বিজেপি নেতা বিকাশ সিংহ। —নিজস্ব চিত্র।
তৃণমূল নেতা উত্তম সর্দারকে গ্রেফতারের পর থেকেই থমথমে সন্দেশখালি। উত্তম ছাড়াও শুক্রবার রাতে বিকাশ সিংহ নামে এক বিজেপি নেতাকে গ্রেফতার করে পুলিশ। অভিযোগ, গত তিন-চার দিন ধরে সন্দেশখালিতে যে অশান্তির ঘটনা ঘটছে, তাতে প্ররোচনা দিয়েছিলেন বিকাশ।
বিকাশ ছিলেন বসিরহাট বিজেপি সাংগঠনিক জেলার প্রাক্তন সভাপতি। বর্তমানে তিনি বসিরহাট লোকসভা কেন্দ্রে বিজেপির পর্যবেক্ষক। স্থানীয় সূত্রে খবর, সন্দেশখালি থানার সামনেই তাঁর বাড়ি। শনিবার সন্ধ্যায় বিকাশকে বাড়ি থেকে তুলে থানায় আনা হয়। তার পর চলে টানা জিজ্ঞাসাবাদ। রাতের দিকে পুলিশ তাঁকে গ্রেফতার করে।
গত বুধবার রাত থেকেই অশান্ত সন্দেশখালি। তৃণমূল নেতা শেখ শাহজাহান, উত্তম সর্দার এবং শিবু হাজরার বিরুদ্ধে এলাকায় ‘অত্যাচার’-এর অভিযোগ তুলেছেন গ্রামবাসীরা। বিক্ষুব্ধ গ্রামবাসীদের দাবি, অবিলম্বে তাঁদের গ্রেফতার করতে হবে। সেই দাবি তুলে রাস্তায় নেমেছেন তাঁরা, ঘেরাও করেছেন থানা। বিক্ষোভে সামনে থেকে নেতৃত্ব দিয়েছেন মহিলারা। বাঁশ, কাটারি, দা, হাতা, খুন্তি, লাঠি নিয়ে বিক্ষোভ দেখিয়েছেন সন্দেশখালিতে। আগুন ধরিয়ে দিয়েছেন একের পর এক পোলট্রি ফার্ম, বাগানবাড়িতে। অভিযোগ, গ্রামবাসীদের জমি জোর করে দখল করে ওই ফার্ম তৈরি করেছেন শিবুরা।
পুলিশ কড়া হাতে এই অশান্তি মোকাবিলা শুরু করেছে। সন্দেশখালির বিস্তীর্ণ এলাকায় ১৪৪ ধারা জারি করা হয়েছে। বন্ধ করা হয়েছে ইন্টারনেট পরিষেবাও। আসরে নেমেছে বিজেপি, সিপিএম, কংগ্রেসের মতো রাজ্যের বিরোধী শিবির। শাসক দল তৃণমূলের বিরুদ্ধে সুর চড়িয়েছে তারা। বিরোধীদের বিরুদ্ধে পাল্টা ‘উস্কানি’র অভিযোগ তুলেছে তৃণমূলও। এফআইআর-পাল্টা এফআইআর দায়ের হয়েছে থানায়। অশান্তি সৃষ্টির অভিযোগে অনেককে গ্রেফতারও করেছে পুলিশ। এ বার সেই তালিকায় যোগ হল বিকাশের নাম।
এলাকার মানুষদের প্ররোচনা দিয়ে দফায় দফায় বিক্ষোভ আন্দোলন করানোর অভিযোগ উঠেছিল সন্দেশখালির এই বিজেপি নেতার বিরুদ্ধে। সেই অভিযোগের ভিত্তিতে তদন্তে নেমে শনিবার রাতে তাঁকে গ্রেফতার করল পুলিশ। রবিবার সকাল থেকে নতুন করে অশান্তি হয়নি সন্দেশখালিতে। তবে এলাকায় এখনও আতঙ্কের পরিবেশ রয়েছে। রুটমার্চ করছে পুলিশ।