—প্রতীকী চিত্র।
বিজেপির বনগাঁ সাংগঠনিক জেলার কার্যকারিণী বৈঠকে গরহাজির থাকলেন দলের তিন বিধায়ক, সাংসদ এবং জেলা সভাপতি-সহ প্রথম সারির কয়েক জন নেতা। বৈঠকে তাঁদের অনুপস্থিতি নিয়ে দলের অন্দরে নানা গুঞ্জন শুরু হয়েছে। সম্প্রতি ওই জেলার বিশেষ সাংগঠনিক বৈঠকে এসেছিলেন বিজেপির রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ। সেখানেও গরহাজির ছিলেন ওই বিধায়ক এবং নেতারা। পরপর দু’টি বৈঠকে তাঁরা অনুপস্থিতি থাকায় তাঁদের ঘিরে জল্পনা আরও জোরদার হয়েছে।
বিধানসভা ভোটের পরে বিজেপির জেলা কার্যালয়ে রবিবারই ছিল প্রথম জেলা কার্যকারিণী বৈঠক। ভোটে ওই সাংগঠনিক জেলার ৭টি বিধানসভা কেন্দ্রের মধ্যে ৬টিতেই জিতেছে বিজেপি। বৈঠকে দেখা যায়নি স্থানীয় সাংসদ তথা সদ্য কেন্দ্রীয় মন্ত্রী হওয়া শান্তনু ঠাকুর, বনগাঁ উত্তর, গাইঘাটা এবং বাগদার বিধায়ক যথাক্রমে অশোক কীর্তনীয়া, সুব্রত ঠাকুর এবং বিশ্বজিৎ দাসকে। ছিলেন না দলের বনগাঁ সাংগঠনিক জেলার সভাপতি মনস্পতি দেব এবং সাধারণ সম্পাদক দেবদাস মণ্ডল। এ ছাড়াও বৈঠকে আসেননি দলের রাজ্য তফসিলি মোর্চার সভাপতি দুলাল বর।
বিধানসভা ভোটের ফল প্রকাশের পর থেকে অনেকেই বিজেপি ছেড়ে তৃণমূলে গিয়েছেন। যাওয়ার ইচ্ছে প্রকাশ করেছেন আরও অনেকে। এই আবহে বিজেপির বৈঠকে এত জন নেতার অনুপস্থিতিতে দলের অন্দরের অস্বস্তি চাপা থাকছে না।
তবে দলের একটি সূত্রের মতে, শান্তনু সবে কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভায় জায়গা পেয়েছেন। তিনি দিল্লিতে রয়েছেন। আর জেলা সভাপতি মনস্পতি অসুস্থ। তিন বিধায়কের মধ্যে অশোক বলেন, ‘‘জ্বর এসেছে। শরীরটা ভাল নেই। তাই বৈঠকে উপস্থিত থাকতে পারিনি।’’ বিশ্বজিতের বক্তব্য, ‘‘শুক্রবার বিধানসভায় এসেছিলাম। তার পরে ব্যক্তিগত কাজে কলকাতায় থেকে যেতে হয়েছে। তাই বৈঠকে যেতে পারিনি।’’ দুলালও জানিয়েছেন, তিনি অসুস্থ। সুব্রত ও দেবদাসের সঙ্গে যোগাযোগ করা যায়নি। তবে বিজেপির নবদ্বীপ জ়োনের পর্যবেক্ষক বিশ্বপ্রিয় রায়চৌধুরী বলেন, ‘‘তিন দিন আগে সুব্রত ঠাকুরের সঙ্গে আমার কথা হয়েছিল। তখন তিনি জানিয়েছিলেন, তাঁর জ্বর হয়েছে।’’
বৈঠকে উপস্থিত বিজেপির নবদ্বীপ জ়োনের সহ-পর্যবেক্ষক অভিজিৎ দাস (ববি) বলেন, ‘‘করোনা আবহে অনেকে অসুস্থ। কেউ ব্যক্তিগত কাজেও যেতে পারেন। সে কারণে তাঁরা আসতে পারেননি। বিষয়টিকে জটিল ভাবে দেখার প্রয়োজন নেই।’’
অন্য দিকে, তৃণমূল থেকে বিজেপিতে আসা ‘বেসুরো’ নেতাদের প্রতি দিলীপবাবুর কটাক্ষের জবাব এ দিন দিয়েছেন বিষ্ণুপুরের সাংসদ সৌমিত্র খাঁ। দিলীপবাবু দু’দিন আগে মন্তব্য করেছিলেন, ‘‘অন্য গাছের ছাল লাগানো হয়েছিল। সেই ছাল খুলে পড়ছে!’’ বিষ্ণুপুর শহরের কলেজ রোডে এ দিন বিজেপির কার্যকারিণী বৈঠকের পর সৌমিত্র বলেন, ‘‘দুধে-জলে মিশে গেলে কি জলকে আলাদা করা যায়? গাছের ছালের উপরে ভরসা করে গাছটা বেঁচে থাকে!’’