মেয়েদের নিরাপত্তার বার্তা দিয়ে রাস্তা জুড়ে অলঙ্করণ

সম্প্রতি মানবাধিকার দিবস উপলক্ষে জয়নগরের বামনগাছি পঞ্চায়েতের বিভিন্ন জায়গায় রাস্তা জুড়ে নারী নিরাপত্তার বার্তা লেখা হয়।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১৩ ডিসেম্বর ২০১৯ ০০:১৯
Share:

পথে-ছবি: মেয়েদের নিরাপত্তার জন্য রাস্তায় আঁকলেন জয়নগরের মানুষ। ছবি: সুমন সাহা

মেয়েদের জন্য নিরাপদ হোক রাস্তা। রাস্তা জুড়ে লিখে, এঁকে এই বার্তা ছড়িয়ে দিল একদল ছেলেমেয়ে।

Advertisement

সম্প্রতি মানবাধিকার দিবস উপলক্ষে জয়নগরের বামনগাছি পঞ্চায়েতের বিভিন্ন জায়গায় রাস্তা জুড়ে নারী নিরাপত্তার বার্তা লেখা হয়।

রাস্তাঘাটে নানা ভাবে হেনস্থার মুখে পড়তে হচ্ছে মেয়েদের। দেশ জুড়ে এ রকম একাধিক ঘটনা সামনে আসেছে। এরই প্রতিবাদে রাস্তা জুড়েই সচেতনতার বার্তা লেখার পরিকল্পনা নেয় একটি স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন।

Advertisement

সংগঠনের তরফে স্মিতা সেন বলেন, ‘‘রাস্তায় বেরোলে মেয়েদের প্রতি কটূক্তি, হেনস্থার ঘটনা আকছার ঘটছে। কিন্তু এমনটা তো হওয়ার কথা নয়। একটি ছেলের জন্য রাস্তা যতটা নিরাপদ, একটি মেয়ের জন্যও ঠিক ততটাই হওয়া উচিত।’’ এই বার্তা ছড়িয়ে দিতেই তাঁরা রাস্তায় অলঙ্করণের সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। চোখের সামনে এই লেখাগুলি যত দিন থাকবে, কোনও ছেলে কোনও মেয়েকে কটূক্তি করতে সাহস পাবে না বলে মনে করেন তিনি।

সংস্থার ডাকে বহু ছেলেমেয়ে এ দিন কর্মসূচিতে সামিল হন। পঞ্চায়েত এলাকার ১২টি জায়গা বাছাই করে রং-তুলি দিয়ে ছোট ছোট ছড়ার মাধ্যমে লিখে দেওয়া হয় সমানাধিকারের বার্তা। বার্তাগুলিকে আকর্যণীয় করে তুলতে আঁকা হয় নানা ধরণের আলপনাও। স্কুল বা ক্লাবের সামনে, রাস্তার মোড়গুলিকেই মূলত বেছে নেওয়া হয় অলংকরণের জন্য। পথচলতি বহু মানুষ রাস্তা জুড়ে এই অলঙ্করণ দেখে থমকে দাঁড়ান। মেয়েদের নিরাপত্তার জন্য এই উদ্যোগকে সাধুবাদও জানান তাঁরা। সংস্থা সূত্রের খবর, গ্রামের শিশু সুরক্ষা কমিটিগুলিও এগিয়ে এসে এই কর্মসূচিতে তাঁদের সাহায্য করে।

এক স্কুল ছাত্রীর কথায়, ‘‘পাড়ার মোড়ে ছেলেদের জটলা থেকে মেয়েদের উদ্দেশ্যে নানা সময়ে নানা কটূক্তি ভেসে আসে। রাস্তায় হাঁটা চলা করাটাই সমস্যা হয়ে যায়। চোখের সামনে বড় বড় করে লেখা দেখে আশা করি অনেকে শুধরে যাবে।’’ আর এক ছাত্রীর কথায়, ‘‘সন্ধ্যার পরে মেয়েদের রাস্তায় বেরোতে সমস্যা হবে, এটা যেন নিয়ম হয়ে গিয়েছে। এক শ্রেণির ছেলেদের জন্যই এই জিনিসটা হয়েছে। রাস্তা কারওর একার নয়, আজকের পরে আশা করি এই বার্তাটা স্পষ্ট হয়ে যাবে।’’

লেখা, আঁকার পাশাপাশি মেয়েদের নিরপত্তার বার্তা দিয়ে হ্যান্ডবিল বিলি করা হয় এলাকায়। স্মিতা বলেন, ‘‘আমরা মনে করি আইন করে মেয়েদের হেনস্থার ঘটনা বন্ধ করা যাবে না। তার জন্য সকলের সচেতনতা দরকার। এই সচেতনতাটাই আমরা গড়ে তোলার চেষ্টা করছি। গ্রামের মানুষের প্রতিক্রিয়া দেখে মনে হচ্ছে, সেই পথে কিছুটা সফল হতে পেরেছি।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement