Arabul Islam

‘ছেলেকে মেরে ফেলার জন্য টার্গেট করা হয়েছে’! ‘তাজা নেতা’ আরাবুল চিঠি দিচ্ছেন মুখ্যমন্ত্রীকে

গত পঞ্চায়েত ভোটে জেলা পরিষদের আসন থেকে জয়ী হন হাকিমুল ইসলাম। শাসকদলের এই যুব নেতাকে বার বার হুমকির মুখে পড়তে হয়। অভিযোগ জানানোর পর আগেই তাঁর নিরাপত্তার ব্যবস্থাও হয়।

Advertisement

আনন্দবাজার অনলাইন সংবাদদাতা

ভাঙড়  শেষ আপডেট: ৩০ ডিসেম্বর ২০২৩ ১৮:১৬
Share:

(বাঁ দিক থেকে) হাকিমুল ইসলাম এবং আরাবুল ইসলাম। —নিজস্ব চিত্র।

তাঁর ছেলেকে খুনের ষড়যন্ত্র করেছে ইন্ডিয়ান সেকুলার ফ্রন্ট (আইএসএফ)। এমনই অভিযোগ করে নিরাপত্তার জন্য মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের দ্বারস্থ হচ্ছেন ভাঙড়ের প্রাক্তন বিধায়ক তথা তৃণমূল নেতা আরাবুল ইসলাম। শাসকদলের এই বিতর্কিত নেতার আতঙ্কের কথায় অবশ্য পাত্তা দিতে নারাজ নওশাদ সিদ্দিকির দল। আইএসএফ একে আরাবুলের প্রচার পাওয়ার কৌশল বলেই মনে করছে। অন্য দিকে, আরাবুল জানাচ্ছেন, ছেলে এবং তাঁর আরও নিরাপত্তার প্রয়োজন। শনিবার আরাবুল বলেন, ‘‘আমার ছেলে হাকিমুল ইসলামকে মেরে ফেলার টার্গেট করছে আইএসএফ। তাই নিরাপত্তার জন্য মুখ্যমন্ত্রীর কাছে চিঠি দেব।’’ তিনি দাবি করেন পঞ্চায়েত নির্বাচনের পর থেকেই তৃণমূল নেতা আরাবুলের প্রাণহানির আশঙ্কা তৈরি হয়েছে।

Advertisement

উল্লেখ্য, এ বার পঞ্চায়েত ভোটে জেলা পরিষদের আসন থেকে জয়ী হন হাকিমুল। শাসকদলের দাপুটে নেতার ছেলে হাকিমুল শাসকদলের যুব নেতাও। কিন্তু তাঁকে বার বার হুমকির মুখে পড়তে হচ্ছে, এই অভিযোগ জানানোর পর গত জুলাই মাসে তাঁর নিরাপত্তার ব্যবস্থা হয়। আগে আরাবুলও তাঁর নিরাপত্তার জন্য দু’জন দেহরক্ষী পেতেন। পঞ্চায়েত নির্বাচনের পর আরও এক জন দেহরক্ষী পেয়েছিলেন। সব মিলিয়ে আরাবুলের এখন তিন জন দেহরক্ষী। ছেলে হাকিমুলের নিরাপত্তায় আছেন এক জন। কিন্তু তার পরেও কেন নিরাপত্তার প্রয়োজন পড়ছে? আরাবুল জানাচ্ছেন, গত বৃহস্পতিবার ভাঙড়-২ ব্লকে স্থায়ী সমিতির মিটিংয়ে উত্তেজনা ছড়ায়। তাই নিয়ে আরাবুল বলেন, ‘‘মাননীয় মুখ্যমন্ত্রীর কাছে আমি চিঠি পাঠব। কারণ, ভাঙড়ের আইএসএফের লোকেরা আমাকে এবং ছেলেকে মেরে ফেলার টার্গেট নিয়েছে।’’

২০০৬ সালের বিধানসভা নির্বাচনে বামেদের ঝড়ের সামনে তৃণমূলের যে ৩০ জন বিধায়ক জয়ী হয়েছিলেন, তাঁদের এক জন ছিলেন আরাবুল। সেই সময় সিপিএমের সঙ্গে সমানে সমানে টক্কর দিতে দেখা যেত তাঁকে। ২০১১ সালে রাজ্যে পালাবদলের পর ভাঙড় কলেজের এক অধ্যাপিকাকে জলের জগ ছুড়ে মেরে বিতর্কে জড়িয়েছিলেন তিনি। তার পরেও ভাঙড়ের রাজনীতি তো বটেই, রাজ্য-রাজনীতিও তাঁর দাপট দেখেছে। এই আরাবুলকে এক সময় মদন মিত্র (কামারহাটির বিধায়ক) ‘তাজা নেতা’ বলে অভিহিত করেছিলেন। ২০১৫ সালে গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের জেরে তৃণমূল থেকে ছ’বছরের জন্য সাসপেন্ড করা হয়েছিল আরাবুলকে।

Advertisement

এই পঞ্চায়েত ভোটে দক্ষিণ ২৪ পরগনার ভাঙড়ের রাজনীতিতে আরাবুলের ‘প্রভাব’ নিয়ে জল্পনা শুরু হয়েছিল। আরাবুলও কিছু দিন আগে ক্ষোভপ্রকাশ করেছিলেন যে, দলীয় সভায় যেতে তাঁকে নিষেধ করা হচ্ছে। এ নিয়ে দলের কর্মিসভায় এক নেতাকে ‘তিরস্কার’ও করেন তিনি। বিরোধীদের দাবি, ভাঙড়ে শাসকদলের অন্দরে যে গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব রয়েছে, এই ঘটনাই তার প্রমাণ। প্রশ্ন উঠেছে ভাঙড়ে কি কোণঠাসা হয়ে পড়েছেন আরাবুল? বর্তমানে ভাঙড় থেকে আইএসএফের প্রভাব কমাতে তৃণমূল নেতৃত্ব ক্যানিং পূর্বের বিধায়ক শওকত মোল্লাকে দায়িত্ব দিয়েছেন। সম্প্রতি আবার শওকতকে সহযোগিতা করতে বিধাননগরের চেয়ারম্যান সব্যসাচী দত্তকেও আনা হয়। ফলে ভাঙড়ের রাজনীতিতে যে আরাবুল এবং তাঁর পরিবারের গুরুত্ব অনেকটাই কমেছে, মেনে নিচ্ছেন দলের একাংশ। তার মধ্যে আরাবুলের এমন অভিযোগ শুনে এক আইএসএফ নেতার কথায়, ‘‘পঞ্চায়েত ভোট মিটেছে সেই কবে। এখনও নাটক সমান তালে করছেন।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement