লালারস সংগ্রহ করা হচ্ছে। বনগাঁ ব্লকে। ছবি: নির্মাল্য প্রামাণিক
বনগাঁ ব্লকে মঙ্গলবার পর্যন্ত করোনা আক্রান্তের সংখ্যা ১৩৩ জন। গোষ্ঠী সংক্রামণ ছড়িয়েছে কিনা তা জানতে উপসর্গ না থাকা মানুষেরও লালারস সংগ্রহ করা হচ্ছে স্বাস্থ্য দফতরের পক্ষ থেকে।
স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, রবিবার চৌবেড়িয়া ১ পঞ্চায়েত এলাকার ২০ জন উপসর্গ না থাকা মানুষের লালারস সংগ্রহ করা হয়েছে। পরীক্ষার জন্য নাইসেডে পাঠানো হয়েছে। এ দিন সকালে ওই সব বাসিন্দাদের বাড়ি থেকে অ্যাম্বুল্যান্সে করে বনগাঁ মহকুমা হাসপাতালে নিয়ে আসা হয়। সেখানে তাঁদের লালারসের নমুনা সংগ্রহ করে অ্যাম্বুল্যান্সেই পৌঁছে দেওয়া হয় বাড়িতে।
কী ভাবে উপসর্গ না থাকা মানুষদের লালারস পরীক্ষার জন্য রাজি করানো হল?
ব্লক স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে জানানো হয়েছে, বাড়ি বাড়ি ঘুরে স্বাস্থ্যকর্মীরা পঞ্চায়েতের সাহায্য নিয়ে মানুষকে বুঝিয়ে রাজি করিয়েছেন। তাঁদের বলা হয়েছে, এখন উপসর্গ ছাড়া করোনা হচ্ছে। ফলে কেউ আক্রান্ত হয়ে থাকলে এলাকায় তা ছড়িয়ে পড়তে পারে। এলাকার মানুষের স্বার্থেই লালারস দেওয়াটা জরুরি। যাঁরা স্বেচ্ছায় রাজি হয়েছেন, তাঁদেরই লালারস নেওয়া হয়েছে। বনগাঁর বিএমওএইচ মৃগাঙ্ক সাহা রায় বলেন, ‘‘উপসর্গ না থাকা মানুষের লালারস সংগ্রহ করে আমরা বুঝতে চাইছি, গোষ্ঠী সংক্রমণ ছড়িয়েছে কিনা।’’
আগে আকাইপুর, ঘাটবাওর এবং গোপালনগর ১ পঞ্চায়েত এলাকার উপসর্গ না থাকা মানুষের লালারস সংগ্রহ করে পরীক্ষার জন্য পাঠানো হয়েছিল। দু’একজনের রিপোর্ট পজ়িটিভ এসেছিল। তখন অবশ্য সংক্রমণ এতটা বাড়েনি।
স্বাস্থ্য দফতর ও প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, বনগাঁ ব্লকের ১৬টি পঞ্চায়েতের প্রতিটি এলাকায় কেউ না কেউ করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন। রবিবারই বনগাঁ ব্লকের গাঁড়াপোতা এবং পাল্লা পঞ্চায়েত এলাকার বাসিন্দা দুই যুবক করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন। তাঁদের মধ্যে একজন সিভিক ভলান্টিয়ার। অভিযোগ, তিনি লালারস দিয়েও শনিবার এলাকায় ঘুরে বেরিয়েছেন।
স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, বনগাঁ ব্লকে আগের থেকে এখন দৈনিক লালারস পরীক্ষার সংখ্যা বাড়ানো হয়ে হয়েছে। মাস দেড়েক আগে রোজ ১৫ জনের লালারস সংগ্রহ করে পরীক্ষার জন্য পাঠানো হত। এখন রোজ ৩০ জনের লালারস সংগ্রহ করা হচ্ছে। রবিবার ৫০ জনের লালারস সংগ্রহ করা হয়েছে। মৃগাঙ্ক বলেন, ‘‘মহকুমার অন্য ব্লকগুলির তুলনায় বনগাঁ ব্লকের আয়তন অনেক বড়। সে কারণেই এখানে রোজ ১৫টির বদলে ৩০ জনের লালারস সংগ্রহ করা হচ্ছে।’’ স্বাস্থ্যকর্মী ও পঞ্চায়েতের কর্মীরা রোজ বাড়ি বাড়ি গিয়ে মানুষের উপসর্গ আছে কিনা তা খতিয়ে দেখছেন। উপসর্গ থাকলে তাঁদের লালারস পরীক্ষার ব্যবস্থা করা হচ্ছে।
এ ছাড়া, ব্লক গ্রামীণ হাসপাতাল ও তিনটি প্রাথমিক স্বাস্থ্য কেন্দ্রে বহির্বিভাগে যাঁরা চিকিৎসক দেখাতে আসছেন, তাঁদের উপসর্গ থাকলে লালারস নেওয়া হচ্ছে। করোনায় আক্রান্ত হয়ে যাঁরা বাড়িতে চিকিৎসাধীন রয়েছেন, তাঁদের কাছে বিএমওএইচের ফোন নম্বর দেওয়া হচ্ছে। রোগীরা প্রয়োজনে সরাসরি বিএমওএইচকে ফোন করে সমস্যার কথা জানাতে পারছেন।