ভস্মীভূত: সবই পুড়েছে বাড়ির। ছবি: প্রসেনজিৎ সাহা।
বিজেপি নেতার বাড়িতে আগুন লাগার ঘটনাকে কেন্দ্র করে উত্তেজনা ছড়াল এলাকায়। সোমবার রাতে ঘটনাটি ঘটেছে ঝড়খালি কোস্টাল থানার ত্রিদিবনগরে। আগুনে সম্পূর্ণ ভস্মীভূত হয়ে গিয়েছে বিজেপির বুথ সভাপতি অমরজিৎ মণ্ডলের বাড়ি।
তৃণমূল কর্মীরাই আগুন লাগিয়েছে বলে মঙ্গলবার থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন তিনি। তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ। অভিযোগ অস্বীকার করেছে তৃণমূল।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রের খবর, গত লোকসভা ভোটে বিজেপি প্রার্থী অশোক কাণ্ডারীর নির্বাচনী এজেন্ট ছিলেন অমরজিৎ। সেই থেকেই তৃণমূলের তরফ থেকে নানা ভাবে তাঁকে হুমকি দেওয়া হচ্ছিল বলে অভিযোগ। গ্রামের আরও কয়েকজন বিজেপি কর্মীর সঙ্গে কেন্দ্রীয় বাহিনীর গাড়িতে চেপে গ্রাম ছেড়ে চলে আসেন অমরজিৎ ও তাঁর স্ত্রী শ্যামলী। বারুইপুরে দলীয় কার্যালয়ে আশ্রয় নেন।
সেখানে প্রায় আড়াই মাস থাকার পরে ক্যানিংয়ে একটি ঘর ভাড়া নিয়ে কাজকর্ম শুরু করেন দম্পতি। সেখান থেকেই দলের মিটিং-মিছিলে যোগ দিতেন অমরজিৎ।
তাঁরা যেন বাড়ি ফিরতে পারেন, সে কারণে বিজেপির দক্ষিণ ২৪ পরগনা পূর্ব সাংগঠনিক জেলার সভাপতি সুনীপ দাস সোমবারই ঝড়খালি কোস্টাল থানার ওসির সঙ্গে কথা বলেন। পুলিশকে জানিয়েই সোমবার দুপুরে বাড়ি ফেরেন শ্যামলী।
অভিযোগ, বাড়ি ফেরার পরেই এলাকার তৃণমূল কর্মী বিদ্যুৎ অধিকারী, বিধান অধিকারী, গণেশ মণ্ডল ও রবিশশী মণ্ডল তাঁর বাড়িতে চড়াও হয়। শ্যামলীকে কটূক্তি করেন তাঁরা। মারধর ও প্রাণনাশের হুমকি দেওয়া হয় বলেও অভিযোগ। এলাকায় থাকতে দেওয়া হবে না বলে হুমকি দেওয়া হয়।
অমরজিৎয়ের অভিযোগ, ‘‘তৃণমূলের ওই দুষ্কৃতীরাই সোমবার রাত সাড়ে ১১টা নাগাদ বাড়িতে আগুন লাগিয়ে দেয়। আমাদের এই এলাকায় কিছুতেই থাকতে দেবে না ওরা।’’ শ্যামলী বলেন, ‘‘পঞ্চায়েত ভোটের সময়েও আমাদের উপরে অত্যাচার হয়েছে। আমি তখন অন্তঃসত্ত্বা। ওদের মারে আমার গর্ভস্থ সন্তান নষ্ট হয়ে যায়।’’
বিজেপির দক্ষিণ ২৪ পরগনা পূর্ব সাংগঠনিক জেলার সহ সভাপতি রমেশ মাঝি বলেন, ‘‘এই এলাকায় তৃণমূল বাহুবলের রাজনীতি করছে। ক্ষমতায় টিকে থাকার জন্য আমাদের কর্মীদের উপরে অত্যাচার করছে।’’
যদিও অভিযোগ অস্বীকার করেছেন ঝড়খালি অঞ্চল তৃণমূলের সভাপতি বিধান বায়েন। তিনি বলেন, ‘‘অমরজিৎ চিটফান্ডের এজেন্ট ছিলেন। তাঁর কাছে বহু মানুষ টাকা পায়। সেই কারণেই দীর্ঘ দিন ধরে উনি ঘরছাড়া। এই এলাকায় বিজেপির কোনও সংগঠনই নেই। সাধারণ মানুষের কাছে সহানুভুতি আদায়ের জন্য তৃণমূলকে বদনাম করার চেষ্টা করছেন। তৃণমূলের কেউই ওঁর ঘরে আগুন লাগায়নি।’’