—প্রতিনিধিত্বমূলক ছবি।
অঙ্গনওয়াড়ি কর্মীদের ‘আয়ুষ্মান ভারত’ প্রকল্পে অন্তর্ভুক্ত করতে চাইছে কেন্দ্রীয় সরকার। রাজ্য সরকার ওই কর্মীদের এই কাজে সায় দেবে কি না, তা নিয়ে সংশয় রয়েছে। প্রকল্পে নাম নথিভুক্ত হলে আদৌ কোনও সুফল মিলবে কি না, তা নিয়ে নিশ্চিত নন ওই কর্মীদের একটা বড় অংশ। বরং অন্যান্য সরকারি সুযোগ-সুবিধা নিশ্চিত করা এবং বিভিন্ন দাবি পূরণের আবেদন জানিয়েছেন অঙ্গনওয়াড়ি কর্মীরা।
অঙ্গনওয়াড়ি কর্মীদের অনেকেই জানালেন, তাঁদের স্বাস্থ্যসাথী কার্ড আছে। কিন্তু সেই কার্ডেই ঠিক মতো চিকিৎসার সুযোগ মেলে না বলে তাঁদের অভিযোগ। উত্তর ২৪ পরগনা জেলার অঙ্গনওয়াড়ি কর্মী দোলা রায় হাওলাদার বলেন, “স্বাস্থ্যসাথী কার্ডে স্থানীয় নার্সিংহোমগুলিতে চিকিৎসার উপযুক্ত সুযোগ মেলে না। আয়ুষ্মান ভারত প্রকল্পে কি আদৌ কিছু পরিবর্তন হবে?’’
ওয়েস্ট বেঙ্গল অঙ্গনওয়াড়ি ওয়ার্কার্স অ্যান্ড হেল্পার্স ইউনিয়নের উত্তর ২৪ পরগনার ইনচার্জ সাবিত্রী মাহাতো বলেন, ‘‘স্বাস্থ্যসাথী কার্ডে কোনও নার্সিংহোমে চিকিৎসা করাতে গেলে, বেশির ভাগটাই নগদ টাকা নেওয়া হয়। আয়ুষ্মান ভারত প্রকল্পেও যদি একই ঘটনা ঘটে, তা হলে আমাদের কোনও লাভ হবে না। যদি চিকিৎসার যাবতীয় খরচ আয়ুষ্মান ভারত প্রকল্পের মাধ্যমে হয়, তা হলে ঠিক আছে।’’
কর্মীরা জানালেন, বিভিন্ন দাবিদাওয়া নিয়ে তাঁরা কেন্দ্র ও রাজ্যের কাছে আবেদন করে আসছেন। আগে তাঁদের সেই সব দাবিদাওয়া পূরণ করুক সরকার। তারপর ‘আয়ুষ্মান ভারত’ প্রকল্প নিয়ে ভাবা যাবে। কর্মীরা এখন মাসে ৮২৫০ টাকা বেতন পান। তাঁদের দাবি, সেটা বাড়িয়ে ২৮ হাজার টাকা করতে হবে। কর্মীদের অবসরের পর ৩ লক্ষ টাকা দেওয়া হয়। সেটা বাড়িয়ে ৫ লক্ষ টাকা করার দাবি আছে। যদি ৬৫ বছরের আগে কেউ মারা যান, তা হলে সেই টাকা পাওয়া যায় না। কর্মীদের দাবি, ৬৫ বছরের আগে কেউ মারা গেলে তাঁর পরিবারকে ৫ লক্ষ টাকা দিতে হবে।
সাবিত্রী বলেন, ‘‘অঙ্গনওয়াড়ি কর্মী এবং সহায়িকাদের কেন্দ্রে খাবারের অধিকার নেই। অনেকেই না খেয়ে সকালে কেন্দ্রে চলে আসেন। বাড়ি ফিরতে দেরি হয়। আমাদের দাবি, খাবারের অধিকারের নির্দেশ কার্যকর করতে হবে।” দোলা বলেন, “আমরা ব্যক্তিগত টাকা দিয়ে বাজার থেকে আলু, আনাজ কিনে আনি। বিল করে দিলে পরে প্রশাসন থেকে টাকা দেওয়া হয়। অনেক সময় টাকা পেতে দেরি হয়। এ সব সমস্যা আগে মেটানো হোক, তারপর আয়ুষ্মান ভারত প্রকল্প নিয়ে ভাবা যাবে।”