অবহেলা: পরিচর্যার অভাবে নষ্ট হয়ে যাচ্ছে বাদাবনের চারা। নিজস্ব চিত্র
মুখ্যমন্ত্রী নির্দেশ দিয়েছিলেন, বছরে পাঁচ কোটি ম্যানগ্রোভের চারা রোপণ করা হবে সুন্দরবনে। সেই মতো উপকূলবর্তী ব্লকগুলিতে মূলত একশো দিনের প্রকল্পের মাধ্যমে ম্যানগ্রোভ নার্সারি গড়ে তোলা হয়। কিন্তু প্রকল্পের টাকা বন্ধ, তাই কাজও বন্ধ। যত্নের অভাবে অঙ্কুরেই বিনষ্ট হচ্ছে বাদাবন— এমনটাই দাবি সংশ্লিষ্ট পঞ্চায়েত প্রধানদের।
ক্যানিংয়ের নিকারিঘাটা পঞ্চায়েত এলাকায় মাতলা নদীর চরে তৈরি হওয়া বিভিন্ন নার্সারিতে এ বছর প্রায় ৫ লক্ষ ম্যানগ্রোভ চারা তৈরি করা হয়েছে। গত কয়েক বছরে এখান থেকেই গাছ নিয়ে সুন্দরবনের বিভিন্ন নদীর চরে ম্যানগ্রোভ বসানো হয়। কিন্তু এ বছর সেই কাজ প্রায় বন্ধ। একশো দিনের প্রকল্পের টাকার জোগান বন্ধ থাকায় নার্সারির পরিচর্যাও বন্ধ।
গোসাবা ব্লকেরও বেশ কিছু পঞ্চায়েত এলাকার নার্সারির একই অবস্থা। মাসের পর মাস টাকা না পেয়ে শ্রমিকেরা অন্যত্র কাজে চলে গিয়েছেন বলে দাবি পঞ্চায়েতের।
কিছু কিছু জায়গায় কিছু মানুষ এখনও ম্যানগ্রোভের পরিচর্যা অবশ্য করছেন। কিন্তু তা প্রয়োজনের তুলনায় অনেকটাই কম বলে অভিযোগ।
ক্যানিংয়ের নিকারিঘাটা নার্সারির শ্রমিক কমলা মণ্ডল, কুন্ত হালদার, তপন মণ্ডলরা জানান, দীর্ঘদিন ধরে টাকা পাচ্ছেন না। অনেকেই নার্সারির কাজ ছেড়ে দিয়েছেন। এই পরিস্থিতিতে বহু গাছ নষ্ট হয়ে যাচ্ছে।
ক্যানিং ১ বিডিও শুভঙ্কর দাস বলেন, “প্রকল্পের টাকা বন্ধ থাকায় ম্যানগ্রোভ নার্সারি পরিচর্যা-সহ ব্লকের অনেক কাজেই সমস্যা দেখা দিয়েছে। আমরা নার্সারির পরিচর্যার জন্য ইতিমধ্যেই একটি নতুন স্কিম তৈরি করে জেলায় পাঠিয়েছি। সেটি অনুমোদন পেলে সমস্যার অনেকটা সমাধান হবে। এ ছাড়াও বন দফতরকে কিছু গাছ দেওয়া হয়েছে।”
ক্যানিং ১ পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি অনিমা মিস্ত্রি বলেন, “কেন্দ্রীয় সরকার টাকা না দেওয়ায় এই প্রকল্পের কাজ বন্ধ। ফলে নার্সারির কাজও থমকে। অগত্যা গাছের ক্ষতি হচ্ছে। পঞ্চায়েতগুলিকে বলা হয়েছে গাছের পরিচর্যার জন্য।”
রাজ্য বিজেপির সাধারণ সম্পাদক সুনীপ দাস অবশ্য কটাক্ষ করেছেন প্রশাসনকেই। তিনি বলেন, “একশো দিনের প্রকল্পে নানা রকম চুরি ধরা পড়ায় কেন্দ্র এই প্রকল্পে টাকা আটকে রেখেছে। তা ছাড়া, খেলা-মেলায় টাকা খরচ না করে রাজ্য সরকারের উচিত প্রকল্পগুলি চালানোর দায়িত্ব পালন করা।”