দাউদপুর জ্যোতিষপুর জুনিয়র হাইস্কুলে ফাঁকা চত্বর। নিজস্ব চিত্র
ফের একটি স্কুল বন্ধ হয়ে গেল শিক্ষকের অভাবে।
সন্দেশখালি ২ ব্লকের দাউদপুর জ্যোতিষপুর জুনিয়র হাইস্কুলটি বন্ধ করে দিতে বাধ্য হল কর্তৃপক্ষ। এই নিয়ে শুধু এই ব্লকেই পরপর কয়েকটি স্কুলে তালা পড়ল।
২০১৪ সালে চালু হওয়া এই স্কুলটিতে পড়াশোনা শুরু হলেও স্থায়ী শিক্ষকই কখনওই নিয়োগ করা হয়নি। স্কুলটি চলত অতিথি শিক্ষক দিয়েই। অন্য স্কুলের অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষকেরাই ৫ বছরের জন্য সামান্য বেতনের বিনিময়ে এখানে ক্লাস নিতেন। ২০১৪ থেকে ২০১৬ পর্যন্ত ১৫ জন পড়ুয়ার জন্য ২ জন অতিথ শিক্ষক ছিলেন এই স্কুলে। ২০১৭ সালে নিয়োগ করা হয় আর একজন অতিথি শিক্ষক। তারপর তাঁরাই তিনজনে ২০১৯ সাল পর্যন্ত ক্লাস করিয়েছেন। ততদিনে অবশ্য পড়ুয়ার সংখ্যা বেড়ে হয় ৪১। শিক্ষকের সংখ্যা বেড়ে যাওয়ায় ছাত্র ভর্তিও বাড়ে। তবে ২০১৯ সালের শেষের দিকে ১ জন ও ২০২০ সালে আর একজন শিক্ষক অবসর নেন। সেই থেকে মাত্র একজন শিক্ষকই স্কুল চালাচ্ছিলেন, পড়ুয়ার সংখ্যাও কমে হয় ৯ জন। অবশিষ্ট শিক্ষক গত ডিসেম্বর মাসে অবসর নেওয়ায়স্কুলটি শিক্ষকশূন্য হয়ে পড়ে। ফলে বাধ্য হয়ে স্কুল বন্ধ করে দিতে হয়েছে। পড়ুয়াদের প্রায় ২ কিলোমিটার দূরে দাউদপুর এইচএল শিক্ষানিকেতনে যেতে হচ্ছে।
শুধু এই স্কুল নয়, গত বছর শিক্ষকশূন্য হয়ে যাওয়ায় অনেক স্কুলই বন্ধ হয়ে গিয়েছে। একই ব্লকের ইস্ট মণিপুর খড়গেস্বর জুনিয়র হাইস্কুল, ভাঁড়ডুবিপাড়া আদিবাসী জুনিয়র হাইস্কুল, উত্তর দ্বারিরজাঙ্গাল আদিবাসী জুনিয়র হাইস্কুল বন্ধ হয়ে গিয়েছে। ২০২৩ সালেই হয় তো বন্ধ হয়ে যেতে পারে নর্থ মণিপুর স্টেট প্ল্যান্ট জুনিয়র হাইস্কুল। এখানেও কোনওদিন স্থায়ী শিক্ষক ছিলেন না। একজন অতিথি শিক্ষক আছেন। তিনি চলতি বছরেই অবসর নেবেন।
সন্দেশখালি ২ ব্লকের সমস্ত জুনিয়র হাইস্কুলের মধ্যে হাটগাছা জুনিয়র হাইস্কুলে মাত্র ২ জন স্থায়ী শিক্ষক নিযুক্ত আছেন। ফলে বাকি জুনিয়র স্কুলগুলি ধীরে ধীরে বন্ধ হয়ে যাচ্ছে। স্কুল শিক্ষকের অভাবে স্কুলগুলি বন্ধ হয়ে গেলেও উদাসীন স্কুল শিক্ষা দফতর বলে দাবি এলাকার মানুষের।
সন্দেশখালি ২ ব্লকের স্কুল পরিদর্শক নবকুমার রায় বলেন, “আমি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে স্কুল বন্ধ হয়ে যাওয়ার বিষয়ে জানিয়েছি। সব জুনিয়র হাইস্কুলের পাশে অবস্থিত প্রাথমিক স্কুল থেকে শিক্ষকদের বন্ধ হয়ে যাওয়া জুনিয়ার হাইস্কুলে ‘ডেপুটেশন’-এ পাঠানোর বিধান আছে। তবে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ এখনও কোনও অনুমতি দেননি। ফলে কোনও পদক্ষেপ নেওয়া যাচ্ছে না। নতুন করে দ্রুত স্থায়ী শিক্ষক নিয়োগ না হলে আরও করুণ অবস্থা হবে গ্রামের স্কুলগুলির।”
এমনই আশঙ্কা শিক্ষা প্রশাসনের একাংশের। বসিরহাটের এডিআই শান্তা দাস বলেন, “বিষয়টি খোঁজ নিয়ে দেখছি কী করা যায়।”