সভার প্রস্তুতি খতিয়ে দেখছেন পুলিশ আধিকারিক ও নেতারা। নিজস্ব চিত্র।
গত ২১ জানুয়ারি প্রতিষ্ঠা দিবস উপলক্ষে ভাঙড় বিজয়গঞ্জ বাজার মেলার মাঠে জনসভা করেছিল আইএসএফ। লোকসভা ভোটকে সামনে রেখে এ বার তারই পাল্টা, একই মাঠে জনসভা করার প্রস্তুতি নিয়েছে তৃণমূল। ৩ মার্চ রবিবার, ওই সভায় উপস্থিত থাকার কথা শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু, অভিনেত্রী তথা তৃণমূল নেত্রী সায়ন্তিকা বন্দ্যোপাধ্যায়, সোনারপুর দক্ষিণের বিধায়ক লাভলি মৈত্র, ক্যানিং পূর্বের বিধায়ক তথা ভাঙড়ের পর্যবেক্ষক সওকাত মোল্লা-সহ অন্যান্যদের। আরাবুল ইসলাম-হীন ভাঙড়ে এই জনসভা করা শাসক দলের কাছে চ্যালেঞ্জ বলেই মনে করছে রাজনৈতিক মহল।
পঞ্চায়েত নির্বাচন পর্বে গোলমালের ঘটনায় ৮ ফেব্রুয়ারি ভাঙড় ২ পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি আরাবুল ইসলামকে গ্রেফতার করে পুলিশ। আরাবুল গ্রেফতার হওয়ার পরে, ১৩ ফেব্রুয়ারি বিজয়গঞ্জ বাজার মেলার মাঠে তৃণমূলের পূর্বঘোষিত সভা ভেস্তে যায়। যদিও তৃণমূলের দাবি ছিল, বোর্ডের পরীক্ষার কারণে সভা পিছিয়ে দেওয়া হয়েছে।
শুক্রবার সওকাত মোল্লা-সহ তৃণমূল নেতারা মেলার মাঠে মঞ্চ-সহ বিভিন্ন বিষয় খতিয়ে দেখতে আসেন। মাঠেই উত্তর কাশীপুর, ভাঙড় ও ভাঙড় ট্রাফিক ডিভিশনের পুলিশ কর্তাদের সঙ্গে বৈঠক করেন। দলীয় কর্মীদের জন্য মেলার মাঠে ১৫ হাজার চেয়ারের ব্যবস্থা করা হচ্ছে। যদিও তৃণমূলের দাবি, জনসভায় ৫০ হাজারের বেশি লোক হবে। প্রস্তুতি শুরু করে দিয়েছে পুলিশ।
আইএসএফের দাবি, তারা কেবলমাত্র ভাঙড় ২ ব্লকের কর্মীদের নিয়ে জনসভা করেছিল। সেখানে তৃণমূল ভাঙড় ১ ও ২ ব্লক এলাকার কর্মীদের নিয়ে জনসভা করছে। এমনিতে ভাঙড় ১ ব্লকের ৬টি পঞ্চায়েত ক্যানিং পূর্ব বিধানসভার মধ্যে পড়ে। ফলে মেলার মাঠ ভরাতে তৃণমূল ক্যানিং পূর্ব বিধানসভা এলাকা থেকে প্রচুর লোক নিয়ে আসবে বলেই দাবি তাদের। আইএসএফের ভাঙড় ২ ব্লক সভাপতি তথা জেলা পরিষদ সদস্য রাইনুর হক বলেন, “ওরা জানে যে কেবলমাত্র ভাঙড় ২ ব্লকের কর্মীদের নিয়ে মিটিং করলে মাঠ ভরাতে পারবে না। তাই ক্যানিং পূর্ব বিধানসভা এলাকা থেকে লোক নিয়ে আসার তোড়জোড় করছে।”
তৃণমূলের একটি সূত্র জানাচ্ছে, দলের সেনাপতি আরাবুল ইসলাম জেলে। তাঁর অনুগামীরা এখন অভিভাবকহীন। এই পরিস্থিতিতে ভাঙড় ২ ব্লক এলাকা থেকে কত লোক আসবে, তা নিয়ে সন্দেহ রয়েছে। আরাবুল-পুত্র হাকিমুল ইসলাম অবশ্য বলেন, “বাবার অনুপস্থিতি আমরা বুঝতে পারছি। কিন্তু আমরা দলের অনুগত সৈনিক। সওকাত মোল্লার নির্দেশে এবং তাঁর নেতৃত্বে আমরা বিভিন্ন অঞ্চল-ভিত্তিক প্রস্তুতি বৈঠক করেছি। প্রতিটি অঞ্চল থেকে বহু মানুষ জনসভায় আসবেন।”
সওকাত বলেন, “তৃণমূল কংগ্রেস একটি পরিবার। পরিবারের পাঁচ জন সদস্যের মধ্যে কোনও কারণে যদি এক জন অনুপস্থিত থাকেন, তাঁর জায়গায় অন্য সদস্যেরা অভাব পূরণের চেষ্টা করেন। আরাবুলদা না থাকলেও দলের সৈনিকেরা প্রস্তুত সাম্প্রদায়িক বিজেপি ও আইএসএফের বিরুদ্ধে লড়াই করার জন্য। আমাদের জমায়েত মিনি ব্রিগেডে পরিণত হবে।”