আগুন জ্বালিয়ে বিক্ষোভ তৃণমূল কর্মীদের। — নিজস্ব চিত্র।
ভোট মিটলেও অশান্তি থামছে না রাজ্যে। শুক্রবার বসিরহাটের এক তৃণমূল কর্মীকে লক্ষ্য করে গুলি চালাল দুষ্কৃতীরা। গুলি লাগার সঙ্গে সঙ্গেই মাটিতে লুটিয়ে পড়েন তিনি। রক্তাক্ত অবস্থায় তাঁকে বসিরহাট জেলা হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়। অন্য দিকে, গুলি করে পালানোর সময় দুষ্কৃতীরা একটি বোমা ভর্তি ব্যাগ রেখে পালায় বলে অভিযোগ। ঘটনাকে কেন্দ্র করে উত্তেজনা ছড়িয়েছে এলাকায়। তৃণমূল কর্মীকে গুলির ঘটনায় বসিরহাটের পিফা এলাকায় ন্যাজাট রোডে রাস্তায় আগুন জ্বালিয়ে বিক্ষোভ দলীয় কর্মী সমর্থকদের ।বিক্ষোভকারীদের দাবি, অবিলম্বে দুষ্কৃতীদের গ্রেফতার করতে হবে ।
স্থানীয় সূত্রে খবর, শুক্রবার সন্ধ্যায় আলতাফ মালি নামে এক ব্যক্তি বসিরহাট থানার ফিফা এলাকার বাঁশতলা এলাকায় একটি দোকানে এসেছিলেন। এলাকায় তিনি ঠিকাদারির কাজ করতেন। দোকানে কেনাকাটার সময় আচমকাই কয়েক জন দুষ্কৃতী পিছন থেকে এসে আলতাফকে লক্ষ্য করে পর পর গুলি চালায়। গুলির শব্দ শুনে ছুটে আসেন স্থানীয়েরা।
আক্রান্ত তৃণমূল কর্মী। — নিজস্ব চিত্র।
দুষ্কৃতীদের ধরতে কয়েক জন তাড়া করে। সে সময়ই দুষ্কৃতীরা সঙ্গে থাকা ব্যাগ এলাকারই একটি দোকানের সামনে ফেলে পালায়। স্থানীয়েরা গিয়ে দেখে সেই ব্যাগে বেশ কয়েকটি তাজা বোমা রয়েছে। সঙ্গে সঙ্গে খবর দেওয়া হয় বসিরহাট থানার পুলিশকে। পুলিশ এসে ঘটনাস্থল থেকে ওই বোমা ভর্তি ব্যাগ উদ্ধার করে।
অন্য দিকে, গুরুতর আহত অবস্থায় আলতাফকে বসিরহাট জেলা হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। হাসপাতাল সূত্রে খবর, আলতাফের শারীরিক অবস্থা ভাল নয়। তাই তাঁকে কলকাতার আরজি কর হাসপাতালে স্থানান্তরিত করা হয়েছে। এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে উত্তেজনা দেখা দিয়েছে। আলতাফকে হামলার ঘটনার নেপথ্যে কে বা কারা জড়িত তা এখন ও জানা যায়নি। হামলার কারণও অস্পষ্ট। পুলিশ ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে। পরিস্থিতি যাতে খারাপ না হয় তাই এলাকায় পুলিশ বাহিনী মোতায়েন করা হয়েছে।
শুক্রবার সন্ধ্যার ঘটনায় বিরোধীদের দিকে আঙুল তুলেছে তৃণমূল। বসিরহাটের অঞ্চল সভাপতি আবদার রহমান মণ্ডল বলেন, ‘‘আলতাফ তৃণমূলের এক জন সক্রিয় কর্মী। এলাকার বিভিন্ন কাজে সামনে থেকে নেতৃত্ব দেন। সেই কারণেই বিরোধীরা এই কাজটা করিয়েছে। লোকসভা ভোটে বিরোধীরা এখানে ভাল ফল করতে পারেনি, সেই রাগ থেকেই হামলার ঘটনা ঘটিয়েছে।’’
যদিও এই অভিযোগ অস্বীকার করেছে বিজেপি। বিজেপির বসিরহাট সাংগঠনিক জেলার যুব মোর্চার সভাপতি পলাশ দাস বলেন, ‘‘তৃণমূলের দাবি সম্পূর্ণ মিথ্যা। এই ঘটনায় বিরোধী রাজনৈতিক দলের কোনও যোগ নেই। আলতাফবাবুর কোনও ব্যবসায়িক শত্রুতা ছিল কি না, কিংবা তৃণমূলের গোষ্ঠীকোন্দল ছিল কি না তা খতিয়ে দেখা উচিত। বসিরহাটে জয়ের পরেই এমন ঘটনা ঘটছে, যা নিয়ে তৃণমূলের ভাবা উচিত। একই সঙ্গে পুলিশ প্রশাসনের উচিত দোষীদের খুঁজে বার করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দেওয়া।’’