বাঁ দিক থেকে, আরাবুল ইসলাম এবং হাকিমুল ইসলাম। — ফাইল চিত্র।
পঞ্চায়েত ভোটে রাজনৈতিক হিংসার পর নিরাপত্তা সংক্রান্ত দিকগুলি বিবেচনা করে তাঁকে নিরাপত্তা দেওয়া হল বলে পুলিশ সূত্রের খবর। সাম্প্রতিক পঞ্চায়েত ভোটে একাধিক বার তৃণমূল-আইএসএফ সংঘর্ষের জেরে অশান্তি ছড়িয়েছে ভাঙড়ে। একাধিক বার হাকিমুলকে হুমকির মুখে পড়তে হয়েছে বলে অভিযোগ। সে কারণেই যুব তৃণমূলের নেতা হাকিমুলের নিরাপত্তায় সশস্ত্র এক জন পুলিশকর্মী মোতায়েনের সিদ্ধান্ত নিয়েছে রাজ্য স্বরাষ্ট্র দফতর।
পুলিশ সূত্রের খবর, হাকিমুলের পাশাপাশি তৃণমূল নেতা খইরুল ইসলাম এবং আহসান মোল্লাও পাচ্ছেন এক জন করে নিরাপত্তারক্ষী। সর্ব ক্ষণ সশস্ত্র এক জন নিরাপত্তারক্ষী থাকবে তৃণমূলের এই নেতাদের সঙ্গে। রাজ্য প্রশাসনের পক্ষ থেকে করা হয়েছে এই ব্যবস্থা।
ভাঙড়ের রাজনীতি নিয়ে ওয়াকিবহাল মহল মনে করে, দলে অনেক দিন ধরেই আরাবুল কোণঠাসা। ২০০৬ সালের বিধানসভা নির্বাচনে বামফ্রন্টের ঝড়ের সামনে তৃণমূলের যে ৩০ জন বিধায়ক জয়ী হয়েছিলেন, তাঁদের এক জন ছিলেন আরাবুল। সেই সময় সিপিএমের সঙ্গে সমানে সমানে টক্কর দিতেন তিনি। ২০১১ সালে রাজ্যে পালাবদলের পর ভাঙড় কলেজের এক অধ্যাপিকাকে জলের জগ ছুড়ে মেরেছিলেন আরাবুল। তার পরেও রাজ্য রাজনীতি তাঁর দাপট দেখেছে।
যদিও ২০১১ সালে গোটা রাজ্যে পরিবর্তনের ঝড় বইলেও ভাঙড়ে সিপিএম নেতা বাদল জামাদারের কাছে পরাজিত হন আরাবুল। সেই থেকেই ভাঙড়ের রাজনীতিতে ‘স্খলন’ শুরু তাঁর। যদিও ২০১৩ সালের পঞ্চায়েত নির্বাচনের পর ভাঙড়-২ পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি হন তিনি। ওই বছরই পোলেরহাট-২ পঞ্চায়েতে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় জিতে প্রধান হন তাঁর পুত্র হাকিমুল। কিন্তু, বছর দুয়েকের মধ্যেই, ২০১৫ সালে গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের জেরে তৃণমূল থেকে ৬ বছরের জন্য সাসপেন্ড করা হয় আরাবুলকে।
২০১৬ সালের ভোটের আগে তাঁর সাসপেনশন তুলে নেন দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলা তৃণমূলের তৎকালীন সভাপতি শোভন চট্টোপাধ্যায়। তবে সাসপেনশন উঠে গেলে, সে ভাবে আর নিজেকে মেলে ধরতে পারেননি আরাবুল। এমনকি, সদ্যসমাপ্ত পঞ্চায়েত ভোটের আগে হাকিমুলকে ভাঙড়ে রাজনৈতিক হিংসার জন্য প্রকাশ্যে ক্ষমাপ্রার্থনা করতেও দেখা গিয়েছিল।