লোকালয়ে বাঘের পায়ের ছাপ। নিজস্ব চিত্র।
ফের লোকালয়ে বাঘের পায়ের ছাপ। আর তা দেখে আতঙ্ক ছড়াল দক্ষিণ ২৪ পরগনার কুলতলির বৈকণ্ঠপুর এলাকায়। সোমবার সকালে গ্রাম লাগোয়া একটি নদীর পাড়ের কাদায় ছাপগুলি দেখতে পান স্থানীয়রা। সে খবর ছড়িয়ে পড়তেই ভয়ে নিজেদের ঘরবন্দি করে নেন এলাকার বাসিন্দারা। খবর দেওয়া হয় বন দফতরেও। এলাকায় পৌঁছে তারাও নজরদারি শুরু করে। তবে বন দফতরের মতে, ছাপগুলি দেখে বোঝা যাচ্ছে বাঘটি জঙ্গল থেকে নদী পেরিয়ে লোকালয়ে ঢুকে পড়লেও পরে ফের জঙ্গলেই ফিরে গিয়েছে।
কুলতলি ব্লকের একেবারে প্রত্যন্ত এলাকা ৬ নম্বর বৈকুন্ঠপুর। গ্রামের পাশেই রয়েছে ওরিয়ান নালা নামের একটি নদী। নদীর গা ঘেঁষে রয়েছে জঙ্গল। স্থানীয় ও বন দফতরের মতে, এই জঙ্গলই বাঘের অন্যতম ডেরা। বন দফতরের নথিতে এটি আজমলমারির ১২ নম্বর জঙ্গল নামে চিহ্নিত। এখানে প্রায়ই জঙ্গল থেকে লোকালয়ে ঢুকে পড়ে বাঘ।
সকালে স্থানীয় কয়েকজন মৎস্যজীবী নদী বাঁধের কাছে প্রথমে বাঘের পায়ের ছাপ দেখতে পান। সেই ছাপ যে একদম টাটকা বুঝতে পেরে সঙ্গে সঙ্গে তাঁরা কোনও ঝুঁকি না নিয়ে এলাকার মানুষকে সতর্ক করেন। খবর চাউর হতেই নিমেষে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে গ্রামে। দ্রুত নিজেদেরকে ঘরবন্দি করে ফেলেন গ্রামবাসীরা। খবর দেওয়া হয় বন দফতরের রায়দিঘি রেঞ্জ অফিসে। বোটে নাইলনের জাল নিয়ে ঘটনাস্থলে রওনা দেন নলগোড়া বিটের বনকর্মীরা। ঘটনাস্থলে পৌঁছে যায় স্থানীয় মৈপীঠ উপকূল থানার পুলিশও।
অতি সতর্কতার সঙ্গে গ্রাম লাগোয়া নদী বাঁধের ওপর থাকা বাঘের পায়ের ছাপ অনুসরণ করে বাঘের অবস্থান বোঝার কাজ শুরু হয়। বিস্তর খোঁজাখুঁজির পর বনকর্মীরা নিশ্চিত হন, বাঘটি আবার ওরিয়ান নালা নদী সাঁতরেই ফিরে গিয়েছে জঙ্গলে।
পায়ের ছাপ দেখে বনকর্মীদের অনুমান এটি পূর্ণবয়স্ক একটি বাঘ। রাতের অন্ধকারে ভুল করেই হয়তো জঙ্গল থেকে এই লোকালয়ে ঢুকে পড়ে। সকালের আলো ফোটার আগেই আবার জঙ্গলে ফিরে গিয়েছে। বন কর্তারা এই আশ্বাস দেওয়ার পর এক প্রকার হাঁপ ছেড়ে বাঁচেন গ্রামবাসীরাও।