জঙ্গলে ঢুকে পড়ছে প্লাস্টিক। নিজস্ব চিত্র ।
নদীতে প্লাস্টিক ফেলা আগেই নিষিদ্ধ করেছিল বন দফতর। এ বার সুন্দরবনে আসা পর্যটকদের জন্য এক বার ব্যবহারযোগ্য প্লাস্টিক সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ করল বন দফতর।
সুন্দরবন ব্যাঘ্র প্রকল্প এলাকায় কোনও ভাবেই প্লাস্টিকের ক্যারিব্যাগ, বোতল, প্লেট, চামচ ব্যবহার করা যাবে না বলে ২৩ জানুয়ারি সুন্দরবন ব্যাঘ্র প্রকল্পের তরফে নির্দেশিকা জারি করা হয়েছে। পরিবেশ রক্ষার জন্য সুন্দরবন ব্যাঘ্র প্রকল্প এলাকাকে সম্পূর্ণ প্লাস্টিকমুক্ত এলাকা হিসেবে গড়ে তুলতে এই উদ্যোগ বলে জানিয়েছে সুন্দরবন ব্যাঘ্র প্রকল্প। এ বিষয়ে ইতিমধ্যেই সমস্ত লঞ্চ ও ভুটভুটি সংগঠন, হোটেল ও লজ মালিক এবং সুন্দরবন ব্যাঘ্র প্রকল্পের সমস্ত রেঞ্জে নির্দেশিকা জারি করা হয়েছে।
পরিবেশের জন্য প্লাস্টিক যথেষ্ট ক্ষতিকর। সহজে নষ্ট না হওয়া এই প্লাস্টিক সুন্দরবন ভ্রমণে আসা পর্যটকদের হাত ধরেই সব থেকে বেশি ঢুকছে জঙ্গল ও জঙ্গল লাগোয়া নদী, খাঁড়ি ও লোকালয়ে। সেই প্লাস্টিক নদীতে পড়ছে। জঙ্গলের ভিতরে উড়ে গিয়ে পড়ছে। সমস্যা হচ্ছে উপকুল এলাকার পরিবেশে।
প্লাস্টিক নিষিদ্ধ থাকলেও পর্যটকেরা অনেকেই তা মানতেন না বলে নানা সময়ে অভিযোগ ওঠে। সে কারণে এ বার লঞ্চ, ভুটভুটি, হোটেল, হোমস্টে, লজ মালিকদের এ বিষয়ে নির্দেশিকা পাঠানো হয়েছে সুন্দরবন ব্যাঘ্র প্রকল্পের তরফে। ব্যাঘ্র প্রকল্পের ডেপুটি ফিল্ড ডিরেক্টর জোন্স জাস্টিন বলেন, ‘‘পর্যটকদের হাত ধরে যথেচ্ছ প্লাস্টিক ঢুকে পড়ছে সুন্দরবনে। পরিবেশ নষ্ট হচ্ছে। নদী, খাঁড়ি, জঙ্গলে প্লাস্টিক ঢুকে পড়ায় সেখানকার ইকো সিস্টেম নষ্ট হচ্ছে। পরিবেশ রক্ষার জন্য, এখানকার জীবকূলকে রক্ষার জন্যই এই নির্দেশিকা জারি করা হয়েছে।”
বন দফতরের উদ্যোগকে সাধুবাদ জানিয়েছেন পর্যটন ব্যবসায়ীরাও। তাঁদের মধ্যে নিউটন সরকার, নীলাদ্রি রপ্তানেরা বলেন, “এমনিতেই আমরা লঞ্চ থেকে কোনও পর্যটককেই প্লাস্টিকের কিছু নদীতে ফেলতে দিই না। তবে বন দফতর যে নির্দেশিকা জারি করেছে, সেটা অবশ্যই পালন করা হবে। সুন্দরবন বাঁচলে আমরা সকলে বাঁচব।” দমদম থেকে আসা পর্যটক সুপ্রিয়া চক্রবর্তী, নীলার্ণব রায় বলেন, “এটা হওয়া সত্যিই উচিত। পর্যটকদের হাত ধরেই জলের বোতল, চিপসের প্যাকেট, ঠান্ডা পানীয়ের বোতল ঢুকছে সুন্দরবনে। পরিবেশ নষ্ট হচ্ছে। সরকারি নির্দেশ সকলের মেনে চলা উচিত।”