—প্রতীকী চিত্র।
শিবু, উত্তমদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিক দল, এমনটাই চাইছেন সন্দেশখালির তৃণমূল নেতাদের বড় অংশ। বুধবার সন্দেশখালির ৭ নম্বর কলোনি পাড়ায় তৃণমূলের জেলা পরিষদ সদস্য উত্তম সর্দার, শিবপ্রসাদ হাজরাদের নেতৃত্বে মিছিল হয়। মিছিল থেকে গ্রামবাসীদের উদ্দেশ্যে গালিগালাজ, হুমকি দেওয়ার অভিযোগ ওঠে। এরপরই গ্রামবাসীরা প্রতিরোধ গড়ে তোলেন। তৃণমূলের বাহিনীকে পিটিয়ে গ্রামছাড়া করা হয়। বৃহস্পতিবার দুই নেতার গ্রেফতারের দাবিতে বিক্ষোভ চলে।
শেখ শাহজাহানের ঘনিষ্ঠ শিবু হাজরা, উত্তম সর্দারেরাও এলাকার সাধারণ মানুষের উপর নিয়মিত অত্যাচার চালাত বলে অভিযোগ। এই ঘটনা তারই প্রতিফলন বলে মনে করছে তৃণমূল নেতাদেরই একাংশ। তাঁদের মতে, এ ব্যাপারে আগেই সতর্ক হওয়া উচিত ছিল দলের।
সন্দেশখালি ২ ব্লকের নেতা তথা এক পঞ্চায়েত প্রধান বলেন, “শিবু, উত্তমরা গত কয়েক বছর ধরে মানুষের উপরে যা অত্যাচার করছে করেছে, তাতে এই বিক্ষোভ স্বাভাবিক। দল এদের কুকর্মের কথা জানত। কিন্তু কোনও পদক্ষেপ করেনি। দল ব্যবস্থা নিলে এই দিন দেখতে হত না।” ওই নেতার দাবি, “গ্রামের তৃণমূল কর্মীদের উপরও শোষণ চালাত ওরা। তারপর শাহজাহানকে বোঝাতো, তারা বিজেপির লোক। এখন তাই গ্রামের সবাই একজোট হয়েছে রাজনৈতিক রং ভুলে।” এই ঘটনায় আবার উদ্বেগ বাড়ছে তৃণমূলে। নেতাদের আশঙ্কা, অন্য পঞ্চায়েতেও একই ঘটনা ঘটতে পারে। তৃণমূলেরই এক অঞ্চল সভাপতির কথায়, “বিভিন্ন গ্রামের মানুষ স্থানীয় অনেক বিষয় নিয়ে শাসকদলের স্থানীয় নেতাদের উপরে ক্ষিপ্ত হয়ে আছে।”
বুধবারের মারধরের ঘটনায় সৈকত দাস, সুজয় মণ্ডল ও প্রদীপ মণ্ডল নামে তিন গ্রামবাসীকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। অন্যদিকে গ্রামবাসীদের করা অভিযোগের ভিত্তিতে শিবপ্রসাদের দুই সঙ্গী ভরত দাস ও পালান অধিকারীকেও ধরা হয়েছে। ধৃতদের বৃহস্পতিবার বসিরহাট আদালতে তোলা হলে বিচারক ৩ দিনের পুলিশ হেফাজতের নির্দেশ দেন। মারধরে জখম উত্তমকে পুলিশ বুধবার উদ্ধার করলেও পরে ছেড়ে দেয়। পুলিশ সুপার জানান, বৃহস্পতিবার তার বিরুদ্ধে অভিযোগ হয়েছে। তার খোঁজ চলছে।
সিপিএম নেতা নিরাপদ সর্দার বলেন, “এই পুলিশ শাহজাহানকে খুঁজে পায়নি। উত্তমকেও পেয়েও ছেড়ে দিয়েছে। এরা আদৌ উত্তম বা শিবপ্রসাদকে ধরবে না।” সন্দেশখালির বিধায়ক সুকুমার মাহাতো অবশ্য বলেন, “পুরোটাই বিরোধীদের চক্রান্ত।”