চিকিৎসকদের উপস্থিতির প্রমাণের নোটিস ঘিরে বিতর্ক। গ্রাফিক: শৌভিক দেবনাথ।
প্রতিদিন হাসপাতালে কাজে যোগ দেওয়ার ঠিক আগে মেডিক্যাল অফিসারদের লোকেশন জানাতে হবে হোয়াটসঅ্যাপে। মঙ্গলবার বারুইপুর মহকুমা হাসপাতালের নামে জারি হওয়া এমনই এক নির্দেশিকা নিয়ে শুরু হয়েছে বিতর্ক। চিকিৎসকদের অভিযোগ, এই নোটিস তাঁদের সম্মানহানি করছে। একে ‘স্বৈরতান্ত্রিক পদক্ষেপ’ও বলছেন তাঁরা।
গত ১৪ মার্চ দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলার বারুইপুর মহকুমা হাসপাতালের সুপারিনটেন্ডেন্টের সই করা একটি নোটিসে সব মেডিক্যাল অফিসারের উদ্দেশে একটি নির্দেশ জারি হয়েছে। সেখানে লেখা হয়েছে, স্বাস্থ্য ভবনের ডিডিএইচএস-এর নির্দেশ মেনে কাজে যোগ দেওয়ার আগে প্রত্যেক মেডিক্যাল অফিসারকে নিজেদের লোকেশন হোয়াটসঅ্যাপে জানাতে হবে। সেটা কাকে ‘শেয়ার’ করতে হবে, সেই নামও উল্লেখ করে দেওয়া হয়েছে। জানানো হয়েছে, ওপিডি, অন কল সার্ভিস, ওটি সার্ভিস, এমারজেন্সি, এইচডিইউ, এসএনসিউ-এর মতো পরিষেবায় যুক্ত চিকিৎসকদের এই নিয়ম মেনে চলতে হবে। যা নিয়ে শুরু হয়েছে বিতর্ক।
চিকিৎসকদের একাংশের দাবি, এ হেন নোটিসে তাঁদের সম্মানহানি ঘটেছে। দক্ষিণ ২৪ পরগনার চিফ মেডিক্যাল অফিসার অব হেলথ্ (সিএমওএইচ) মুক্তিসাধন মাইতি বলেন, ‘‘একটি প্রতিলিপি আমি পেয়েছি। সম্পূর্ণ বিষয় খোঁজ নিচ্ছি। সুপারের সঙ্গে এ নিয়ে কথা বলব।’’ অন্য দিকে, যে নাম ও ফোন নম্বর উল্লেখ করে চিকিৎসকদের হোয়াটসঅ্যাপ লোকেশন শেয়ার করতে বলা হয়েছে, তাঁদের একজনের সঙ্গে ফোনে যোগাযোগ করা হলে, জানান, এমন কোনও নির্দেশিকার বিষয়ে তিনি জানেন না। এ নিয়ে কিছু বলতেও পারবেন না। আর এক জন জানান, তিনি এমন নোটিস সম্পর্কে ওয়াকিবহাল। তবে তাঁকে কোনও চিকিৎসক লোকেশন পাঠাননি।
চিকিৎসক সংগঠন সার্ভিস ডক্টর ফোরামের সাধারণ সম্পাদক সজল বিশ্বাসের কথায়, ‘‘এই নোটিস মানবাধিকার লঙ্ঘন করছে। অবিলম্বে এমন নোটিস প্রত্যাহার করা উচিত। চিকিৎসক কেন, কোনও পেশাতেই এমন নির্দেশিকা দেওয়া যায় না।’’ তিনি এই নির্দেশিকাকে ‘স্বৈরতান্ত্রিক’ বলে মন্তব্য করেছেন।
এই নির্দেশিকার প্রেক্ষিতে সুপারিনটেন্ডেন্টের সঙ্গে অবশ্য যোগাযোগ করা যায়নি।