স্কুলের সামনে বিক্ষোভে পড়ুয়া এবং অভিভাবকেরা। মঙ্গলবার, বারাসতে। নিজস্ব চিত্র
পঞ্চম শ্রেণিতে ভর্তি নিয়ে গোলমাল চলছিল বারাসতের কালীকৃষ্ণ গার্লস হাই স্কুলে। মঙ্গলবার সেই গোলমাল নেমে এল রাস্তায়। ভর্তি হতে না পারা ছাত্রী এবং তাদের অভিভাবকেরা এ দিন প্রথমে স্কুলের গেট আটকে দফায়-দফায় বিক্ষোভ দেখান। তাতে স্কুলে ঢুকতে পারেননি শিক্ষক-শিক্ষিকা এবং পড়ুয়ারাও। ঘটনাস্থলে এসে বিক্ষোভের মুখে পড়েন উত্তর ২৪ পরগনার স্কুল পরিদর্শকও। ডাকবাংলো মোড়েও রাস্তা অবরোধ করেন বিক্ষোভকারীরা। তাতে ৩৪ এবং ৩৫ নম্বর জাতীয় সড়ক অবরুদ্ধ হয়ে পড়ে। পরে ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি শান্ত করে বারাসত থানার পুলিশ।
প্রাথমিক থেকে উচ্চ মাধ্যমিক স্তরে ভর্তি নিয়ে ওই গোলমাল। তার জেরে বন্ধ রয়েছে পঞ্চম শ্রেণিতে ভর্তির প্রক্রিয়া। বিক্ষোভকারীদের অভিযোগ, স্কুলশিক্ষা দফতরের নির্দেশ অমান্য করে স্কুল কর্তৃপক্ষ প্রাথমিক থেকে ৬৯ জন ছাত্রীকে পঞ্চম শ্রেণিতে ভর্তি নিলেও, বাকি ৮৫ জন ছাত্রীকে ভর্তি নেওয়া হয়নি। স্কুলের এক কিলোমিটারের ভিতরের এলাকার বাসিন্দা ১০৪ জন ছাত্রীকেও লটারি করে নেওয়া হয়েছে।
এ দিন প্রথমে স্কুলের গেটে তালা দিয়ে প্রধান শিক্ষিকাকে ঘেরাও করেন বিক্ষোভকারীরা। স্কুলের সামনের রাস্তায় বসে পড়ে পঞ্চম শ্রেণির ভর্তি হতে না পারা পড়ুয়ারা। স্কুলের প্রধান শিক্ষিকা মৌসুমী সেনগুপ্তও নিজের অবস্থান বদল করেননি। অসুস্থও অবস্থায় তাঁকে বারাসত হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
পরিস্থিতি সামলাতে জেলা স্কুল পরিদর্শক সুজিত মাইতি ঘটনাস্থলে এসে বিক্ষোভের মুখে পড়েন। বেলা ১টা নাগাদ ডাক বাংলো মোড়ে গিয়ে পথ অবরোধ করেন বিক্ষোভকারীরা। তার জেরে দুই জাতীয় সড়ক আধ ঘণ্টারও বেশি সময় ধরে অবরুদ্ধ হয়ে পড়ে।
অন্য দিকে সুপারিশ বা দুর্নীতি করে যারা প্রাথমিকে ঢুকেছে তাঁদের ভর্তি নিতে নারাজ জানিয়ে এ দিন প্রধান শিক্ষিকা মৌসুমীদেবী বলেন, ‘‘নিয়ম মেনেই ভর্তি হবে। কারও সুপারিশ মানা হবে না। কিছু মানুষের জন্য স্কুলে ভর্তি বন্ধ রয়েছে, পঠনপাঠনের ক্ষতি হচ্ছে।’’ অন্য দিকে, বারাসত পুরসভার চেয়ারম্যান সুনীল মুখোপাধ্যায় বলেন, ‘‘প্রাথমিকে ভর্তি নিয়ে বেনিয়ম দেখার দায়িত্ব উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষিকার নয়। সমস্ত ছাত্রীকেই পঠনপাঠনের সুযোগ দিতে হবে।’’