bad road

Jaynagar: সঙ্কীর্ণ রাস্তা, যানজটে নাকাল জয়নগরবাসী

তবে এলাকাভিত্তিক সার্বিক উন্নয়নের নিরিখে প্রাচীন এই শহর যে কিছুটা পিছিয়েই রয়েছে, তা মানছেন পুরবাসীদের অনেকেই।

Advertisement

সমীরণ দাস 

জয়নগর শেষ আপডেট: ২২ ফেব্রুয়ারি ২০২২ ০৮:৫৬
Share:

রুদ্ধ: বেহাল, সঙ্কীর্ণ কুলপি রোড নিয়ে অভিযোগ দীর্ঘদিনের। নিজস্ব চিত্র।

বাম আমলেও জয়নগরে দীর্ঘদিন পুরবোর্ড চালিয়েছে কংগ্রেস। ২০১০ সালে তৃণমূল ক্ষমতায় আসে। গত পুরভোটে অবশ্য ফের কংগ্রেসই বোর্ড গঠন করে। এ বার ভোটে মূল দ্বৈরথ কংগ্রেস-তৃণমূলেরই। গত পাঁচ বছরে পুর পরিষেবা নিয়ে নাগরিকদের একাংশ খুশি। কিছু ক্ষেত্রে অসন্তোষও রয়েছে। তবে এলাকাভিত্তিক সার্বিক উন্নয়নের নিরিখে প্রাচীন এই শহর যে কিছুটা পিছিয়েই রয়েছে, তা মানছেন পুরবাসীদের অনেকেই।

Advertisement

সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যের নিরিখে বেশ এগিয়ে জয়নগর-মজিলপুর। এলাকাজুড়ে বহু সাহিত্য পত্রিকা প্রকাশিত হয় নিয়মিত। নাচ, গান, নাটক চর্চা হয় প্রায় প্রতি পাড়ায়। নিয়ম করে নাট্য উৎসব হয়, লিটল ম্যাগাজিন মেলা বসে। এলাকার ঐতিহাসিক গুরুত্বও রয়েছে। বহু শিক্ষাবিদ, বিপ্লবীর জন্ম হয়েছে এই এলাকায়। রয়েছে একাধিক প্রাচীন স্থাপত্য। পাশাপাশি মোয়ার জন্য এলাকার খ্যাতি বিশ্বজোড়া। শীতকালে মোয়ার টানে দূরদূরান্তের বহু মানুষ ভিড় জমান জয়নগরে। এখান থেকে দেশ-বিদেশে মোয়ার রফতানি হয়।

তবু শহর হিসেবে সে ভাবে সামনের সারিতে উঠে আসতে পারেনি এই এলাকা। কলকাতা থেকে সড়কপথে জয়নগরের দূরত্ব মাত্র ৪০ কিলোমিটার। এই দূরত্বের বহু এলাকাই ক্রমশ শহরতলি হিসেবে পরিচিত হয়ে উঠছে। তবে জয়নগর রয়ে গিয়েছে মূলত গ্রামীণ পুরএলাকা হিসেবেই।

Advertisement

এর পিছনে অনুন্নত যোগাযোগ ব্যবস্থাকে দায়ী করছেন স্থানীয় মানুষ। শহরের সঙ্গে যোগাযোগের প্রধান মাধ্যম রেলপথ। কিন্তু শিয়ালদহ দক্ষিণ শাখার এই লাইনে ট্রেন চলাচল করে ঘণ্টাখানেক অন্তর। অন্য অনেক এলাকায় ট্রেনপথের অনুপস্থিতিতে সড়ক যোগাযোগের উপরে নির্ভর করেন মানুষ। কিন্তু এই এলাকায় সুষ্ঠু সড়ক যোগাযোগও তেমন নেই। জয়নগরের উপর দিয়ে চলে গিয়েছে কুলপি রোড। এই রাস্তাই বারুইপুর হয়ে সরাসরি কলকাতার সঙ্গে যুক্ত। কিন্তু অভিযোগ, সড়ক পথে শহরমুখী চলাচলের জন্য পর্যাপ্ত যানবাহন নেই। হাতে গোনা দু’একটা বাস চলে।

রাস্তা নিয়ে মানুষের অভিযোগও দীর্ঘদিনের। জয়নগর ও সংলগ্ন এলাকায় কুলপি রোড বেশ কয়েক বছর ধরে বেহাল। খারাপ রাস্তায় দুর্ঘটনা ঘটেছে একের পর এক। রাস্তা সংস্কারের দাবিতে বহু অবরোধ-বিক্ষোভ হয়েছে। গত বছর বিধানসভা নির্বাচনের আগে প্রশাসনের তরফে রাস্তার কাজ শুরু করা হয়। কিন্তু বছর ঘুরলেও এখনও কাজ শেষ হয়নি। বেশ কয়েক জায়গায় পিচ উঠে খোয়া বেরিয়ে আছে। তা ছাড়া, জায়গায় জায়গায় কুলপি রোড বেশ সঙ্কীর্ণ। রাস্তা সম্প্রসারণের দাবিও দীর্ঘদিনের। স্টেশন মোড়-সহ পুর এলাকার একাধিক জায়গায় বড় সমস্যা যানজট। একদিকে সঙ্কীর্ণ রাস্তা, তার উপরে রাস্তা জুড়ে অটো-টোটো স্ট্যান্ড গজিয়ে ওঠার ফলেই দিন দিন যানজট বাড়ছে বলে দাবি স্থানীয় বাসিন্দাদের।

যানজটের সমস্যা সমাধানে এবং এলাকার সার্বিক যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নতিতে জয়নগর থেকে একটি বাইপাস রাস্তা তৈরির দাবি দীর্ঘদিনের। একাধিক বার রাস্তা নিয়ে আলোচনা হলেও কাজের কাজ হয়নি।

এ বার পুরভোটের আগে মানুষকে সেই রাস্তা তৈরির প্রতিশ্রুতি দিচ্ছে তৃণমূল। স্থানীয় বিধায়ক বিশ্বনাথ দাস বলেন, “পুরসভায় ক্ষমতায় এলে বাড়ি বাড়ি পানীয় জল পৌঁছে দেওয়া, নিকাশি ব্যবস্থার উন্নতির পাশপাশি আগামী দিনে জয়নগর থেকে বাইপাস রাস্তা তৈরি আমাদের অন্যতম লক্ষ্য।”

জয়নগর টাউন কংগ্রেসের সভাপতি কুমারেশ ঘোষ অবশ্য বলেন, “এলাকায় তো দীর্ঘদিন ধরেই তৃণমূলের বিধায়ক রয়েছেন। এত দিনেও তিনি বাইপাস করে উঠতে পারলেন না। এখন বলছেন পুরসভায় ক্ষমতায় এলে বাইপাস হবে।

এই হাস্যকর প্রতিশ্রুতিতে মানুষ ভুলবেন না।” তাঁর দাবি, “কুলপি রোড সংস্কার ও বাইপাসের দাবি নিয়ে আমরা বার বার সরকারের কাছে দরবার করেছি। প্রশাসনিক বৈঠকে মুখ্যমন্ত্রীকে বলা হয়েছে। তিনি সরাসরি হবে না বলে দিয়েছেন। পুরমন্ত্রীকেও জানিয়েছি।”

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement