পাশাপাশি। বাগদায় তোলা নিজস্ব চিত্র।
গত বিধানসভা ভোটে টিকিট চেয়ে পাননি। তার পর তৃণমূল ছেড়ে কংগ্রেসের টিকিটে দাঁড়িয়ে হারিয়ে দিয়েছিলেন তৃণমূলের প্রার্থী উপেন বিশ্বাসকে। বাগদার সেই দাপুটে নেতা দুলাল বর কি তৃণমূলে ফিরতে চলেছেন? রবিবার তৃণমূলের সর্বভারতীয় সহ সভাপতি মুকুল রায়ের সঙ্গে দু’টি অনুষ্ঠানে দুলালবাবুকে একসঙ্গে দেখার পরে সেই প্রশ্নই উঠতে শুরু করেছে উত্তর ২৪ পরগনার রাজনীতিতে।
রবিবার সন্ধ্যায় বাগদার হেলেঞ্চা এলাকায় একটি বেসরকারি কেব্ল অপারেটিং সংস্থার অনুষ্ঠান ছিল। সেখানেই তৃণমূলের সর্বভারতীয় সহ সভাপতি মুকুল রায়ের সঙ্গে একসঙ্গে ছিলেন স্থানীয় বিধায়ক দুলালবাবু। তার আগে এ দিন সকালে স্থানীয় গাঁড়াপোতা এলাকায় একটি কালীমন্দিরে পুজো দিতে যান মুকুলবাবু। সেখানেও তাঁকে স্বাগত জানান তিনি। দু’টি জায়গাতেই দু’জনকে একান্তে কথা বলতে দেখা গিয়েছে।
২০০৬ সালে তৃণমূলের টিকিটেই বাগদা থেকে বিধায়ক নির্বাচিত হয়েছিল দুলাল বর। তবে ২০১১ সালে তাঁকে বাদ দিয়ে তৃণমূল বাগদা কেন্দ্র থেকে উপেন বিশ্বাসকে টিকিট দেয়। সেই সময় থেকেই থেকেই দলের সঙ্গে দুলালবাবুর দূরত্ব তৈরি হয়। দল তাঁকে বহিষ্কারও করে। যদিও তার পরেও তৃণমূলের সভা ও মিছিলেই দেখা যেত জেলা রাজনীতিতে মুকুলবাবু অনুগামী হিসাবেই পরিচিত দুলাল বরকে। গত বছর দুলালবাবুর আমন্ত্রণে বাগদায় কালীপুজোর উদ্বোধন করতে এসেছিলেন মুকুলবাবু। গত বিধানসভা ভোটের আগে দুষ্কৃতীদের হাতে আক্রান্ত হয়ে কলকাতার একটি বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি হন দুলালবাবু। সেখানও তাকে দেখতে যান মুকুলবাবু। কিন্তু এ বারের বিধানসভা ভোটেও টিকিট চেয়ে না পেয়ে কংগ্রেসে যোগ দেন দুলাল। ভোটেও জিতে যান। তৃণমূল সূত্রে খবর, সম্প্রতি তিনি তৃণমূলের সঙ্গে দূরত্ব কমিয়ে আনছেন। সম্প্রতি তিনি বিধানসভায় শিক্ষামন্ত্রী তথা তৃণমূলের মহাসচিব পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের সঙ্গে দেখা করে দীর্ঘক্ষণ আলোচনা করেছেন।
দুলালবাবুকে কি দলে ফিরিয়ে নেওয়া হবে? এই প্রশ্নের সরাসরি উত্তর না দিলেও এ দিন মুকুল রায় বলেন, ‘‘আমি চাই বাংলায় যাঁরা কংগ্রেস সমর্থক অথবা জাতীয়তাবাদী মানুষ রয়েছেন, তাঁরা সকলে তৃণমূলে আসুন।’’ জল্পনা আরও বাড়িয়েছেন দলের উত্তর ২৪ পরগনা জেলার সভাপতি তথা রাজ্যের খাদ্যমন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক। তাঁর কথায়, ‘‘মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নেতৃত্ব মেনে যদি কোনও জনপ্রতিনিধি দলে আসতে চাই তবে তিনি স্বাগত।’’
তবে দুলালবাবু অবশ্য এ দিন কোনও মন্তব্য করতে চাননি। প্রশ্নের উত্তরে শুধুই হেসেছেন। পার্থবাবুর সঙ্গে দেখা করার বিষয়ে তাঁর জবাব, ‘‘এলাকার উন্নয়নের স্বার্থে আমি সকলের সঙ্গেই কথা বলি।’’