Road Accident

পথ দুর্ঘটনায় মৃত্যুকে কেন্দ্র করে উত্তপ্ত ভাঙড়

বৃহস্পতিবার এক দল তৃণমূল কর্মী মিক্সিং প্লান্টের গেটে তালা লাগিয়ে দেন বলে অভিযোগ। অন্য গোষ্ঠীর নেতারা গিয়ে আবার সেই তালা খুলে দেন।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

ভাঙড়  শেষ আপডেট: ১২ মে ২০২৩ ০৯:০৭
Share:

এলাকায় টহল পুলিশের। ছবি: সামসুল হুদা সামসুল হুদা

দুর্ঘটনায় এক যুবকের মৃত্যুকে কেন্দ্র করে ভাঙড়ে তৃণমূলের দ্বন্দ্ব ফের সামনে এল।

Advertisement

মঙ্গলবার রাতে কাশীপুর থানার গাংআইট এলাকার বাসিন্দা মারিফুল মোল্লা (৩৬) নামে এক যুবকের মৃত্যু হয়। বাইক নিয়ে পাকাপোলের কাছে একটি মিক্সিং প্লান্টের সামনে দাঁড়িয়ে থাকা ডাম্পারে ধাক্কা মারেন তিনি। জিরেনগাছা ব্লক হাসপাতালে নিয়ে গেলে আরজিকর হাসপাতালে স্থানান্তরিত করা হয়। বুধবার সেখানেই মৃত্যু হয় মারিফুলের।

বৃহস্পতিবার এক দল তৃণমূল কর্মী মিক্সিং প্লান্টের গেটে তালা লাগিয়ে দেন বলে অভিযোগ। অন্য গোষ্ঠীর নেতারা গিয়ে আবার সেই তালা খুলে দেন। এই নিয়ে এলাকায় উত্তেজনা ছড়ায়। মারিফুলের ষোলো বছরের এক মেয়ে ও ছ’বছরের ছেলে আছে। রাতেই তাঁর বাড়িতে যান ভাঙড় ২ পঞ্চায়েত সমিতির সহ সভাপতি আরাবুল ইসলাম। পরিবারের পাশে থাকার আশ্বাস দেন। স্থানীয় মানুষের অভিযোগ, পাকাপোল-সহ ভাঙড় ২ ব্লকের ভগবানপুর পঞ্চায়েতের বিভিন্ন এলাকায় ৪টি মিক্সিং প্লান্ট রয়েছে। ওই সমস্ত প্লান্টের সামনে লাইন দিয়ে দাঁড়িয়ে থাকে ডাম্পার। অতীতে ডাম্পারের ধাক্কায় মৃত্যুর ঘটনা ঘটেছে। বৃহস্পতিবার সকাল থেকে মৃতের পরিবারের জন্য উপযুক্ত ক্ষতিপূরণের দাবি তুলে আরাবুল-অনুগামী তৃণমূল নেতা ইব্রাহিম মোল্লা (বাপি), ফিরোজ সাঁফুইয়ের নেতৃত্বে পাকাপোল এলাকায় একটি মিক্সিং প্লান্টে তালা লাগিয়ে দেওয়া হয়।

Advertisement

পাল্টা মিক্সিং প্লান্টের তালা খুলে দেন আরাবুলের বিরুদ্ধ গোষ্ঠীর নেতা বলে পরিচিত যুব তৃণমূলের সহ সভাপতি খাইরুল ইসলামের অনুগামীরা। উভয় পক্ষের অনুগামীরা লাঠি হাতে রাস্তায় নেমে পড়েন। পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি সামাল দেয়। এই ঘটনায় পাকাপোল-হাতিশালা রুটে যান চলাচল স্তব্ধ হয়ে যায়। মিক্সিং প্লান্টের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, ওই যুবকের মৃত্যুর সঙ্গে তাদের কোনও সম্পর্ক নেই। তিনি নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে রাস্তার ধারে দাঁড়িয়ে থাকা ডাম্পারে ধাক্কা মারেন। পুলিশ জানিয়েছে, ডাম্পারটি আটক করা হয়েছে। তদন্ত চলছে।

খাইরুল বলেন, “এলাকার কিছু সমাজবিরোধী তোলাবাজি করার জন্য কোম্পানির গেটে তালা লাগিয়ে দেয়। দুর্ঘটনায় এক জনের মৃত্যু হয়েছে। এটা দুঃখজনক ঘটনা। মৃতের পরিবারের জন্য আলাপ-আলোচনার মাধ্যমে ক্ষতিপূরণের ব্যবস্থা করা যেতে পারত। কিন্তু তা বলে কোম্পানির গেটে তালা মারা যায় না। বিষয়টি আমি দলের ঊর্ধ্বতন নেতৃত্বকে জানাব।” আরাবুলের পাল্টা বক্তব্য, “বেআইনি মিক্সিং প্লান্টের কারণে এক যুবকের মৃত্যু হয়েছে। প্লান্টের জন্যই ওই এলাকায় রাস্তার ধারে লাইন দিয়ে দাঁড়িয়ে থাকে ডাম্পার। অতীতেও বেশ কয়েকটি মৃত্যুর ঘটনা ঘটেছে। গরিব পরিবারের একমাত্র উপার্জনকারীর মৃত্যু হওয়ায় পরিবারটি ভেসে যাবে। তাই আমরা ওই পরিবারের জন্য উপযুক্ত ক্ষতিপূরণের দাবি জানিয়েছি।”

ক্যানিং পূর্বের বিধায়ক তথা ভাঙড়ের পর্যবেক্ষক সওকাত মোল্লা বলেন, “যে কোনও মৃত্যুই দুঃখজনক। মৃতের পরিবার যাতে উপযুক্ত ক্ষতিপূরণ পায়, সে জন্য মালিকপক্ষের সঙ্গে কথা বলব। আমাদের দলে কোনও গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব নেই। একটা ভুল বোঝাবুঝি থেকে সমস্যা তৈরি হয়েছে। সকলকে নিয়ে বসে বিষয়টি মিটিয়ে দেওয়া হবে।”

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement