প্রতীকী ছবি।
সীমান্ত দিয়ে গরু পাচার এখন কার্যত বন্ধ। বেআইনি ভাবে দু’দেশের মধ্যে মানুষ পারাপারও আগের থেকে কমেছে। তা বলে সীমান্ত দিয়ে অন্যান্য জিনিস পাচার আটকে নেই। ভারত-বাংলাদেশ সীমান্ত এলাকায় খোঁজ নিয়ে জানা গেল, পাচারকারীরা গরুর বিকল্প হিসাবে বেছে নিয়েছে, রূপোর গয়না, গাঁজা, ফেনসিডিল, বিদেশি পাখি, প্রসাধনী দ্রব্য, ইয়াবা ট্যাবটেল পাচারকে। এর মধ্যে রুপোর গয়না, প্রসাধনী দ্রব্য, গাঁজা, ফেনসিডিল এ দেশ থেকে বাংলাদেশে পাচার হচ্ছে। বাংলাদেশ থেকে এ দেশে ঢুকছে ইয়াবা ট্যাবলেট, বিদেশি পাখি, ইলিশ মাছ।
সম্প্রতি বনগাঁ ও বসিরহাট সীমান্তে রুপোর গয়না পাচার বেড়েছে। বিএসএফ জওয়ানেরা প্রায়ই সীমান্ত থেকে রুপো পাচারকারীদের আটক করছে। উদ্ধার হচ্ছে কেজি কেজি রুপোর গয়না। তারপরেও অবশ্য পাচারে রাশ টানা যাচ্ছে না।
শুক্রবারই বিএসএফ গাইঘাটার পুরন্দরপুর সীমান্ত থেকে এক রুপোর গয়না পাচারকারীকে আটক করেছে। বিএসএফ জানিয়েছে, আটক পাচারকারীর নাম রাজীব সরকার। বাড়ি গাইঘাটার কালাঞ্চি এলাকায়। তার কাছ থেকে বিএসএফ প্রায় ১৮ কেজি রুপোর গয়না উদ্ধার করেছে। যার বাজার দর প্রায় ৯ লক্ষ টাকা। গয়না-সহ পাচারকারীকে বিএসএফ পেট্রাপোল শুল্ক দফতরের হাতে তুলে দিয়েছে।
বিএসএফ সূত্রে জানা গিয়েছে, তেঁতুলবেড়িয়া ক্যাম্পের জওয়ানেরা শুক্রবার সীমান্তে টহল দিচ্ছিলেন। তাঁদের নজরে আসে, পুরন্দরপুর সীমান্ত এলাকায় সন্দেহজনক এক যুবক বাইক গিয়ে ঘোরাঘুরি করছে। জওয়ানেরা তাকে থামতে বললে সে বাইক ফেলে পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করে। জওয়ানেরা তাড়া করে ধরে ফেলেন। বাইকের সিটের নীচে ও তেলের ট্যাঙ্কের ভিতর থেকে ১৩টি প্যাকেট উদ্ধার হয়। তার মধ্যেই ছিল রুপোর গয়না।
ধৃতকে জেরা করে বিএসএফ জানিয়েছে, রাজীব কয়েক মাস ধরে সীমান্ত দিয়ে রুপোর গয়না পাচারের কাজ করছিল। সপ্তাহে ৪ দিন সে ১০-২০ কেজি করে রুপো পাচার করত। মাস তিনেক আগে রাজীব নিজের বাইকের তেলের ট্যাঙ্কটি মিস্ত্রি দিয়ে বিশেষ ভাবে তৈরি করে নেয়। কালাঞ্চি এলাকায় রাজীবের বাড়িতে বাংলাদেশিরা এসে রাতে গয়না নিয়ে যেত। বাংলাদেশের সাতক্ষিরার বাসিন্দা ইসারুল নামে এক ব্যক্তির কাছে গয়না পৌঁছে যায় বলে জানতে পেরেছে বিএসএফ।
দিন কয়েক আগেও বিএসএফ বিথারি সীমান্ত থেকে প্রায় ৭ কেজি রুপোর গয়না আটক করেছিল। বিএসএফ জানিয়েছে, চলতি বছরে দক্ষিণবঙ্গের বিভিন্ন সীমান্ত এলাকা থেকে প্রায় ২১৮.৫৩৪ কেজি রুপোর গয়না উদ্ধার হয়েছে। আটক করা হয়েছে পাচারকারীদের। মূলত বাইকের তেলের ট্যাঙ্কের মধ্যে করে গয়না পাচার করা হচ্ছে বলে বিএসএফ জানিয়েছে।
এ ছাড়া ট্রাক চালক, খালাসি এবং মাঠে কাজ করা চাষিদেরও রুপো পাচারের কাজে লাগায় পাচারকারীরা। স্থানীয় বাইক চালক যুবকদেরও কাজে লাগানো হয়। পুলিশ জানিয়েছে, সব ধরনের পাচার বন্ধ করতে সীমান্তে নজরদারি বাড়ানো হয়েছে।