সাগরে কিছু দোকানে কেনাকাটা শেষবেলায় জমল ভাল। ছবি: সমরেশ মণ্ডল
গত রবিবার বিক্ষিপ্ত বৃষ্টিতে ভিজেছিল দুই জেলার অনেক এলাকা। বিক্রি তেমন জমেনি বলে জানিয়েছিলেন ব্যবসায়ীরা। পুজোর আগে শেষ রবিবার, কেনাকাটার ভিড় উপচে পড়ল দুই জেলার বেশ কিছু এলাকায়। কোথাও কোথাও অবশ্য ক্রেতার সংখ্যা নিয়ে সন্তুষ্ট নন বলে জানালেন ব্যবসায়ীরা। কিছু বিক্রেতার দাবি, ক্রেতার ভিড় হলেও বিক্রির পরিমাণ তুলনায় কম।
বনগাঁ শহরের দোকানগুলিতে এদিন উপচে পড়েছে ভিড়। সকাল থেকে শুরু করে রাত পর্যন্ত কেনাকাটা চলেছে। এ বার পুজোর আগে বনগাঁ শহরে পোশাকের কয়েকটি নামী প্রতিষ্ঠান শাখা খুলছে। বড় বড় দোকানগুলিতে ক্রেতাদের দীর্ঘক্ষণ অপেক্ষা করতে হয়েছে। সন্ধের পরে ভিড় আরও বেড়েছে। দোকান মালিকেরা জানালেন, ভিড় সামাল দিতে কর্মচারীদের দুপুরের ছুটি বাতিল করা হয়। কোথাও অতিরিক্ত কর্মী নিয়োগ করা হয়েছে।
দোকানে ভিড় হলেও দোকান মালিকদের একাংশের বক্তব্য, ব্যবসার হাল খারাপ। বিক্রির পরিমাণ আশানুরূপ নয়। অনলাইনে কেনাকাটার হিড়িক বাড়ায় লাভ কমেছে।
হাসনাবাদের সর্দারহাটে রবিবার বিকেলে দেখা গেল উপচে পড়া ভিড়। পোশাকের পাশাপাশি জুতোর দোকানেও ভিড় জমান ক্রেতারা। তবে হাসনাবাদের অন্যান্য দোকানে ভিড় তেমন হয়নি। হিঙ্গলগঞ্জ, সন্দেশখালি ব্লকের বিভিন্ন পোশাকের দোকানেও ভিড় তেমন ছিল না। কার্যত হতাশ ব্যবসায়ীরা।
হিঙ্গলগঞ্জের বায়লানি বাজার কমিটির বস্ত্র ব্যবসায়ী বিনন্দ দাস বলেন, ‘‘ধান চাষ ভাল হয়নি, ফলে বহু মানুষের হাতে টাকা আসেনি। তাই কেনাকাটা তেমন হচ্ছে না। অন্যান্য বার অনেকে বাকিতে হলেও কেনাকাটা করেন। এ বার তেমন ক্রেতাও নেই।’’ তিনি আরও জানান, এলাকায় চিংড়ি চাষ করে ক্ষতির মুখে পড়েছেন অনেকে। তার প্রভাব পড়েছে কেনাকাটায়।
রবিবার বিকেল গড়াতেই কাকদ্বীপ, সাগরের বাজারগুলিতে উপচে পড়ল ক্রেতাদের ভিড়। খুশি ব্যবসায়ীরা। তাঁরা জানালেন, করোনা পরিস্থিতির জেরে গত দু’বছর ব্যবসা তেমন জমেনি। এ বছর করোনা নিয়ন্ত্রণে। ফলে পুরনো মেজাজে ফিরেছে পুজোর বাজার।
রবিবার বিকেলে কাকদ্বীপ বাজারে গিয়ে দেখা গেল, পা ফেলার জায়গা নেই। শপিং মলেও ভিড় করেছেন বহু মানুষ। গ্রামে একশো দিনের কাজ বন্ধ থাকায় এ বছর পুজোর বাজার জমবে না বলে আশঙ্কা ছিল সাগর, কাকদ্বীপ, নামখানা এলাকার ব্যবসায়ীদের। কিন্তু কেনাকাটায় তার প্রভাব পড়েনি বলে জানালেন তাঁরা। ব্যবসায়ীদের একাংশের দাবি, জামাকাপড়ের বিক্রি বেড়েছে।
ভিন্ন মত কাকদ্বীপ বাজার এলাকার ব্যবসায়ী তারক সাহার। তিনি বলেন, ‘‘এ বছর পুজোর বাজারে বিক্রি হলেও তা খুব বেশি নয়। কারণ, এই সব এলাকায় মাছের ব্যবসা বেশি হয়। এ বছর মাছ ভাল না হওয়ায় বিক্রি কিছুটা কমেছে।’’
অন্য দিকে, রবিবারেও বিশেষ জমল না ভাঙড়ে। ভাঙড়, ঘটকপুকুর-সহ বিভিন্ন পোশাকের দোকান, জুতোর দোকানে ভিড় তেমন ছিল না। ঘটকপুকুরের বস্ত্র ব্যবসায়ী সরিফুল হক বলেন, ‘‘লকডাউনের পর থেকে মানুষের হাতে টাকা নেই বললেই চলে। বিশেষ করে গ্রামাঞ্চলে ব্যবসা একেবারেই ভাল চলছে না। শহরে পরিস্থিতি তুলনায় ভাল। পুজোয় ব্যবসা মন্দাই যাচ্ছে।’’