দীর্ঘ ১৭ দিন পর বাঘটিকে সোমবার খাঁচাবন্দি করা সম্ভব হয়। তার পর তাকে নিয়ে যাওয়া হয় ঝড়খালিতে। সেখানে পশুচিকিৎসকরা পরীক্ষা করে ফিট সার্টিফিকেট দিতেই তাকে জঙ্গলে ফেরাতে উদ্যোগ নেয় বন দফতর।
জঙ্গলে ফিরতে নদীতে ঝাঁপ খাঁচাবন্দি বাঘের নিজস্ব চিত্র
সুন্দরবনের রায়দিঘিতে খাঁচাবন্দি বাঘকে ছাড়তে উদ্যোগ নিল বন দফতর। দীর্ঘ ১৭ দিন পর সোমবার ভূবনেশ্বরী চর থেকে বাঘটিকে আটক করা সম্ভব হয়। মঙ্গলবার বেলায় সুন্দরবন ব্যাঘ্র প্রকল্পের অধীন জঙ্গলে বাঘটিকে ছাড়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। ঝড়খালি থেকে বাঘটিকে নিয়ে জলপথে রওনা দেন বনাধিকারিকরা। বন দফতরের তরফে জানানো হয়েছে, বাঘটি পুরোপুরি সুস্থ রয়েছে।
৩ ফেব্রুয়ারি বাঘটির পায়ের ছাপ দেখা গিয়েছিল রায়দিঘির নগেন্দ্রপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের দমকলের কাছে। কিন্তু তখনও বাঘটির প্রকৃত অবস্থান জানা যায়নি। পরে বাঘটি নদীর পার লাগোয়া বাদাবন ধরে হাঁটতে শুরু করে৷ এরপর কখনও সাহেবের দ্বীপ, কখনও ঠাকুরানের চরে তার অবস্থানের প্রমাণ মেলে।
বন দফতরের প্রাথমিক অনুমান, আজমলমারির ১২ নম্বর কম্পার্টমেন্টের জঙ্গল থেকে বাঘটি বেরিয়ে নদী পেরিয়ে লোকালয়ে ঢুকে পড়ে। পরে জোয়ারের সময় এলাকা ছেড়ে ঠাকুরানের চরের নতুন জঙ্গলের দিকে যাত্রা শুরু করে। পরে আবার ভূবনেশ্বরী চরে আসে বাঘ।
দীর্ঘ ১৭ দিন পর বাঘটিকে সোমবার খাঁচাবন্দি করা সম্ভব হয়। তার পর তাকে নিয়ে যাওয়া হয় ঝড়খালিতে। সেখানে পশুচিকিৎসকরা পরীক্ষা করে ফিট সার্টিফিকেট দিতেই তাকে জঙ্গলে ফেরাতে উদ্যোগ নেয় বন দফতর। বন দফতরের তরফে জানানো হয়েছে, পূর্ণবয়স্ক বাঘটি আপতত সুস্থই আছে। বিকেল তিনটে নাগাদ তাকে সুন্দরবন ব্যাঘ্র প্রকল্পের অধীনে চামটার ৫ নম্বরে কমপার্টমেন্টের জঙ্গলে ছাড়া হয়েছে।
বাঘটিকে জলপথে বোটে করে নিয়ে যাওয়া হয় চামটা জঙ্গলের কাছে। তারপর বোট থামিয়ে খুলে দেওয়া হয় খাঁচার দরজা। নিমেষের মধ্যেই বাঘ ঝাঁপিয়ে পড়ে জলে। সাঁতারে পাড়ে গিয়ে উঠে জঙ্গলে চলে যায়। বাঘ ছাড়ার সময় উপস্থিত ছিলেন বন দফতর ও ব্যাঘ্র প্রকল্পের আধিকারিকরা ৷ দক্ষিণ ২৪ পরগনার বিভাগীয় বনাধিকারিক (ডিএফও) মিলন মণ্ডল জানিয়েছেন, ‘‘বাঘটি এতদিন বাদাবনে লুকিয়ে ঘোরাঘুরি করায় তার নির্দিষ্ট অবস্থান যানা যাচ্ছিল না। তাকে খাঁচাবন্দি করার পর স্বাস্থ্য পরীক্ষা হয়েছে। সম্পূর্ণ সুস্থ রয়েছে সে। তাই মঙ্গলবার ছেড়ে দেওয়া হল।’’