শনিবার সন্দেশখালিতে মিনাক্ষী মুখোপাধ্যায়। — নিজস্ব চিত্র।
এসপি অফিসে স্মারকলিপি জমা দিতে গিয়ে সংশ্লিষ্ট আধিকারিককে মিনাক্ষী বলেন, ‘‘আমাদের যে পুলিশ আধিকারিক আটকেছেন, চার দিনের মধ্যে আমি জানতে চাই, তাঁর বিরুদ্ধে আপনারা কী ব্যবস্থা নিলেন। আমাকে জানাতে হবে, কোন নির্দেশের ভিত্তিতে তিনি আমাদের আটকেছেন। তৃণমূলের নেতারা ওখানে কী করে ঘুরে বেড়াচ্ছে, জানাতে হবে।’’
বসিরহাটের এসপি অফিসে স্মারকলিপি জমা দিয়ে বেরোলেন মিনাক্ষীরা। সন্দেশখালি সংক্রান্ত তাঁদের অভিযোগ তাঁরা এসপিকে জানিয়েছেন।
মিনাক্ষীদের সামনে ব্যারিকেড করে দাঁড়িয়েছিল পুলিশ। মিনাক্ষীরা স্মারকলিপি জমা দেবেন বলে জানান। পুলিশ তাঁদের চার জনকে ভিতরে ঢোকার অনুমতি দিয়েছে।
বসিরহাট এসপি অফিসে স্মারকলিপি জমা দিতে যাচ্ছেন মিনাক্ষীরা। তাঁদের সামনে ব্য়ারিকেড করে দাঁড়িয়ে আছে পুলিশ।
এসপি অফিসের দিকে যেতে যেতে মিনাক্ষী বলেন, ‘‘এখানে পুলিশ ইচ্ছাকৃত ভাবে সন্ত্রাস বজায় রাখতে চাইছে। এসপি অফিস থেকে কেউ ফোনও ধরছে না। এখানকার মানুষের জমি কেড়ে নেওয়া হয়েছে, টাকা লুট করা হয়েছে, গায়ে হাত দেওয়া হয়েছে। পুলিশকে এর জবাব দিতে হবে। মানুষের নিরাপত্তার জন্য ওদের কাজ করতেই হবে।’’
মিনাক্ষীকে আটকানো হয়নি বলে দাবি করলেন পার্থ ভৌমিক। তিনি জানান, ‘‘প্রথমত, আমি এখানে সেচমন্ত্রী হিসাবে এসেছি। রাজনৈতিক নেতা হিসাবে নয়। আর দ্বিতীয়ত, আমি মিনাক্ষীকে দেখেছি, উনি টোটো করে ঘুরছেন। কেউ আটকায়নি। সঙ্গে ৫০ জন মহিলাও আছেন।’’
সন্দেশখালিতে যেতে না পেরে বসিরহাট এসপি অফিসের উদ্দেশে রওনা দিলেন মিনাক্ষীরা। এসপির কাছে অভিযোগ জানাবেন তাঁরা।
সন্দেশখালির ঘাটে বসে মিনাক্ষী বলেন, ‘‘পুলিশ বেআইনি কাজ করেছে। আমরা ওঁর বিরুদ্ধে অভিযোগ করব। মহিলা কমিশনেও অভিযোগ করব। আমরা ১৪৪ ধারা ভাঙিনি। তিন জন করে বসতে পারে। আমরা তাই করছি। আমাদের বেআইনি ভাবে গ্রেফতার করা যাবে না।’’
মাঝেরপাড়া এলাকায় পুলিশের সামনে বিক্ষোভে ফেটে পড়েন গ্রামবাসীদের একাংশ। চিৎকার করে তাঁরা অভিযোগ জানান। শাহজাহানের ফাঁসির দাবি করেন। পরিস্থিতি উত্তপ্ত হয়ে উঠছে।
সুজিত, পার্থদের কাছে গ্রামবাসীরা নালিশ, অভিযোগ জানাচ্ছেন। এক মহিলা মন্ত্রীদের সামনে কেঁদে ফেলেন। সেতু, পানীয় জল সংক্রান্ত নানা সমস্যার কথা মন্ত্রীদের জানান গ্রামবাসীরা।
পুলিশি বাধার মুখে সন্দেশখালি ঘাটে বসে পড়লেন মিনাক্ষীরা। তাঁদের গ্রামে ঘুরতে দেওয়া হচ্ছে না বলে অভিযোগ। প্রতিবাদ জানিয়ে ঘাটে বসে পড়েন তিনি। পুলিশ এলাকা ঘিরে রেখেছে।
সন্দেশখালিতে ঢালাই রাস্তা ভেঙে দিয়ে মাঠের জমিতে নোনা জল ঢোকানোর অভিযোগ উঠেছে। সেই স্থান পরিদর্শন করেন সুজিত, পার্থেরা। ২০ দিনের মধ্যে রাস্তা সারাইয়ের আশ্বাস দিয়েছেন তাঁরা।
সন্দেশখালির স্থানীয় নেতা সুজয় মণ্ডলের বাড়িতে গিয়েছেন সুজিত, পার্থেরা। সেখান থেকে বেরিয়ে পার্থ বলেন, ‘‘সুজয় আমাদের কর্মী। ও এখন আমাদের সঙ্গে এলাকার মানুষের কাছে যাবে।’’
শনিবার নতুন করে উত্তপ্ত সন্দেশখালি। মাঝেরপাড়া এলাকায় ঝাঁটা, লাথি হাতে রাস্তায় নেমেছেন মহিলারা। শাহজাহানের শাস্তি চেয়েছেন তাঁরা।
পার্থ ভৌমিক, সুজিত বসুরা সন্দেশখালিতে গিয়েছেন। সে প্রসঙ্গে প্রশ্ন করলে মিনাক্ষী বলেন, ‘‘পার্থ, সুজিত শাহজাহানের দলের লোক। ওঁরা মানুষকে ভয় দেখাতে এসেছেন। যখন জমি কেড়ে নেওয়া হচ্ছিল, তখন ওঁরা কোথায় ছিলেন? ‘দুয়ারে সরকার’ কোথায় ছিল?’’
