Kultali

দূরত্ববিধি শিকেয়, শাসকদলের সভায় লোকারণ্য

যুব তৃণমূলের উদ্যোগে এলাকায় এলাকায় প্রস্তুতি সভারও আয়োজন করা হয়।

Advertisement

সমীরণ দাস

কুলতলি  শেষ আপডেট: ০৩ সেপ্টেম্বর ২০২০ ০৩:০১
Share:

বিধিনিষেধকে তোয়াক্কা না করেই সভায়। কুলতলিতে। নিজস্ব চিত্র

করোনা পরিস্থিতির মধ্যেই দূরত্ববিধি শিকেয় তুলে তৃণমূলের সভায় যোগ দিলেন কয়েক হাজার মানুষ। তৃণমূলের দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলা সভাপতি শুভাশিস চক্রবর্তী এবং যুব সভাপতি সওকত মোল্লার উপস্থিতিতেই বুধবার কুলতলির বিআর অম্বেডকর কলেজের মাঠে এই সভা হয়। এই সংবর্ধনা ও যোগদান সভা ঘিরে গত বেশ কয়েকদিন ধরেই প্রস্তুতি চলছিল কুলতলি ব্লক জুড়ে। যুব তৃণমূলের উদ্যোগে এলাকায় এলাকায় প্রস্তুতি সভারও আয়োজন করা হয়। সেই প্রস্তুতি সভাগুলিতেও দূরত্ববিধির বালাই ছিল না বলে অভিযোগ। এদিনের মূল সভায়ও করোনা বিধিকে বুড়ো আঙুল দেখিয়ে ভিড় করেন মানুষ। তৃণমূলের দাবি, পঞ্চাশ হাজার মানুষ এসেছিলেন। পুলিশ বলছে, অন্তত কুড়ি হাজার মানুষ উপস্থিত ছিলেন।

Advertisement

অন্য দল থেকে বেশ কিছু নেতা কর্মী এদিন তৃণমূলে যোগদান করেন। তৃণমূল নেতৃত্বের দাবি, সংখ্যাটা প্রায় হাজার দশেক। এদের অনেকেই মঞ্চে উঠে শুভাশিস, সওকতদের হাত থেকে তৃণমূলের পতাকা তুলে নেন। সেই মঞ্চেও কোথাও চোখে পড়েনি শারীরিক দূরত্ব। এমনকী মাস্কও ছিল না অনেকের।

কুলতলি ব্লকের করোনা পরিস্থিতি আশঙ্কাজনক। ব্লক হাসপাতাল সূত্রের খবর, ইতিমধ্যে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা পঞ্চাশ ছুঁই ছুঁই। এই পরিস্থিতিতে এত জনসমাগম নিয়ে প্রশ্ন উঠছে। শুভাশিস অবশ্য একে মানুষের আবেগ হিসেবে দেখছেন। তৃণমূলের জেলা সভাপতি বলেন, “বিজেপি, সিপিএম, কংগ্রেস থেকে দলে দলে মানুষ আজ তৃণমূলে যোগ দিলেন। মানুষের আবেগকে করোনাও ধরে রাখতে পারে না। সেই আবেগেরই বহিঃপ্রকাশ আজকের সভা।” সওকত বলেন, “আমাদের করোনাভাইরাসের সঙ্গে যেমন লড়তে হবে, তেমনই সাম্প্রদায়িক বিচ্ছিন্নতার যে ভাইরাস, তার বিরুদ্ধেও লড়াই জারি রাখতে হবে। সেই ভাইরাসের বিরুদ্ধে লড়তেই মানুষ আজ স্বতঃস্ফূর্তভাবে সভায় যোগ দিয়েছেন।”

Advertisement

এ দিনের সভায় ছিলেন না কুলতলি ব্লক তৃণমূলের সভাপতি গোপাল মাঝি। সভার প্রধান উদ্যোক্তা যুব নেতা গণেশ মণ্ডলের বিরুদ্ধ গোষ্ঠীর নেতা হিসেবেই পরিচিত গোপাল। তাঁর কথায়, “করোনা পরিস্থিতিতে মুখ্যমন্ত্রী ১০০ জনের বেশি লোকের জমায়েত করতে বারণ করেছেন। সেখানে এতবড় সভা কীভাবে হল জানি না। মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশকে সম্মান জানিয়েই এ দিনের সভায় থাকিনি।”

তৃণমূলের সভা নিয়ে ক্ষুব্ধ বিরোধীরাও। কংগ্রেস নেতা ও জয়নগর পুরসভার প্রশাসক সুজিত সরখেল বলেন, “সরকার যেখানে একশো জনের বেশি জমায়েত করা যাবে না বলে নির্দেশ দিয়েছে, সেখানে এরকম সভা হয় কীভাবে? তাহলে কী শাসক দলের জন্য নিয়ম আলাদা? আমার তো মনে হয় শাসক দল মানুষের জীবনের কথা না ভেবে ভোট রাজনীতির কথা বেশি করে ভাবছে।” সিপিএম নেতা সুজন চক্রবর্তী বলেন, “দেখা যাচ্ছে সরকার যা নিয়মবিধি করছে তা শুধুই বিরোধীদের জন্য। শাসকদলের জন্য কোনও নিয়ম নেই। তারা যা খুশি করে বেড়াচ্ছে।”

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement