উদ্যাপন: তৃণমূলের জয় নিশ্চিত হতেই উচ্ছ্বাস সমর্থকদের। তবে মানা হয়নি কোভিড-বিধি। নিজস্ব চিত্র।
মাস ছ’য়েক আগে বিধানসভা নির্বাচনে গোসাবায় তৃণমূলের জয়ের ব্যবধান ছিল হাজার চব্বিশের। মঙ্গলবার উপনির্বাচনের ফল বেরোতে দেখা গেল, সেই ব্যবধান কয়েকগুণ বাড়িয়ে তৃণমূল প্রার্থী জয়ী হয়েছেন ১,৪২,৫১ ভোটে। গোসাবার ইতিহাসে এত বেশি ভোটে জয়ের নজির মনে করতে পারছে না কোনও দলই। তৃণমূলের রেকর্ড জয়ের পাশাপাশি অনেকটা ভোট কমেছে বাম-বিজেপির।
২০২১ সালের বিধানসভা ভোটে এই কেন্দ্রে বিজেপি প্রার্থী বরুণ প্রামাণিককে ২৩,৭০৯ ভোটে হারিয়ে তৃতীয়বারের জন্য বিধায়ক হয়েছিলেন তৃণমূলের জয়ন্ত নস্কর। তাঁর মৃত্যুতেই এই কেন্দ্রে উপনির্বাচন হয়। মঙ্গলবার ভোট গণনার শুরু থেকেই বিজেপির পলাশ রানাকে পিছনে ফেলে দেন তৃণমূল প্রার্থী সুব্রত মণ্ডল।
গতবারের বিজেপি প্রার্থী বরুণ শিবির বদল করে তৃণমূলে ফিরেছেন। ছ’মাস আগে বিজেপিকে যাঁরা ভোট দিয়েছিলেন, তাঁদের অনেকের ভোটও যে এসেছে ঘাসফুলে, তা ফলাফলেই স্পষ্ট। গতবার এই কেন্দ্রে ৮২,০১৪টি ভোট পেয়েছিল বিজেপি। এ বার সেই সংখ্যাটাই কমে হয়েছে ১৮,৪২৩। আগেরবার তৃণমূল পেয়েছিল ১,০৫,৭২৩টি ভোট। এ বার তৃণমূল প্রার্থীর প্রাপ্ত ভোট ১,৬১,৪৭৪।
তবে তুলনায় বামেদের ভোট কমেছে কম। আগের নির্বাচনে এই কেন্দ্রে বাম প্রার্থী ছিলেন আরএসপির অনিলচন্দ্র মণ্ডল। এ বারও তিনিই প্রার্থী। গতবার ৪,৮৭১টি ভোট পেয়েছিলেন অনিল। এ বার তা কমে হয়েছে ৩,০৭৮।
তৃণমূলের এই বিপুল জয়ে দুর্নীতির অভিযোগ তুলেছে বিরোধীরা। বিজেপি প্রার্থী পলাশ বলেন, “প্রতিটি বুথেই ছাপ্পা মেরেছে তৃণমূল। যে যে বুথে সিসি ক্যামেরা ছিল, সেগুলির এক ঘণ্টার ভিডিও ফুটেজ দিতে বলা হয়েছে নির্বাচন কমিশনকে। সেগুলি পেলেই পরিষ্কার হয়ে যাবে।” আরএসপি প্রার্থী বলেন, “মানুষকে ভয় দেখিয়ে ভোট করেছে তৃণমূল। সাধারণ জনমতের প্রতিফলন এটা নয়। কাজের জন্য ভিন্ রাজ্যে রয়েছেন, এমন অনেক মানুষের ভোট পড়ে গিয়েছে।” আরএসপি নেতা তথা রাজ্যের প্রাক্তন মন্ত্রী সুভাষ নস্করের কথায়, “মোট ভোটের ৮০ শতাংশের বেশি ভোট একটাই দল পাচ্ছে, এটা গণতন্ত্রের লজ্জা।”
সুব্রত অবশ্য কোনও বিতর্কে যাচ্ছেন না। তিনি বলেন, “এই জয় গোসাবাবাসীকে উৎসর্গ করছি। ওঁদের আশীর্বাদ নিয়েই আগামী দিনে স্থানীয় উন্নয়নকে এগিয়ে নিয়ে যাব।” নদী বাঁধ তৈরি, ছোট ছোট সেতুর মাধ্যমে এক দ্বীপের সঙ্গে আর এক দ্বীপের সংযোগস্থাপন-সহ গোটা গোসাবার সার্বিক উন্নয়নই তাঁর লক্ষ্য বলে জানিয়েছেন সুব্রত। ভোটের লড়াইয়ে পাশে থাকার জন্য তিনি এ দিন ধন্যবাদ জানান রাজ্য তৃণমূলের সাধারণ সম্পাদক সওকাত মোল্লাকে।