সওকাত মোল্লা। — ফাইল চিত্র।
ভাঙড় ২ ব্লকের বামনঘাটার বিস্তীর্ণ এলাকা জলাভূমি। শাসক দলের ছত্রছায়ায় থেকে জমি-মাফিয়ারা জলাভূমি ভরাট করে চলেছে বলে নানা সময়ে অভিযোগ তুলেছেন বিরোধীরা। এ নিয়ে শাসক দলের মধ্যেও দ্বন্দ্ব রয়েছে। এ বার দলেরই একাংশকে সেই অভিযোগে বিঁধলেন ক্যানিং পূর্বের বিধায়ক তথা ভাঙড়ের তৃণমূল পর্যবেক্ষক সওকাত মোল্লা।
সোমবার বামনঘাটা অঞ্চলে দলীয় কর্মী সম্মেলনে সওকাত বলেন, ‘‘বামনঘাটার খাসজমিতে বহু গরিব পরিবার বাস করে। সেখানে ঘরবাড়ি করতে গেলে তাঁদের কাছে থেকে টাকা আদায় করছে আমাদের দল ও প্রশাসনের কিছু লোকজন। তাদের বেঁধে রেখে আমাদের খবর দেবেন।’’
সওকাত জানান, দুর্নীতি বরদাস্ত করা হবে না। দলের কিছু নেতা-কর্মী যে দুর্নীতি করছেন, তা কার্যত মেনে নিয়ে তিনি বলেন, ‘‘আমি বামনঘাটার মায়েদের বলব, ঝাঁটা ধুয়ে রাখুন। গরিব মানুষের জন্য সরকার টাকা দিচ্ছে। কিছু নেতার জন্য আমাদের মুখ পুড়ছে। অপমানিত হচ্ছি। দলে দু’একটা চোর আছে। ঘুষখোর, তোলাবাজ, দুর্নীতিবাজদের দল থেকে তাড়ানো হবে।’’ পুলিশের একাংশও ‘নোংরামি’ করতে বলে তাঁর অভিযোগ।
ওই সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন আরাবুল ইসলাম, হাকিমুল ইসলাম, বিশ্বজিৎ মণ্ডল, আব্দুর রহিম, ওদুত মোল্লা, খয়রুল ইসলাম-সহ একাধিক ব্লক ও অঞ্চলের তৃণমূল নেতারা।
সওকাতের স্বীকারোক্তিতে ফের বিষয়টি নিয়ে মুখ খুলেছেন বিরোধীরা। ভাঙড়ের আইএসএফ বিধায়ক নওশাদ সিদ্দিকী বলেন, ‘‘বামনঘাটায় জলাভূমি ভরাট-সহ নানা অনৈতিক কাজে যুক্ত শাসক দল। জলাভূমি ভরাট বন্ধ করতে আমি বিভাগীয় মন্ত্রীকে চিঠিও দিয়েছি। এখন ওদের দলের নেতাই সেই কথা বলছেন।’’ সিপিএমের রাজ্য কমিটির সদস্য তুষার ঘোষ বলেন, ‘‘তোলাবাজি, সিন্ডিকেটরাজ নিয়ে তৃণমূলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব রয়েছে। মানুষ ওদের অত্যাচারে অতিষ্ঠ। ওদের নেতাই এ বার সে কথা স্বীকার করলেন।’’
সওকাত অবশ্য এ দিন আইএসএফকেও বিঁধেছেন। তাঁর অভিযোগ, তৃণমূলের বিরুদ্ধে নানা কটূ কথা বলে চলেছে আইএসএফ কর্মীরা। তাঁর হুঁশিয়ারি, ‘‘যারা আমাদের উপর অত্যাচার করবে, ভোটের পর আমরা তাদের ইঞ্চিতে ইঞ্চিতে বুঝে নেব।’’ আইএসএফের পাল্টা দাবি, তৃণমূলই তাদের বিরুদ্ধে মিথ্যাচার চালাচ্ছে।