বিশ্বজিৎ দাস, সুব্রত ঠাকুর ও অশোক কীর্তনীয়া। —নিজস্ব চিত্র
জাল টিকা-কাণ্ডকে সামনে রেখে রাজ্যের শাসকদলের বিরুদ্ধে আন্দোলনের ঝাঁঝ বাড়ানোর চেষ্টা করছে বিজেপি। কিন্তু ঠিক সেই সময়েই পদ্ম শিবিরের তিন বিধায়ককে নিয়ে শুরু হল নতুন করে জল্পনা। বৃহস্পতিবার বনগাঁয় দলীয় কর্মী, সমর্থকদের নিয়ে আন্দোলনে ঝাঁপিয়েছিলেন বিজেপি শিবিরের নেতারা। কিন্তু সেই কর্মসূচি উপস্থিত থাকার ডাক পেয়েও যাননি বাগদার বিধায়ক বিশ্বজিৎ বিশ্বাস, বনগাঁ উত্তরের বিধায়ক অশোক কীর্তনিয়া এবং গাইঘাটার বিধায়ক সুব্রত ঠাকুর। বিজেপি-র এই ত্রয়ীকে নিয়ে জল্পনা নতুন নয়। বৃহস্পতিবারও সেই অবকাশ দেখা দিয়েছে।
বৃহস্পতিবার করোনার টিকা নিয়ে স্বজনপোষণ এবং দুর্নীতির অভিযোগ তুলে বনগাঁ মহকুমা শাসকের অফিসে স্মারকলিপি দেওয়ার কর্মসূচি নিয়েছিল বিজেপি। দলের বনগাঁ সাংগঠনিক জেলার তরফে শতাধিক কর্মী সমর্থক পোস্টার এবং ব্যানার নিয়ে মহকুমা শাসকের কার্যালয়ের সামনে বসে বিক্ষোভ দেখায়। পরে পাঁচ জনের একটি প্রতিনিধি দল স্মারকলিপিও জমা দেয়। কিন্তু বিশ্বজিৎ, সুব্রত এবং অশোক এই তিন বিধায়ককে এই পর্বে দেখা যায়নি। ওই তিন বিধায়কের পদক্ষেপ ঘিরে নতুন করে গুঞ্জন তৈরি হয়েছে। তবে কর্মসূচিতে যোগ দিয়েছিলেন বনগাঁ দক্ষিণ কেন্দ্রের বিধায়ক স্বপন মজুমদার।
কর্মসূচিতে যোগদানের আমন্ত্রণ যে তিনি পেয়েছিলেন তা মানছেন বিশ্বজিৎ। তাঁর সাফাই, ‘‘আমাকে কোনও এক জন ফোন করে আমন্ত্রণ জানিয়েছিলেন। তবে শরীর খারাপ বলে যাইনি। এর মধ্যে অন্য কোনও কারণ খোঁজা ঠিক হবে না। এখন করোনার প্রভাব রয়েছে। আবার লকডাউনও চলছে। এই সময় জমায়েত এড়িয়ে চলাই ভাল। আমি যদি ঠিক থাকি তা হলে সব ঠিক।’’ আর এক বিধায়ক সুব্রত দাবি করেছেন, ‘‘আমি নিজে অসুস্থ। তা ছাড়া মতুয়া মহাসংঘের কাজ নিয়ে আমি ব্যস্ত ছিলাম।’’ তবে এ নিয়ে যোগাযোগ করা যায়নি বনগাঁ উত্তরের বিধায়কের সঙ্গে।
জেলা বিজেপি-র অন্দরে কান পাতলে শোনা যাচ্ছে, রাজ্যে বিধানসভা ভোটের ফল ঘোষণার পর থেকে একাধিক দলীয় কর্মসূচিতে যোগ দেননি ওই তিন বিধায়ক। এ বারও দলীয় কর্মসূচিতে এক সঙ্গে তিন বিধায়কের অনুপস্থিতি কি কাকতালীয়? বিজেপি-র উত্তর ২৪ পরগনা জেলার অবজার্ভার প্রসেনজিৎ ভৌমিকের ব্যাখ্যা, ‘‘২ জন বিধায়ক অসুস্থ ছিলেন। বিধায়ক হিসাবে ওঁদের অনেক কাজকর্ম থাকে। আমাদের মধ্যে কয়েক জন বিধায়ক ছিলেন। তবে যে তিন জনকে দেখা যাচ্ছে না তাঁদের হাতে বিধানসভার কিছু দায়িত্ব ছিল। সেখান থেকে তাঁরা ইস্তফা দিয়েছেন। আশা করছি ফের তাঁদের একসঙ্গে দেখা যাবে।’’
বিজেপি শিবিরের এই পরিস্থিতি নিয়ে কটাক্ষ করেছে তৃণমূল। জোড়াফুল শিবিরের উত্তর ২৪ পরগনার নেতা গোপাল শেঠ বলেই দিলেন, ‘‘বিজেপি দলটা বনগাঁ থেকে উঠে যাচ্ছে। সবাই উঁকি মেরে দেখছে, দিদি কখন ডাকবে। ওখানে শুধু বিজেপি বিধায়ক নয়, সাংসদকেও দেখা যাচ্ছে না। সাংসদকে জলে ফেলে দেওয়া হয়েছে। এরা কি আদৌ বিজেপি?’’