বিরোধী চাপানউতোর শুরু হয়েছে। বিরোধীদের দাবি, জেলায় কত শতাংশ মানুষ ভোট দিয়েছেন, তা নিয়ে তাঁদের কোনও আগ্রহ নেই। কারণ, ওটা জনমতের প্রতিফলন নয়। যে ভাবে ছাপ্পা ভোট দিয়েছে তৃণমূল, তাতে ভোটের শতাংশ ১০০ পেরিয়ে গেলেও অবাক হতেন না তাঁরা!
তৃণমূলের পাল্টা দাবি, বিরোধীদের জেলায় কোনও সংগঠন নেই। তাদের মুখে এ সব কথা মানায় না। রাজনৈতিক লড়াইয়ে এঁটে উঠতে না পারায় কুৎসা করছে বিরোধীরা।
সিপিএমের জেলা সম্পাদক মৃণাল চক্রবর্তী বলেন, ‘‘লাইনে দাঁড়িয়ে ভোটারেরা ভোট দেননি। তারপরেও ভোটের শতাংশ বেড়ে গিয়েছে। এটা মানুষের রায় হতে পারে না। এ বার ভোট ছিল, তৃণমূল-পুলিশ এবং নির্বাচন কমিশনের ভোট। একে মানুষের মতামতের প্রতিফলন বলা যায় না।’’
বিজেপির দাবি, এ বার জেলার কোথাও সুষ্ঠু ভোট হয়নি। গোটাটাই ছাপ্পা হয়েছে। গণতন্ত্রকে হত্যা করা হয়েছে। দলের বারাসত সাংগঠনিক জেলার সভাপতি তাপস মিত্র বলেন, ‘‘সকালের দিকে হয় তো ঘণ্টা দু’য়েক মানুষ ভোট দিতে পেরেছেন। তারপরে সব তৃণমূলের দখলে চলে গিয়েছে। কোথাও কোথাও সেটুকু ভোট দেওয়ারও সুযোগ পাননি।’’ তাঁর কথায়, ‘‘এ জন্যই ভোটের শতাংশ নিয়ে আমরা কথা বলতে চাই না। বরং ১০০ শতাংশ ভোট না হওয়ায় আমরা বিস্মিত!’’
বিরোধীদের অভিযোগ উড়িয়ে দিয়ে পুরভোটে জেলা তৃণমূলের কো-অর্ডিনেটর পার্থ ভৌমিক বলেন, ‘‘গত বিধানসভা ভোটে জেলায় প্রায় ৮০ শতাংশ ভোট পড়েছিল। এ বার যদি মানুষ ভোট দিতে না পারতেন, যদি গোটাটাই জল হত, তা হলে ভোটদানের হার ৭৭ শতাংশ হত না। আরও বেশি হত। ভোটের ফল বেরোলেই বোঝা যাবে, বিরোধীদের প্রাপ্ত ভোটের শতাংশ কোন পর্যায়ে নেমে গিয়েছে।’’ তৃণমূল নেতা তথা বনমন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক বলেন, ‘‘জেলার বেশিরভাগ ওয়ার্ডে তৃণমূল জিতবে। কোনও কোনও পুরসভায় ২টি থেকে ৭টি ওয়ার্ডে বিরোধীরা হয় তো জিতবে। বিরোধীরা সর্বত্র এজেন্ট দিতে পারেনি। আমাকে জানালে আমরা এজেন্ট ধার দিতাম। ওদের জেলায় সংগঠন নেই। ফলে ওদের কোনও কথা না বলে চুপ করে থাকা উচিত।’’