বিপত্তি: নলকূপ থেকে বেরোনো গ্যাসে জ্বলছে আগুন। দেগঙ্গার চাকলায়। ছবি: সজলকুমার চট্টোপাধ্যায়
একের পর এক নলকূপ থেকে বেরোচ্ছে সোঁ-সোঁ করে শব্দ। জলের সঙ্গে বার হচ্ছে কটু গন্ধের গ্যাস। নলকূপের মাথায় দেশলাইয়ের কাঠি জ্বালাতেই দাউদাউ করে জ্বলে উঠছে আগুন। কয়েক দিন ধরে এমন ঘটনায় আতঙ্ক ছড়িয়েছে দেগঙ্গার চাকলার মঞ্জিলআটি, মোল্লাপাড়ার মতো এলাকায়।
ঘটনার কথা জানতে পেরে নলকূপগুলিতে শিকল ও তালা লাগিয়ে আপাতত বন্ধ করে দিয়েছে উত্তর ২৪ পরগনা জেলা প্রশাসন। গ্যাস থেকে এলাকায় আগুন যাতে না ছড়ায়, তার জন্য রাখা হয়েছে দমকলের ইঞ্জিনও। এ দিকে রান্নার ও পানীয় জল না মেলায় এলাকার মানুষকে ছুটতে হচ্ছে দুই কিলোমিটার দূরে। ফলে জলকষ্টে ভুগছেন হাজার খানেক মানুষ।
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, প্রথমে পানীয় জলে দুর্গন্ধ তার পরে কল টিপতেই দেখা যায় এমন দৃশ্য। খবর দেওয়া হয় প্রশাসনকে। তুহিন রাজ নামে এক যুবক শনিবার বলেন, ‘‘তিন-চার দিন ধরে এলাকায় একের পর এক নলকূপের মাথা থেকে গ্যাস বার হচ্ছে, আগুন জ্বলছে। ভয়ে কেউ কলের জল খেতে চাইছেন না।’’
স্থানীয় রাকিয়াবিবি, ফতেমাবিবিরা জানান, বাড়ির কল থেকেও আগুন, গ্যাস বার হচ্ছে। ওই কলের জল খেলে ক্ষতির আশঙ্কায় ভোর থেকেই বালতি, কলসি নিয়ে জল আনতে পাশের গ্রামে ছুটছেন মহিলারা। স্থানীয় চিকিৎসক মনিরুল ইসলাম বলেন, ‘‘এখানে পানীয় জলের তেমন ব্যবস্থা নেই। বছর কয়েক আগে দু’টি গভীর নলকূপ বসানো হলেও একটি বিকল হয়ে পড়ে রয়েছে। অন্য কলের জলে আর্সেনিক রয়েছে। তার উপরে এই ঘটনায় জল কষ্ট শুরু হয়েছে।’’
দমকলের পাশাপাশি ঘটনাস্থলে পরিস্থিতি খতিয়ে দেখছেন জনস্বাস্থ্য কারিগরি দফতরের কর্মীরাও। দেগঙ্গার বিডিও সুব্রত মল্লিক এ দিন বলেন, ‘‘বিষয়টির উপরে নজর রেখেছি। ১৪টি নলকূপ এমন কাণ্ড ঘটছে। কলগুলির গভীরতা ৪০ থেকে ৫০ ফুট। গ্যাসের উৎস জানতে ‘অয়েল অ্যান্ড গ্যাস কর্পোরেশন’কে জানানো হয়েছে।’’