‘বাঘবন্দি খেলা’। জাল দিয়ে ঘেরা হচ্ছে ধানক্ষেত। নিজস্ব চিত্র।
কুলতলির গ্রামে ফের বাঘের আতঙ্ক। তবে এ বার পায়ের ছাপ নয়। সুন্দরবনের জঙ্গল ছেড়ে লোকালয় লাগোয়া ধানজমিতে ঢুকে পড়া বাঘকে দেখতে পেয়েছেন কয়েকজন গ্রামবাসী। আর তার জেরেই আতঙ্ক ছড়িয়েছে ভুবনেশ্বরী গ্রাম পঞ্চায়েতের চারশবিঘের চর এলাকায়।
মঙ্গলবার সকালে বাঘের উপস্থিতির খবর পেয়েই বন দফতরের কর্মীরা স্থানীয় বাসিন্দাদের সহযোগিতায় জাল দিয়ে এলাকা ঘিরে ফেলেন। পাতা হয় খাঁচা। তবে সন্ধ্যা গড়িয়ে গেলেও ‘বাঘবন্দি’ সম্ভব হয়নি। ঘটনাস্থলে রয়েছেন দক্ষিণ ২৪ পরগনার বিভাগীয় বনাধিকারিক (ডিএফও) মিলন মণ্ডল, সহকারী বিভাগীয় বনাধিকারিক (এডিএফও) অনুরাগ চৌধুরী-সহ পদস্থ আধিকারিকেরা।
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, মঙ্গলবার সকালে কয়েক জন গ্রামবাসী মাঠে ধান কাটার জন্য যাচ্ছিলেন। সে সময় তাঁরা ধানক্ষেতের পাশে বাঘ দেখতে পান। নিমেষেই সেই খবর চাউর হয়ে যায়। বাসিন্দারা লাঠিসোঁটা নিয়ে দল বেঁধে বাঘ তাড়াতে ধানজমিতে নেমে পড়েন। তাড়া খেয়ে বাঘ গিয়ে ঢোকে ক্ষেতের মধ্যে। খবর পেয়ে বন দফতরের কুলতলি বিট অফিস থেকে বনকর্মীরা গ্রামে আসেন। স্থানীয়দের সহযোগিতায় ধানক্ষেত নাইলনের জাল দিয়ে ঘিরে ফেলা হয়। স্থানীয়দের নিরাপত্তার কথা মাথায় রেখে ফের তারের জাল দিয়েও ঘিরে দেওয়া হয় ধানক্ষেত।
ডিএফও বলেন, ‘‘বাঘটি জাল ঘেরা ক্ষেতের মধ্যেই রয়েছে। তাকে ধরতে ছাগল দিয়ে খাঁচা বসানো হয়েছে। রাতে যদি বাঘ ধরা না পড়ে তবে বুধবার সকালে বিকল্প ব্যবস্থার কথা ভাবা হবে।’’ তিনি জানান, পরিস্থিতির মোকাবিলায় ঘুমপাড়ানি বন্দুক-সহ বন দফতরের দু’টি টিমও মোতায়েন করা হয়েছে।’’ এডিএফও জানিয়েছেন, গ্রামবাসীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে তিন স্তরে জাল টাঙিয়ে ওই ধানজমি ঘিরে রাখা হয়েছে।
ধরা পড়লে বাঘটিকে দ্রুত জঙ্গলে ফেরানো হবে বলে বন দফতর জানিয়েছে। প্রসঙ্গত, দু’দিন আগেই ওই এলাকায় ঠাকুরান নদীর পাড়ে বাঘের পায়ের ছাপ দেখে লোকালয়ে বাঘ ঢুকে পড়ার আশঙ্কা করেছিলেন স্থানীয়রা। কিন্তু তখন বন দফতরের তল্লাশি অভিযানে এলাকায় কোনও বাঘ দেখা যায়নি।