করোনার কথা মাথায় রেখে চলছে গঙ্গাসাগর মেলার প্রস্তুতি। নিজস্ব চিত্র।
করোনা পরিস্থিতির মধ্যেই গঙ্গাসাগর মেলার প্রস্তুতি চলছে। বিশেষ নজর দেওয়া হচ্ছে স্বাস্থ্যবিধির উপরও। মেলা চত্বরে পরিচ্ছন্নতা বজায় রাখাতে কড়া বন্দোবস্ত করেছে প্রশাসন। এক গুচ্ছ পরিকল্পনা নিয়েছে দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলা প্রশাসন এবং গঙ্গাসাগর বকখালি উন্নয়ন পর্ষদ। ১০ জানুয়ারি মেলা শুরু হবে, তার আগে ৮ তারিখ সাগরে আসতে পারেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। খতিয়ে দেখবেন গোটা প্রস্তুতি।
সাগরতট ও মেলামাঠ পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন রাখার জন্য গঙ্গাসাগর বকখালি উন্নয়ন পর্ষদ ইতিমধ্যেই ২৫০ জন পুরুষ ও মহিলা স্বেচ্ছাসেবক নিয়োগ করেছে। এই দলের নাম দেওয়া হয়েছে ‘সাগর প্রহরী’। এ ছাড়া গঙ্গাসাগর গ্রামপঞ্চায়েত ও সাগর পঞ্চায়েত সমিতির পক্ষ থেকে আরও কয়েকশো সাফাইকর্মী নিয়োগ করে সাফাইয়ের কাজ চলছে।
মুখ্যমন্ত্রীর সাগরে আসার আগে মেলার প্রস্তুতি সরেজমিনে খতিয়ে দেখতে শনিবার গঙ্গাসাগর ঘুরে গেলেন জেলাশাসক পি উলগানাথন। তিনি বললেন, “কোভিড স্বাস্থ্যবিধি মেনে এবারের মেলা হবে। মেলা মাঠেই তৈরি হয়েছে কোভিড হাসপাতাল। শেষ মুহূর্তের প্রস্তুতি চলছে জোর কদমে।”
প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, মেলার দিনগুলিতে সাগরতট এবং মেলা জুড়ে রাখা হবে ২ হাজারের বেশি ভ্যাট। মেলা প্রাঙ্গণ থেকে আবর্জনা তুলে নিতে ২৮টির বেশি ই-রিক্সা ব্যবহার করা হবে। প্রত্যেকটি ই-কার্টে চালক ছাড়াও একজন সাফাই কর্মী থাকবেন। সাগরতট-সহ মেলা প্রাঙ্গণে কোথাও কোনও আবর্জনার খবর পেলেই তৎক্ষণাৎ সেখানে পৌঁছে তা সরিয়ে নেবেন এই কর্মীরা।
সাগরে ২টি অস্থায়ী কঠিন তরল বর্জ্য নিষ্কাশন ব্যবস্থাও গড়ে তোলা হয়েছে। গঙ্গাসাগর বকখালি উন্নয়ন পর্ষদের কার্যনিবাহী অফিসার শম্ভুদীপ সরকার বললেন, “গঙ্গাসাগরে প্লাস্টিক পুরোপুরি নিষিদ্ধ করা হয়েছে। বিকল্প হিসেবে এবারও মেলায় কাগজের ঠোঙা ব্যবহারের উপর জোর দেওয়া হচ্ছে। আশা করছি, সুফল মিলবে। মেলা চলাকালীন যেটুকু আবর্জনা তৈরি হবে তা সঙ্গে সঙ্গে সাগর প্রহরীর কর্মীরা সাফাই করে দেবেন।”
শনিবার গঙ্গাসাগর মেলা প্রাঙ্গণে শেষ মুহূর্তের কাজের তদারকি করতে দেখা গেল সাগর বিধানসভার বিধায়ক বঙ্কিমচন্দ্র হাজরাকে। বঙ্কিম বললেন, “মেলা প্রস্তুতির শেষ মুহূর্তের কাজ চলছে পুরোদমে। সাগর আজ শুধু তীর্থক্ষেত্রই নয় পর্যটন কেন্দ্রও বটে। মুখ্যমন্ত্রীর উন্নয়নের জেরেই সারা বছর মানুষের ভিড় থাকে সাগর দ্বীপে। গঙ্গাসাগর মেলাকে আন্তর্জাতিক স্তরে পৌঁছে দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী।”