—প্রতীকী চিত্র।
মাস দেড়েক আগে অ্যাসিড হামলা হয়েছিল তরুণীর উপরে। সেই ঘটনায় পুড়ে যায় তাঁর শরীরের বিভিন্ন অংশ। মাসখানেক চিকিৎসাধীন থেকে কিছুটা সুস্থ হয়ে সম্প্রতি বাড়ি ফিরেছেন তরুণী। বারুইপুরের হাড়দহ পঞ্চায়েতের উত্তর ট্যাংরাবেড়িয়া এলাকার ওই ঘটনায় এত দিনেও অভিযুক্তকে ধরতে পারেনি পুলিশ। অভিযোগ, ঘটনার পর থেকে আরও বড় ক্ষতি করার হুমকি দিয়ে নিয়মিত ফোন করছে অভিযুক্ত সেই যুবক। ভয়ে কার্যত ঘরবন্দি হয়ে রয়েছে তরুণীর পরিবার।
গত ২৭ অক্টোবর উত্তর ট্যাংরাবেড়িয়ার বাসিন্দা ওই তরুণীর উপরে অ্যাসিড হামলা হয় বলে জানা গিয়েছে। তাঁকে বাঁচাতে গিয়ে আক্রান্ত হন তাঁর মা-ও। দু’জনেরই শরীরের বিভিন্ন অংশ পুড়ে যায়। এই ঘটনায় উজ্জ্বল কর্মকার নামে এক যুবকের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করেছিলেন তরুণী। কিন্তু এখনও গ্রেফতার হয়নি উজ্জ্বল।
বছর দশেক আগে বিয়ে হয় ওই তরুণীর। বর্তমানে তিনি স্বামীর সঙ্গে থাকেন না। ছোট মেয়েকে নিয়ে মা-বাবার কাছে থাকেন। তরুণী জানান, বছর চারেক আগে তাঁরা নিউ টাউন লাগোয়া এলাকায় থাকতেন। অভিযুক্ত উজ্জ্বলও সেখানে থাকত। সেই সময়েই উজ্জ্বলের সঙ্গে সম্পর্ক গড়ে উঠেছিল তরুণীর। পরে তিনি সেই সম্পর্ক থেকে বেরিয়ে আসেন। এর পরেই উত্তর ট্যাংরাবেড়িয়ায় বাড়ি করে থাকতে শুরু করেন তাঁরা। খুঁজে খুঁজে উজ্জ্বলও সেখানে পৌঁছে যায়। সম্পর্ক রাখার জন্য নানা ভাবে তরুণীকে সে জোর করতে শুরু করে বলে অভিযোগ। আগেও নানা ভাবে হুমকি দিয়েছিল বলে দাবি তরুণীর পরিবারের।
তরুণীর কথায়, “উজ্জ্বল চেয়েছিল আমার মুখটা পুড়িয়ে দিতে। কিন্তু, সে দিন সেটা পারেনি। অ্যাসিড এসে লাগে আমার গায়ে। এখন রোজ ফোন করছে। বলছে, আরও বড় ক্ষতি করে দেবে। মাকেও ফোন করে হুমকি দিচ্ছে। পরিবারের সকলেই আতঙ্কিত।” তরুণীর বাবা বলেন, “সারাক্ষণ আতঙ্কে আছি। ঘর থেকে বেরোতে পারছি না। পুলিশকে বার বার জানিয়েও লাভ হচ্ছে না।”
এত দিন পরেও কেন অভিযুক্ত অধরা? পুলিশের দাবি, অভিযোগকারীরা ওই যুবকের নির্দিষ্ট ঠিকানা জানাতে পারেননি। এমনকি তরুণীর পরিবারের বিরুদ্ধে সহযোগিতা না করার অভিযোগও তোলা হয়েছে। তবে উজ্জ্বলের খোঁজে বিভিন্ন জায়গায় তল্লাশি চলছে বলেও দাবি করেছে পুলিশ।
আপাতত ওই তরুণী ও তাঁর মায়ের জন্য কাজের ব্যবস্থা করেছে অ্যাসিড আক্রান্তদের নিয়ে কাজ করা বারুইপুরের একটি সংস্থা। সংস্থার তরফে বিমান দত্ত বলেন, “দীর্ঘদিন ধরে আমরা অ্যাসিড আক্রান্তদের পাশে দাঁড়ানোর চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি। ওই তরুণী ও তাঁর মায়ের জন্যও কাজের ব্যবস্থা করা হয়েছে। ওঁরা এখনও পুরো সুস্থ হননি। সুস্থ হয়েই ওঁরা কাজে যোগ দিতে পারবেন।” তরুণীও বলেন, “সুস্থ হয়েই কাজে যোগ দিতে চাই। কিন্তু, যে আতঙ্কের মধ্যে দিন কাটছে, তাতে আদৌ কাজে যেতে পারব কি না জানি না।”