—প্রতিনিধিত্বমূলক ছবি।
পয়লা সেপ্টেম্বর থেকে খরচ বাড়ছে সুন্দরবন ভ্রমণের। বছরের মাঝপথে শুল্কবৃদ্ধিতে ক্ষুব্ধ পর্যটন ব্যবসায়ীরা। বিশেষত, এখন যেখানে ভরা বর্ষায় ইলিশ উৎসব চলছে।
সুন্দরবন ব্যাঘ্র প্রকল্প সূত্রের খবর, পর্যটকদের মাথাপিছু অনুমতি মূল্য থেকে শুরু করে লঞ্চ, ভুটভুটির অনুমতি মূল্য যেমন বাড়ানো হয়েছে, তেমনই লঞ্চ, ভুটভুটির বার্ষিক পঞ্জিকরণের (রেজিস্ট্রেশন) মূল্যও বাড়ানো হয়েছে এক ধাক্কায় অনেকটাই। এই বাড়তি ভাড়া আগামী পয়লা সেপ্টেম্বর থেকে কার্যকর করা হবে বলে জানানো হয়েছে ব্যাঘ্র প্রকল্পের তরফে।
সুন্দরবন ভ্রমণে আগে যেখানে পর্যটকপিছু অনুমতি মূল্য ছিল ১২০ টাকা, সেখানে বর্তমানে ভাড়া বাড়িয়ে করা হয়েছে ১৮০ টাকা। পর্যটকেরা যদি নেতিধোপানি পর্যটন কেন্দ্রে যান, তা হলে তাঁদের ২৪০ টাকার পরিবর্তে দিতে হবে ৩০০ টাকা। সজনেখালি ক্যাম্প, ওয়াচ টাওয়ারে উঠতে গেলে আগে দিতে হত ৩০ টাকা। পয়লা সেপ্টেম্বর থেকে দিতে হবে মাথাপিছু ৫০ টাকা করে।
বিদেশি পর্যটকদের জন্যও টাকা বাড়ছে। আগে অনুমতি মূল্য হিসাবে দিতে হত ৫০০ টাকা মাথাপিছু। এ বার থেকে দিতে হবে ১০০০ টাকা। সুন্দরবন ভ্রমণের জন্য ভুটভুটি ভাড়া যেখানে ছিল ৬০০ টাকা, তা বাড়িয়ে ১০০০ টাকা করা হয়েছে। লঞ্চের অনুমতি মূল্য ছিল ১০০০ টাকা, তা বাড়িয়ে করা হয়েছে ১৫০০ টাকা। বাতানুকূল লঞ্চ বা ভুটভুটির ক্ষেত্রে অনুমতি মূল্য ২০০০ টাকা থেকে বাড়িয়ে ৩০০০ টাকা করা হয়েছে। বাৎসরিক পঞ্জীকরণের ক্ষেত্রে লঞ্চ বা ভুটভুটির জন্য ধার্য ছিল ২০০০ টাকা। তা বাড়িয়ে ৩৫০০ টাকা করা হচ্ছে।
গাইডদের চার্জও বাড়ানো হয়েছে। আগে পর্যটকদলকে ৬০০ টাকা দিতে হত। পয়লা সেপ্টেম্বর থেকে দিতে হবে ৮০০ টাকা। বিদেশি পর্যটকদের জন্য গাইডের খরচ ১৫০০ থেকে বাড়িয়ে হয়েছে ২০০০ টাকা। সিনেমা বা অন্য কোনও প্রজেক্টের শুটিং করতে গেলে আগের তুলনায় অনেক বেশি টাকা দিতে হবে জানিয়েছে সুন্দরবন ব্যাঘ্র প্রকল্প। সম্প্রতি নোটিস জারি হয়েছে।
পর্যটন ব্যবসায়ী গোবিন্দ দাস, নিউটন সরকারেরা বলেন, ‘‘এখন ইলিশ উৎসবের মরসুম চলছে। হঠাৎ করে এক ধাক্কায় এতটা টাকা বাড়িয়ে দেওয়া হল। এতে পর্যটকদের সঙ্গে আমাদের ভুল বোঝাবুঝি বাড়বে। অনেকেই এই বাড়তি টাকা দিতে রাজি হবেন না।” আগামী ডিসেম্বর মাস পর্যন্ত বহু বুকিং হয়ে গিয়েছে। সেই বুকিং পুরনো মূল্য অনুযায়ী নেওয়া হয়েছে বলে দাবি পর্যটন ব্যবসায়ীদের। তাঁদের তরফে শম্ভুনাথ মান্না, বলরাম মণ্ডলেরা বলেন, ‘‘অন্তত তিন মাসের নোটিস দিয়ে পর্যটনকর বাড়ালে ভাল হত। সে ক্ষেত্রে যাঁরা বুকিং করছেন, তাঁদের বিষয়টি জানানো যেত।”
সুন্দরবন ব্যাঘ্র প্রকল্পের ডেপুটি ফিল্ড ডিরেক্টর জোন্স জাস্টিন বলেন, ‘‘প্রায় চার বছর পরে সুন্দরবনের পর্যটকদের জন্য ভ্রমণমূল্য বাড়ানো হয়েছে। পর্যটনস্থলের রক্ষণাবেক্ষণ, যৌথ বন পরিচালন কমিটির মাধ্যমে জঙ্গল লাগোয়া এলাকার উন্নয়ন— সবই এই টাকায় হয়। পর্যটকদের আরও ভাল পরিকাঠামো উপহার দেওয়ার জন্যই মূল্যবৃদ্ধি।”