পরিদর্শন: হাসপাতালে সিএমওএইচ। ছবি: সামসুল হুদা
দিন দিন রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্তে বাড়ছে জ্বরের প্রকোপ। সেই সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বাড়ছে মৃত্যুর সংখ্যা। অভিযোগ, এর মধ্যে অনেকে মারাও যাচ্ছেন। রাজ্যের অন্যান্য প্রান্তের মতো ক্যানিং মহকুমাতেও বাড়ছে জ্বরের প্রকোপ। বর্তমানে ক্যানিং মহকুমা হাসপাতালে ভর্তি আছেন ৪০ জনেরও বেশি জ্বরে আক্রান্ত রোগী। যাঁদের মধ্যে বেশির ভাগই এনএস-১ ডেঙ্গ পজিটিভ।
১৯ সেপ্টেম্বর বাসন্তীর বল্লারটোপের বাসিন্দা সাদ্দাম সর্দার ডেঙ্গিতে আক্রান্ত হয়ে মারা যান বলে তাঁর পরিবারের দাবি। তবে ব্লক স্বাস্থ্য দফতর তা মানতে চায়নি। ক্যানিং, বাসন্তী, গোসাবা হাসপাতালে দিন দিন বাড়ছে জ্বরে আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা। হাসপাতালে যে ভাবে জ্বরের রোগীর ভিড় বাড়ছে, তাতে সকলকে হাসপাতালে জায়গা দেওয়া যাচ্ছে না। পরিস্থিতি খতিয়ে দেখতে শুক্রবার সকালে ক্যানিং, বাসন্তী, গোসাবা হাসপাতাল পরিদর্শনে আসেন জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক সোমনাথ মুখোপাধ্যায়। সঙ্গে ছিলেন এসিএমওএইচ ইন্দ্রনীল সরকার-সহ অনেকে।
মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক বলেন, ‘‘জ্বরে অনেকেই আক্রান্ত হচ্ছেন ঠিকই। তবে সব ক্ষেত্রে তাঁদের ডেঙ্গি আক্রান্ত বলা যাবে না। এখনও পর্যন্ত মহকুমায় ডেঙ্গিতে মারা যাওয়ার কোনও খবর নেই। বাইরে থেকে ডেঙ্গি পরীক্ষা করালে অনেক সময় উল্টো-পাল্টা রিপোর্ট দেওয়া হচ্ছে।’’ স্বাস্থ্য কর্তার মতে, এ সময়ে অনেকের ভাইরাল ফিভার হয়। আরও এক ধাপ এগিয়ে তাঁর দাবি, গত বছরের তুলনায় এ বার ডেঙ্গি আক্রান্তের সংখ্যা অনেক কম। এমআর বাঙ্গুর হাসপাতালে ডেঙ্গির সব রকম পরীক্ষার ব্যবস্থা করা হয়েছে বলেও জানান তিনি।
স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ, ক্যানিং মহকুমা হাসপাতালে রক্ত সংগ্রহ করা হলেও এখানে পরীক্ষা করার ব্যবস্থা নেই। রক্তের নমুনা বাঙ্গুর হাসপাতালে পাঠিয়ে দেওয়া হয়। সেই রিপোর্ট আসতে আসতে অনেক সময় লেগে যায়। বেসরকারি ল্যাবে রক্ত পরীক্ষা করিয়ে ডেঙ্গি পাওয়া গেলেও সরকারি হাসপাতালে তা স্বীকার করা হচ্ছে না বলেও অভিযোগ। এমনকী, সরকারি রিপোর্টে কারচুপি করা হচ্ছে কিনা, সেই প্রশ্নও তুলছেন অনেকে।
স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে জানানো হয়েছে, অনেকে এনএস-১ রক্ত পরীক্ষায় ডেঙ্গি পজিটিভ বলছে। কিন্তু ডেঙ্গি নির্ণয়ের ক্ষেত্রে এনএস-১ পরীক্ষার পাশাপশি আইজিএম, আইজিজি পরীক্ষা করতে হবে অ্যালাইজা পদ্ধতিতে। ওই পরীক্ষায় যদি ডেঙ্গি পজিটিভ হয়, তবেই কাউকে ডেঙ্গি আক্রান্ত বলা যাবে।