সুস্মিতা সর্দার। ফাইল ছবি।
মামার বাড়ি থেকে ফিরে বান্ধবীকে সঙ্গে নিয়ে বন্ধুর মোটরবাইকে বেরিয়েছিল কিশোরী। হেলমেটহীন অবস্থায় বেপরোয়া গতিতে যাওয়ার সময়ে নিয়ন্ত্রণ হারান চালক। মোটরবাইক ধাক্কা মারে জলভর্তি টোটোয়। বাইক থেকে রাস্তায় ছিটকে পড়েন তিন জন। রক্তাক্ত অবস্থায় তাঁদের উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে গেলে এক কিশোরীকে মৃত ঘোষণা করেন চিকিৎসকেরা। আশঙ্কাজনক অবস্থায় হাসপাতালে ভর্তি এক যুবক এবং আর এক কিশোরী। সোমবার দুপুর ১টা নাগাদ দুর্ঘটনাটি ঘটেছে হরিদেবপুর থানার জুলপিয়া রোডে সজনেবেড়িয়ার কাছে।
পুলিশ জানিয়েছে, মৃত কিশোরীর নাম সুস্মিতা সর্দার। গুরুতর আহত অন্য দু’জন সোনু রজক এবং রিয়া হালদার। বছর পনেরোর সুস্মিতা থাকত ব্রহ্মপুর এলাকার নাথপাড়ায়। মা-বাবা ছাড়াও বাড়িতে রয়েছেন এক দাদা এবং বোন। দশম শ্রেণির ছাত্রী সুস্মিতা দক্ষিণ ২৪ পরগনার মথুরাপুরে মামার বাড়িতে থেকে পড়াশোনা করত। দিন দুয়েক আগে বই কেনার জন্য মামার বাড়ি থেকে বাড়িতে এসেছিল সে। আজ, মঙ্গলবার তার মামার বাড়ি ফিরে যাওয়ার কথা ছিল। এ দিন সকালে রিয়াকে সঙ্গে নিয়ে সুস্মিতা সোনুর মোটরবাইকে বেরোয়। দুপুর একটা নাগাদ জুলপিয়া রোড ধরে চক্রবেড়িয়ার দিকে আসার সময়ে ঘটে দুর্ঘটনা। গাড়ি দু’টি আটক করেছে হরিদেবপুর থানার পুলিশ। প্রাথমিক তদন্তে পুলিশের অনুমান, তীব্র গতির ফলেই এই দুর্ঘটনা।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন, জলভর্তি টোটোটি ড্রাম নামানোর পরে আচমকা ডান দিকে ঘুরতে যায়। সেই সময়েই প্রবল গতিতে বাইকটি এসে টোটোয় ধাক্কা মারে। বাকি দু’জন রাস্তায় ছিটকে পড়লেও বাইকের মাঝে বসা সুস্মিতা পাশের শৌচালয়ের পাঁচিলের উপরে পড়ে। তার মাথায় গুরুতর আঘাত লাগে। রক্তাক্ত অবস্থায় এম আর বাঙুর হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসকেরা তাকে মৃত বলে জানান। এক প্রত্যক্ষদর্শী রত্না প্রামাণিক বলেন, ‘‘তীব্র গতিতে মোটরবাইকটি আসছিল। হঠাৎ টোটোর এক পাশে ধাক্কা মেরে তিন জনেই রাস্তায় ছিটকে পড়েন। আমরাই ধরাধরি করে হাসপাতালে নিয়ে যাই।’’
মৃত কিশোরীর পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে, এ দিন বেলা সাড়ে ১১টা নাগাদ বাড়ি থেকে বেরিয়েছিল সুস্মিতা। দুপুরের মধ্যে বাড়ি ফিরে আসবে বলেও জানিয়েছিল সে। সুস্মিতার দাদা সৌমেন সর্দার বলেন, ‘‘দুপুর দেড়টা নাগাদ আসা একটা ফোনে আমাদের তাড়াতাড়ি হাসপাতালে যেতে বলা হয়। পৌঁছে দেখি, সব শেষ।’’
এ দিন দুর্ঘটনাস্থলে গিয়ে দেখা গেল, গোটা রাস্তায় গাড়ির ভাঙা অংশ, কাচ ছড়িয়ে-ছিটিয়ে। রাস্তায় ভিড় করে রয়েছেন স্থানীয় বাসিন্দারা। হেলমেটহীন বাইক ধরতে তৎপর পুলিশ। যদিও দুর্ঘটনার পরে স্থানীয় বাসিন্দারাও এই রাস্তা দিয়ে বেপরোয়া গতিতে গাড়ি চলাচল করা নিয়ে সরব হয়েছেন। তাঁদের অভিযোগ, রাস্তা সারাইয়ের পর থেকে বেপরোয়া গতিতে গাড়ি যায়। পুলিশের কার্যত নজরদারি নেই।