চলছে রাস্তা সংস্কারের কাজ। ছবি: সুদীপ ঘোষ।
তৃণমূলের হেরে যাওয়া বুথে পঞ্চায়েতের তরফে কাজ না করার অভিযোগ উঠল। দেগঙ্গার হাদিপুর ঝিকরা ২ পঞ্চায়েতের পশ্চিম জামালপুর গ্ৰামের ঘটনা। স্থানীয় মানুষের দাবি, দীর্ঘদিন ধরে গ্রামের রাস্তা বেহাল। পঞ্চায়েতকে জানিয়েও কাজ হয়নি। বাধ্য হয়ে সোমবার সন্ধ্যায়, নিজেরাই চাঁদা তুলে রাস্তার সংস্কার করেন এলাকার মানুষ।
স্থানীয় সূত্রের খবর, গত পঞ্চায়েত নির্বাচনে হাদিপুর ঝিকরা ২ পঞ্চায়েতে বোর্ড গড়েছে তৃণমূলই। কিন্তু জামালপুর গ্ৰাম থেকে তারা জিততে পারেনি। সেখানে জয়ী হয়েছেন সিপিএম প্রার্থী। অভিযোগ, তার জেরেই জামালপুর গ্রামে কোনও উন্নয়নমূলক কাজ করছে না তৃণমূল পরিচালিত পঞ্চায়েত।
গ্রামের লোকজন জানান, ওই এলাকায় আদমপুর থেকে ঘোষপাড়া পর্যন্ত পাকা রাস্তা তৈরি হয়েছে। কিন্তু ওই রাস্তার সংযোগস্থল থেকে পশ্চিম জামালপুর পর্যন্ত প্রায় এক কিলোমিটার রাস্তা পাকা হয়নি। বাম আমলে তৈরি ইটের রাস্তার সংস্কারও হয়নি বলে অভিযোগ। স্থানীয় মানুষজনের দাবি, বেহাল রাস্তাটি সংস্কারের জন্য পঞ্চায়েতকে বারবার জানালেও কাজ হয়নি। ক্রমশ চলাচলের অযোগ্য হয়ে উঠেছে রাস্তাটি। তার জেরেই চাঁদা তুলে রাস্তা সংস্কারের সিদ্ধান্ত নেন গ্রামবাসীরা।
আলো জ্বালিয়ে প্রায় রাতভর কাজ হয়। বেহাল রাস্তা খুঁড়ে ইট ভেঙে বিছিয়ে সমান করা হয়। গ্ৰামের পুরুষদের পাশাপাশি কাজে হাত লাগান মহিলারাও। গ্রামের স্কুল পড়ুয়ারা ছেলে-মেয়েদেরও হাতে-হাতে কাজ করতে দেখা যায়।
গ্রামবাসী আজিজুর রহমান বলেন, “পঞ্চায়েত করছে না বলেই গ্রামবাসীরা করছে। না হলে যাতায়াত করা যাবে না। এখানে তৃণমূল জিততে পারে না বলেই রাস্তা সংস্কার হয় না। মাঝে মধ্যে দূর্ঘটনা ঘটে। টোটো ও অটো যাত্রী নিয়ে পুকুরে পড়ে গিয়েছে বেশ কয়েকবার।” স্কুল পড়ুয়া আবু জায়েদ বলে, “এই রাস্তা দিয়ে সাইকেল, ভ্যানে স্কুলে যাতায়াত করা যায় না। গ্রামের লোকজনই রাস্তার কাজ করেছে। আমিও ইট এগিয়ে দিয়ে সাহায্য করেছি।”
স্থানীয় পঞ্চায়েত সদস্য সিপিএমের মোহম্মদ লাভলু মণ্ডল বলেন, “তৃণমূল এখানে জিততে পারেনি। সেই রাগে পরিষেবা দিচ্ছে না বাসিন্দাদের। রাস্তা সংস্কার করছে না। এই ঘটনা থেকে ওদের শিক্ষা হওয়া উচিত।”
হাদিপুর ঝিকরা ২ পঞ্চায়েতের প্রধান মোহাম্মদ শাহাবুদ্দিন অবশ্য অভিযোগ মানেননি। তিনি বলেন, “মা মাটি মানুষের সরকার সবার জন্য কাজ করে। বর্তমানে পঞ্চায়েতের তিনটি বড় বড় রাস্তার কাজ চলছে। আগামিদিনে ওই রাস্তারও
কাজ হবে।”