—ফাইল চিত্র।
ঘূর্ণিঝড় আমপানে পূর্ব মেদিনীপুরে ঘরবাড়ি, বিদ্যুতের লাইন, পানের বরজ ও ফুল-সহ আনাজ চাষের বিপুল ক্ষতি হয়েছে। ক্ষতিগ্রস্ত বাড়িঘর মেরামতির জন্য সরকারি সাহায্য দেওয়ার পাশাপাশি পানচাষের জন্য কৃষকদের ক্ষতিপূরণ দিতে উদ্যোগী রাজ্য সরকার।
পূর্ব মেদিনীপুরের পান চাষিদের আর্থিক ক্ষতিপূরণে ৫ কোটি টাকা বরাদ্দ করা হয়েছে। শুক্রবার রাজ্যের উদ্যান পালন ও খাদ্য প্রক্রিয়াকরণ দফতর এই অর্থ বরাদ্দ করেছে। এছাড়াও দক্ষিণ ২৪ পরগনার জন্য ১০ কোটি টাকা ও পশ্চিম মেদিনীপুরের জন্য ৫ কোটি টাকা বরাদ্দ করা হয়েছে পান চাষিদের ক্ষতিপূরণ দেওয়ার জন্য। জেলা উদ্যানপালন ও কৃষি দফতর সূত্রে খবর, আমপানের জেরে পূর্ব মেদিনীপুর জেলার পান চাষের প্রায় ৮০ শতাংশ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। জেলার তমলুক, নন্দকুমার, শহিদ মাতঙ্গিনী, মহিষাদল, সুতাহাটা, হলদিয়া, নন্দীগ্রাম, খেজুরি, ভগবানপুর ও রামনগর এলাকায় পান বরজের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। ক্ষতিগ্রস্ত পান চাষিদের প্রত্যেককে এককালীন ৫ হাজার টাকা দেওয়া হবে। এর জন্য ক্ষতিগ্রস্ত পান চাষিদের তালিকা তৈরি হচ্ছে।
পূর্ব মেদিনীপুর জেলা উদ্যানপালন ও খাদ্য প্রক্রিয়াকরণ আধিকারিক মানস ভট্টাচার্য বলেন, ‘‘আমপানে ক্ষতিগ্রস্ত পানচাষিদের আর্থিক সাহায্য দিতে জেলায় ১০ কোটি টাকা বরাদ্দ করেছে রাজ্য সরকার। পান বরজের ক্ষতির জন্য চাষিদের এককালীন ৫ হাজার টাকা দেওয়া হবে।’’
আমপানে ক্ষতিগ্রস্তদের ঘরবাড়ি পুনর্নির্মাণ করতেও আর্থিক দেওয়ার জন্য রাজ্য সরকার তৎপর হয়েছে। ক্ষতিগ্রস্তদের একাংশকে শুক্রবারই আনুষ্ঠানিকভাবে চেক দেওয়া হয়। এদিন নবান্ন থেকে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ভিডিও কনফারেন্স-এর মাধ্যমে আমপানে ক্ষতিগ্রস্ত বিভিন্ন জেলার প্রশাসন ও স্থানীয় সাংসদ, বিধায়কদের নিয়ে বৈঠক করেন। বৈঠকের সময়েই বিভিন্ন জেলায় ক্ষতিগ্রস্তদের কয়েক জনের হাতে আনুষ্ঠানিকভাবে আর্থিক ক্ষতিপূরণের চেক দেওয়া হয়।
পূর্ব মেদিনীপুর জেলা প্রশাসনিক অফিসে জেলাশাসক পার্থ ঘোষ ক্ষতিগ্রস্তদের কয়েকজনের হাতে চেক তুলে দেন। বৃহস্পতিবার জেলাশাসক জেলার প্রত্যেক বিডিওকে কমপক্ষে ১ হাজার ক্ষতিগ্রস্ত বাড়ির মালিকের নাম- ঠিকানা ও ব্যাঙ্ক আকাউন্ট নম্বর সহ তালিকা জমা দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছিলেন। একইভাবে ক্ষতিগ্রস্ত পানচাষিদের তালিকাও চাওয়া হয়েছিল। জেলাপ্রশাসনের নির্দেশের পরেই ব্লক প্রশাসনের তৎপরতা শুরু হয়। বিভিন্ন ব্লক থেকে ক্ষতিগ্রস্ত বাড়ির মালিক ও পানচাষিদের তালিকা জমা দেওয়া হয়। শুক্রবার সেই তালিকা ধরেই কয়েকজন ক্ষতিগ্রস্তকে চেক দেওয়া হয়। জেলাপ্রশাসন সূত্রে খবর, ক্ষতিগ্রস্ত বাড়ির বাসিন্দাদের ২০ হাজার টাকা ও পান চাষিদের ৫ হাজার টাকা অ্যাকাউন্টে জমা দেওয়া হয়েছে।