নতুন-ভাবে: বসিরহাট সুপার স্পেশালিটি হাসপাতাল। নিজস্ব চিত্র
‘স্বাস্থ্য জেলা’ হিসাবে আগেই ঘোষণা হয়েছিল বসিরহাটের নাম। পূর্ণাঙ্গ ভাবে ‘বসিরহাট জেলা’র আত্মপ্রকাশ ঘটারও সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে।
তবে জেলা হিসাবে বসিরহাটের বিন্যাসের ক্ষেত্রে সমস্যায় পড়তে হচ্ছে প্রশাসনকে। তার কারণ, উত্তর ২৪ পরগনার বসিরহাট মহকুমার হিঙ্গলগঞ্জ এবং সন্দেশখালির একাংশকে দক্ষিণ ২৪ পরগনার কিছু অংশের সঙ্গে এক করে ‘সুন্দরবন’ জেলা তৈরিরও কথা আছে। সে ক্ষেত্রে হিঙ্গলগঞ্জ এবং সন্দেশখালির মানুষকে একাধিক নদী-নালা পেরিয়ে দক্ষিণ ২৪ পরগনার ‘সুন্দরবন জেলা সদরে’ যেতে হবে। ওই অংশকে বসিরহাট জেলার সঙ্গে রাখা যায় কিনা, সে সব নিয়ে চিন্তা-ভাবনা চলছে। আপাতত বসিরহাটকে ‘পুলিশ জেলা’ করার কথা ভাবা হচ্ছে।
কিছু দিনের মধ্যেই বারাসতে প্রশাসনিক বৈঠক করতে আসছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সেখানে তিনি বসিরহাটকে পূর্ণাঙ্গ জেলা হিসাবে ঘোষণা করেন, নাকি পুলিশ জেলা হিসাবে ঘোষণা করেন, তা নিয়ে জোর আলোচনা শুরু হয়েছে শহরের মানুষের মধ্যে। বসিরহাটের দক্ষিণের বিধায়ক দীপেন্দু বিশ্বাস বলেন, ‘‘আশা করা যাচ্ছে, মে মাসের শেষ দিকে বারাসতে প্রশাসনিক বৈঠকে এসে মুখ্যমন্ত্রী বসিরহাটকে জেলা ঘোষণা করতে পারেন। নিদেনপক্ষে বসিরহাট পুলিশ জেলাও ঘোষণা করতে পারেন।’’
বছরখানেক আগে সন্দেশখালির ন্যাজাটে এসে বসিরহাটকে পৃথক জেলা করার কথা ঘোষণা করেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী। তারপর থেকে প্রশাসনিক মহলে নানা তৎপরতা লক্ষ্য করা যাচ্ছে। বসিরহাটকে স্বাস্থ্যজেলা ঘোষণার পরে তৈরি হয়েছে স্বাস্থ্য দফতর, নার্সিং স্কুল, সুপার স্পেশালিটি হাসপাতাল। সেখানে আইসিসিইউ, এসএনসিইউ চালু হয়েছে, ডায়ালিসিসের ব্যবস্থা করা হয়েছে। কংক্রিটের রাস্তার পাশাপাশি বসেছে আধুনিক আলোকস্তম্ভ। সন্দেশখালির ন্যাজাটে গড়ে তোলা হয়েছে নতুন একটি থানা। বাদুড়িয়ার কাটিয়াহাট এবং বসিরহাটের মাটিয়ায় নতুন দু’টি থানার করার উদ্যোগও হয়েছে। খাদ্যভবন, দমকল বিভাগ, পরিবহণ দফতর— এক কথায় বসিরহাটকে জেলা ঘোষণা করতে যে যে সব দফতর জরুরি, তার বড় অংশের কাজ শেষ হয়েছে। এখন শুধু সরকারি ঘোষণাটুকুই বাকি।
জেলা ও মহকুমা প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, বসিরহাট শহরের মধ্যে কোন কোন এলাকায় কোন কোন দফতর হবে তার একটি রূপরেখা জেলাশাসকের কাছে পাঠানো হয়েছে।
সেই পরিকল্পনা মতো, বসিরহাট জেলার মধ্যে থাকবে বসিরহাট, স্বরূপনগর, বাদুড়িয়া, হাড়োয়া, হাসনাবাদ, মিনাখাঁ এবং হিঙ্গলগঞ্জ ও সন্দেশখালির কিছুটা অংশ। বসিরহাটকে জেলা করে মিনাখাঁকে সাবডিভিশন করার প্রস্তাবও আছে।
প্রস্তাবে বলা হয়েছে, বসিরহাট স্টেডিয়ামের পাশে কৃষি দফতর এবং জেলা পরিষদ ভবন গড়ে উঠবে। মহকুমাশাসকের দফতর চত্বরে জেলাশাসকের দফতর এবং বর্তমান এসডিপিও-র দফতরে জেলা পুলিশ সুপারের অফিস হবে। ইতিমধ্যে বিবেকানন্দ রোডের পাশে ভূমি ও ভূমি সংস্কার দফতর তৈরি শেষ হয়েছে। ভ্যাবলায় এডিএম (এল আর)-সহ একাধিক বিভাগীয় দফতর তৈরির কথা। বদরতলার কাছে ধলতিথায় সেচ, পূর্ত এবং জনস্বাস্থ্য কারিগরি দফতর গড়ে তোলার প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে। বসিরহাটে তৈরি হয়েছে ঝাঁ চকচকে মোটেল। টাকিতে ইছামতি তৈরি হচ্ছে ভাসমান রেস্তোরাঁ।