প্রতীকী ছবি।
পঞ্চায়েত সদস্যের পরিবারের ৮ জন বাড়ি ভাঙার ক্ষতিপূরণ পেয়েছেন বলে অভিযোগ। ঘটনাটি সামনে আসতেই পঞ্চায়েতের ওই কংগ্রেস সদস্যকে বহিষ্কার করল দল।
বাদুড়িয়ার আটুরিয়া পঞ্চায়েতের দলীয় সদস্য আনারুল সর্দারকে দল থেকে বহিষ্কারের কথা জানিয়ে জেলা কংগ্রেস সভাপতি তথা বাদুড়িয়ায় কংগ্রেস বিধায়ক আব্দুর রহিম দিলু বলেন, ‘‘আমরা যখন শাসকদলের স্বজনপোষণ এবং দুর্নীতির বিরুদ্ধে দিকে দিকে গরিব মানুষের হয়ে আন্দোলন করছি, সে সময়ে আমাদের দলের একজন তাঁর পরিবারের একাধিক সদস্যের নামে অনৈতিক ভাবে টাকা তুলেছেন, এটা মেনে নেওয়া যায় না।’’ এমন কাজ বরদাস্ত করা হবে না বলে মন্তব্য করেছেন বাদুড়িয়া ব্লক টাউন কংগ্রেসের সভাপতি প্রদীপ কুমার মুখোপাধ্যায়ও।
জেলায় জেলায় তৃণমূলের পঞ্চায়েত স্তরের জনপ্রতিনিধিদের বিরুদ্ধে বহু ক্ষেত্রেই আমপানের ক্ষতিপূরণের টাকা নিয়ে দুর্নীতির অভিযোগ উঠছে। ঘেরাও-বিক্ষোভ চলছে। কোথাও কোথাও টাকা ফিরিয়ে দিচ্ছেন শাসক দলের নেতা-নেত্রীরা। তবে কারও বিরুদ্ধে দলীয় ভাবে কোনও ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে বলে তেমন ভাবে শোনা যাচ্ছে না। সে ক্ষেত্রে কংগ্রেসের ভূমিকা ব্যতিক্রমী, সে কথা শোনা যাচ্ছে মানুষের মুখে।
এ বিষয়ে জেলা তৃণমূল সভাপতি জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক বলেন, ‘‘আমাদের দল অন্য দলের মতো নয়। কেউ অন্যায় করলে বহিষ্কার করা হয়। অতীতেও এমন একাধিক উদাহরণ আছে। খোঁজখবর করে যদি অন্যয় দেখা যায়, তা হলে নিশ্চয়ই ব্যবস্থা নেওয়া হয়।’’
উত্তর ২৪ পরগনায় আমপান-দুর্নীতিতে নাম জড়িয়েছে কিছু বিজেপি পঞ্চায়েত সদস্যেরও। দলের বসিরহাট সাংগঠনিক জেলা সভাপতি তারক ঘোষ বলেন, ‘‘আমাদের দলের কারও বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ উঠলে তদন্তসাপেক্ষে দলীয় গঠনতন্ত্র মেনে উপযুক্ত ব্যবস্থা নেওয়া হয়।’’ যদিও জেলা কংগ্রেসের এক নেতার কথায়, ‘‘এত অভিযোগ চারিদিকে। কোনও দল যদি ব্যবস্থা নিত, তা হলে এই পরিস্থিতি হতই না। গরিব মানুষ এ ভাবে বঞ্চিত হতেন না।’’
অভিযুক্ত পঞ্চায়েত সদস্য আনারুল অবশ্য বলেন, ‘‘আমি কংগ্রেস ছেড়ে তৃণমূল যোগ দেব ভাবছিলাম। সে জন্যই আমার সঙ্গে এমন আচরণ করা হল।’’ কিন্তু দুর্নীতির যে অভিযোগ উঠেছে, তা কি মিথ্যা? অভিযোগ পুরোপুরি উড়িয়ে দিচ্ছেন না তিনি। আনারুলের বক্তব্য, ‘‘বাবার নামে আসা ঘরভাঙার টাকা ইতিমধ্যে ফেরত দিয়েছি। তবে ক্ষতিপূরণের তালিকায় ভাইবোনদের নাম তুলে কোনও ভূল করেনি। কারণ, ওদের বাড়ির ক্ষতি হয়েছিল ঝড়ে।’’
কংগ্রেস বহিষ্কার করলেও আনারুলের পাশে দাঁড়িয়েছেন পঞ্চায়েতের প্রধান তৃণমূলের পূর্ণিমা সরকার। তিনি বলেন, ‘‘কংগ্রেস তার দলের কাকে রাখবে, কাকে বের করে দেবে, সেটা তাদের ব্যাপার। তবে এটা বলতে পারি, ভাল ছেলে হিসাবে পরিচিত আনারুল।’’ তাঁর কথায়, ও যদি কংগ্রেস ছেড়ে তৃণমূলে যোগ দিতে চায়, তা হলে আমাদের আপত্তি নেই।’’