মিনাক্ষী বলেন, ‘‘১৪৪ ধারা জারি থাকলে আমি একা যেতে পারি। মানুষের সঙ্গে কথা বলতে তো বাধা নেই। আমরা যেতে চাইছি। যেতে দিচ্ছে না। আমাদের কাছে লিখিত অভিযোগ আছে। পুলিশের সঙ্গে কথা বলতে চাই। মানুষ জমি ফেরত চায়। পুলিশের শাস্তি চায়। পুলিশ মানুষের কথা শোনে না। আমরা সে বিষয়ে কথা বলতে এসেছি।’’
পঞ্চায়েত সদস্য এবং প্রধানদের বিরুদ্ধে মামলাও করতে চান বলে জানান মিনাক্ষী। তিনি বলেন, ‘‘জমিতে নোনা জল ঢুকিয়ে দেওয়া হয়েছে। পুলিশ তা বার করে দিক।’’
নিরাপদ সর্দারের বাড়ি থেকে বেরিয়ে সন্দেশখালির বিভিন্ন এলাকায় ঘুরছিলেন মিনাক্ষীরা। পুলিশ তাঁদের বাধা দেয়। পুলিশের সঙ্গে মিনাক্ষী বচসায় জড়িয়ে পড়েন। পুলিশকে উদ্দেশ করে তাঁকে বলতে শোনা যায়, ‘‘আপনি বেআইনি কাজ করছেন। আমার নামে কোনও অপরাধের মামলা আছে? কেন আমাকে যেতে দেবেন না?’’ মিনাক্ষী একা গ্রামে যেতে চেয়েছিলেন। তাঁকে যেতে দেওয়া হয়নি বলে অভিযোগ।
সন্দেশখালিতে মিনাক্ষীকে আটকে দিল পুলিশ। এলাকা ছেড়ে তাকে চলে যেতে বলা হচ্ছে। পুলিশের সঙ্গে তর্কাতর্কিতে জড়িয়ে পড়েছেন বাম যুবনেত্রী।
তৃণমূল বিধায়ক সুকুমার মাহাতো বলেন, ‘‘আমি তিন দিন ধরে সন্দেশখালির পাড়ায় পাড়ায় গিয়েছি। কোথাও ‘ড্যামেজ’ নেই। সবাই বলেছে, ‘আমরা তৃণমূলের লোক। আমরা তৃণমূল করি।’ কোনও ব্যক্তি অপরাধ করলে সেই ব্যক্তি তার সাজা পাবে। শেখ শাহজাহানের বিরুদ্ধে ক্ষোভের কথা কেউ বলেননি। শেখ শাহজাহান কোনও অপরাধ করেছেন, এটাও কেউ বলেননি। কেউ কেউ অন্যের মুখে শুনে কিছু কথা বলেছেন। কিন্তু দুর্নীতির কোনও কথা আসেনি।’’
সন্দেশখালির বিধায়ক সুকুমার মাহাতো বলেন, ‘‘দলের প্রতি মানুষের কোনও ক্ষোভ নেই। কিছু প্রবাসী নেতার উপরে ক্ষোভ রয়েছে। উত্তম, শিবুদের কাছে গ্রামবাসীরা টাকা পায়। আমাদের দলের নেতারা চাঁদা তুলে সেই টাকা ফেরত দেব। অন্য দলগুলি সন্দেশখালিতে অশান্তি করছে।’’