ট্রেন বন্ধ থাকায় ভিড় বাড়ছে নিত্যযাত্রীদের। — ফাইল চিত্র।
উত্তর ২৪ পরগনার হাবড়ায় রেলবস্তিতে আগুন লাগার জেরে ঘণ্টা তিনেক ট্রেন বন্ধ রইল শিয়ালদহ-বনগাঁ শাখায়। তার ফলে অফিস থেকে বাড়ি ফেরার সময় চরম দুর্ভোগে পড়লেন নিত্যযাত্রীরা। রেলের দাবি, মাঝে মিনিট পাঁচেকের জন্য ট্রেন চালানোর চেষ্টা করা হয়েছিল। কিন্তু অবরোধের জেরে তা থমকে যায়। পরে রেল জানায়, সন্ধ্যা ৬টা ৩৫ মিনিট নাগাদ চালু হয় ট্রেন।
বুধবার বিকেল সাড়ে ৪টে নাগাদ হাবড়া পুরসভার ১৭ নম্বর ওয়ার্ডের ওই রেলবস্তিতে আগুন লাগে। আগুন খুব দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে। তার জেরে ছড়ায় আতঙ্ক। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পৌঁছয় দমকল। একে একে দমকলের ৫টি ইঞ্জিন যায় ওই এলাকায়। আগুন আয়ত্তে আনার চেষ্টা করেন দমকলকর্মীরা। ওই সময়েই অগ্নিকাণ্ডের জেরে বন্ধ হয়ে যায় ট্রেন চলাচল। কারণ, রেললাইনের ধারেই ওই বস্তিটি। অগ্নিকাণ্ডের সময় বস্তির অনেকেই জিনিসপত্র এনে রেললাইনে রাখেন। পাশাপাশি, দমকল কর্মীরাও রেললাইনে দাঁড়িয়ে আগুন আয়ত্তে আনার কাজ শুরু করেন। এর ফলে বন্ধ হয়ে যায় শিয়ালদহ-বনগাঁ শাখায় আপ এবং ডাউন লাইনে ট্রেন চলাচল। তার জেরে দুর্ভোগে পড়েন অফিস ফেরত নিত্যযাত্রীরা। বিকেল হতেই ওই রেলপথের বিভিন্ন স্টেশনে যাত্রীদের ভিড় বাড়তে থাকে। কী কারণে ট্রেন বন্ধ রাখা হয়েছে তার কারণ ব্যাখ্যা করতে গিয়ে পূর্ব রেলের মুখ্য জনসংযোগ আধিকারিক একলব্য চক্রবর্তী সেই সময় বলেন, ‘‘আগুন লেগেছে রেললাইন সংলগ্ন এলাকায়। সেই কারণে ওভারহেড তারে বিদ্যুৎ সংযোগ বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। আগুন নিভে গেলে রেল চলাচল স্বাভাবিক হবে।’’
এর মাঝেই রেলের তরফে অবশ্য দাবি করা হয়, সন্ধ্যা ৬টা ১৫ নাগাদ ট্রেন চালু হয়েছিল মিনিট পাঁচেকের জন্য। কিন্তু তার পর পুনর্বাসনের দাবিতে বস্তিবাসীরা বিক্ষোভ শুরু করায় ট্রেন চলাচল বন্ধ করে দেওয়া হয়। একলব্যের বক্তব্য, ‘‘আমরা ট্রেন চালানোর প্রক্রিয়া শুরু করেছিলাম। ট্রেন চলেওছে। কিন্তু কিছু ক্ষণের মধ্যে অবরোধের কারণে ট্রেন চালানো বন্ধ করতে হয়। অবরোধ উঠলে ট্রেন চালানো হবে।’’ এর পর সন্ধ্যা ৭টা ৩৫ মিনিট নাগাদ চালু হয় ট্রেন।
দমকল সূত্রে জানা গিয়েছে, সন্ধ্যা ৬টা নাগাদ বস্তির ওই আগুন নিয়ন্ত্রণে এসেছে। তবে ৫০-৬০টি ঘর পুড়ে গিয়েছে বলে দমকল সূত্রে জানা গিয়েছে। কী কারণে ওই আগুন লাগল তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। অগ্নিকাণ্ডের জেরে আশ্রয় হারিয়েছেন অনেকে। আশ্রয়হীনদের স্থানীয় স্কুলে রাখার ব্যবস্থা করেছে পুরসভা। বৃহস্পতিবার ওই এলাকায় যাওয়ার কথা রাজ্যের মন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিকের।