লাঠি হাতে দুই গোষ্ঠী (বাঁ দিকে)। তৃণমূলের গোষ্ঠী সংঘর্ষে জখমেরা।
দুয়ারে রেশন বণ্টনকে ঘিরে তৃণমূলের দুই গোষ্ঠীর মারপিট বাধল দেগঙ্গার বেড়াচাঁপা ২ পঞ্চায়েতের উত্তর চাঁদপুর গ্রামে।
বুধবার এই ঘটনায় পুলিশ গিয়ে লাঠি উচিঁয়ে পরিস্থিতি সামাল দেয়। উভয়পক্ষের অন্তত ১২ জন জখম হয়েছেন। উভয়পক্ষের অভিযোগ পেয়ে পুলিশ তদন্তে নেমেছে। এলাকায় টহল দিচ্ছে র্যাফ।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, এ দিন সকালে দুয়ারে রেশনের মালপত্র দেওয়াকে নিয়ে গোলমালের সূত্রপাত। তৃণমূলের পঞ্চায়েত সমিতির সদস্য এবং পঞ্চায়েত সদস্যের অনুগামীদের মধ্যে মারপিট বেধে যায়। স্থানীয় বাসিন্দারা জানানা, গত সাত দিন ধরে উত্তর চাঁদপুর গ্রামের সাহাজিপাড়ায় একটি নির্দিষ্ট জায়গায় রেশনের মাল দেওয়া হচ্ছিল। এ দিন বৃষ্টির জন্য পঞ্চায়েত সমিতির সদস্যের প্রতিনিধি কামরুজ্জামানের অনুগামী ও স্থানীয় বাসিন্দারা রেশনের মাল নেওয়ার জন্য জায়গা পরিবর্তন করে লাইনে দাঁড়িয়েছিলেন।
অভিযোগ, স্থানীয় পঞ্চায়েতের সদস্য আব্দুল হাকিম মোল্লা দলবল নিয়ে এসে রেশনের মাল বণ্টনের জন্য অন্যত্র লাইন দেওয়ার কথা বলেন। রেশনের লাইনে দাঁড়িয়ে থাকা কামরুজ্জামানের কর্মী-সমর্থক ও কিছু গ্রাহক তার প্রতিবাদ করেন। এই নিয়ে বচসা বাধে।
অভিযোগ, হাকিম ও তাঁর লোকজন ইট, লাঠি, রড নিয়ে হামলা চালায়। অন্তঃসত্ত্বা এক মহিলাকেও মারধর করা হয়। অসুস্থ হয়ে পড়েন তিনি। স্থানীয় বাসিন্দারা আশঙ্কাজনক অবস্থায় তাঁকে উদ্ধার করে স্থানীয় বিশ্বনাথপুর হাসপাতালে ভর্তি করেন।
এ দিকে ততক্ষণে দু’পক্ষের মধ্যে মারপিট আরও বাড়ে। ইটবৃষ্টি শুরু হয়। দেগঙ্গা থানার পুলিশ পৌঁছে লাঠি উচিঁয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। উত্তেজনা থাকায় গ্রামে র্যাফ ফের টহল শুরু হয়েছে।
হাকিম মোল্লা বলেন, ‘‘পূর্ব পরিকল্পিত ভাবে একটি জমি-সংক্রান্ত বিবাদকে সামনে রেখে কামরুজ্জামান ও তাঁর দলবল আমাদের উপরে হামলা চালিয়েছে। এই ঘটনায় আমাদের পক্ষের ৭ জন আহত হয়েছেন।’’ হাকিমের দাবি, সাহাজিপাড়ায় রেশনের মাল আটকে দেওয়া হবে বলে জানতে পেরে কথা বলতে গেলে আচমকা হামলা চালানো হয়।
অভিযোগ উড়িয়ে দিয়ে পঞ্চায়েত সমিতির সদস্যের প্রতিনিধি কামরুজ্জামান বলেন, ‘‘সাহাজিপাড়া এলাকায় সকাল থেকে রেশনের মাল দেওয়ার কথা ছিল। গ্রামের মানুষ লাইনে দাঁড়িয়েছিলেন। আচমকা পঞ্চায়েত সদস্য আব্দুল হাকিম মোল্লা দলবল নিয়ে আসেন। সেখান থেকে অন্যত্র ক্লাবে রেশনের মাল দেওয়ার কথা ঘোষণা করেন। প্রতিবাদ করতে গেলে ওরা আমাদের উপরে বাঁশ, লাঠি, রড নিয়ে হামলা চালায়।’’ কামরুজ্জামানের দাবি, জমি-সংক্রান্ত বিষয় নিয়ে যে অভিযোগ তোলা হচ্ছে, তা ভিত্তিহীন।