TMC

TMC: গোষ্ঠীকোন্দল মেটানোই চ্যালেঞ্জ হবে বিশ্বজিতের

গত বছর বিধানসভা ভোটের পরে বনগাঁকে তৃণমূলের আলাদা সাংগঠনিক জেলা করা হয়। সভাপতি করা হয়েছিল আলোরানি সরকারকে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

বনগাঁ শেষ আপডেট: ০২ অগস্ট ২০২২ ০৮:০৯
Share:

বিশ্বজিৎ দাস।

দেড় বছরে তিনবার তৃণমূল সভাপতি পদে বদল হল বনগাঁ সাংগঠনিক জেলায়।

Advertisement

নতুন সভাপতি হয়েছেন বিশ্বজিৎ দাস। সোমবার দলের শীর্ষ নেতৃত্ব তাঁর নাম ঘোষণা করেছেন। সাংগঠনিক জেলার চেয়ারম্যান করা হয়েছে শ্যামল রায়কে।

দীর্ঘদিন ধরেই তৃণমূলের বনগাঁ সাংগঠনিক জেলার নেতানেত্রীরা গোষ্ঠীকোন্দলে বিভক্ত। পদে যে-ই বসুন, ভিতরের গোলমাল থামিয়ে সংগঠনকে চাঙ্গা করাই হবে মূল লক্ষ্য।

Advertisement

গত বছর বিধানসভা ভোটের পরে বনগাঁকে তৃণমূলের আলাদা সাংগঠনিক জেলা করা হয়। সভাপতি করা হয়েছিল আলোরানি সরকারকে। দলের একটি সূত্র জানাচ্ছে, ‘বহিরাগত’ আলোরানিকে দলের একটি বড় অংশ মেনে নিতে পারেননি। গোষ্ঠীকোন্দল মাথাচাড়া দেয়।

চলতি বছরে পুরভোটের পরে আলোরানিকে সরিয়ে গোপাল শেঠকে সভাপতি করা হয়। তিনি আবার বনগাঁর পুরপ্রধান। আলোরানি বা গোপাল পূর্ণাঙ্গ জেলা কমিটি গঠন করার আগেই পদ থেকে সরে গিয়েছেন। গোপালের সময়েও তৃণমূলে গোষ্ঠীকোন্দল বার বার প্রকাশ্যে এসেছে।

এ দিন তৃণমূলের বনগাঁ সাংগঠনিক জেলার সভাপতির পদ থেকে গোপালকে এবং সাংগঠনিক জেলার চেয়ারম্যানের পদ থেকে শঙ্কর দত্তকে সরিয়ে দেওয়া হয়েছে। শঙ্কর গোবরডাঙা পুরসভার পুরপ্রধান।

বিশ্বজিৎ তৃণমূলের জন্মলগ্ন থেকে দল করলেও গত লোকসভা ভোটের পরে তিনি দিল্লিতে গিয়ে বিজেপিতে যোগদান করেছিলেন। বিধানসভা ভোটে বিজেপির টিকিটে বাগদা কেন্দ্র থেকে দাঁড়িয়ে জয়ী হন। পরবর্তী সময়ে অবশ্য তিনি তৃণমূলে ফেরেন।

বিশ্বজিৎ তৃণমূলে যোগদান করলেও দলের একাংশ তাঁকে মেনে নিতে পারেননি। বিশেষ করে বাগদায় দলীয় কর্মসূচিতে তাঁকে আমন্ত্রণ করা হচ্ছিল না।

দলীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, বিশ্বজিৎ বিজেপিতে থাকাকালীনও তৃণমূলের শীর্ষ নেতৃত্বের সঙ্গে তাঁর সুসম্পর্ক বজায় ছিল। বিধানসভা ভোটের আগে বিধানসভায় মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে দেখা হলে বিশ্বজিৎ তাঁকে পায়ে হাত দিয়ে প্রণাম করেছিলেন। এ দিন বিশ্বজিৎকে জেলা সভাপতি ঘোষণার পরে বিজেপি কড়া সমালোচনা করেছে। দলের বনগাঁ সাংগঠনিক জেলার সভাপতি রামপদ দাস বলেন, ‘‘বিশ্বজিৎকে স্পষ্ট করে বলতে হবে, তিনি বিজেপি না তৃণমূলে আছেন। উনি আদালতে এবং বিধানসভায় বলেছেন বিজেপিতে আছেন।’’ রামপদ জানান, গোষ্ঠীকোন্দল ঠেকাতে প্রথমে আলোরানি, পরে গোপাল শেঠ এবং এখন বিশ্বজিৎকে সভাপতি করা হল। কিন্তু এতে গোষ্ঠীকোন্দল ঠেকানো যাবে না। আরও মারামারি দেখা যাবে। বিরোধীদের দাবি, সাম্প্রতিক সময়ে ভাষণে বিশ্বজিৎ মুখ্যমন্ত্রীর মধ্যে রানি রাসমনি এবং ভগিনী নিবেদিতার ছায়া খুঁজে পেয়েছিলেন। তারই পুরস্কার মিলল।

এ বিষয়ে বিশ্বজিৎ বলেন, ‘‘বিধায়ক কোনও দলের হয় না। আমি মানুষের বিধায়ক। মুখ্যমন্ত্রী এবং দলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় আমার উপরে যে ভরসা করেছেন, সর্বশক্তি দিয়ে সেই মর্যাদা আমি রক্ষা করব। বনগাঁয় কোনও গোষ্ঠীকোন্দল নেই। সকলকে নিয়ে চলব।’’ পদ খুইয়ে গোপাল বলেন, ‘‘দলের শ্রীবৃদ্ধি ও ভালর জন্য সাংগঠনিক রদবদল হয়েছে। আমরা যে পদেই থাকি না কেন, দলের একজন কর্মী হিসেবে সীমাবদ্ধতার মধ্যে সঠিক কাজ করব।’’

দলের অন্দরে রদবদল নিয়ে তৃণমূলের জাতীয় কর্মসমিতির সদস্য জ্যোতিপ্রিয় মল্লিকের কথায়, ‘‘বিশ্বজিৎ সকলকে নিয়ে চলতে পারবেন। ওঁকে জেলা সভাপতি করায় আমরা খুশি।’’ তৃণমূলের বারাসত সাংগঠনিক জেলার সভাপতি পরিবর্তন করা হয়েছে। অশনি মুখোপাধ্যায়ের বদলে বারাসতের সাংসদ কাকলি ঘোষ দস্তিদারকে সভাপতি করা হয়েছে। চেয়ারম্যান করা হয়েছে হাবড়ার প্রাক্তন বিধায়ক তপতী দত্তকে।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement